সংবাদদাতা, কাটোয়া : ভাগীরথীর পাড় ভেঙে হু হু করে জল ঢুকছে পূর্বস্থলীর ঝাউডাঙায়। ভাসছে নদীলাগোয়া বিস্তীর্ণ কৃষিজমি। আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে নদীর ধারের বাসিন্দাদের। গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সংশ্লিষ্ট পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বিডিও সৌমিক বাগচি ও স্থানীয় পঞ্চায়েত। সৌমিকবাবু বলেন, ‘সেচ দফতরকে খবর দেওয়া হয়েছে। গ্রামের মানুষগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’ জল সরলে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করা হবে।
আরও পড়ুন-রাজ্যের হাত থেকে রাস্তা ফেরাতে মোদিস্তুতি করে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠালেন উপাচার্য
ঝাউডাঙা গ্রামটি পূর্ব বর্ধমান জেলার হলেও ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় স্থলভাগটি নদিয়ার নাকাশিপাড়া এলাকা সংলগ্ন। প্রশাসনিক কাজ, চিকিৎসা, পড়াশোনা, ব্যবসা-সহ সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজের জন্য নদী পেরোতে হয় ঝাউডাঙার বাসিন্দাদের। আর নদীলাগোয়া হওয়ায় জল বাড়লে সব রকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গ্রামের তিনকড়ি সরকার, বাপী হুই বলছিলেন, ‘দিন তিনেকের বৃষ্টিতেই প্রায় ৫০০ মিটার পাড় ভেঙেছে। তাই ভয় লাগছে।’ শ্যামল সাঁতরা নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘কয়েক বছর আগে পাথর, বোল্ডার দিয়ে পাড় বাঁধানো হয়েছিল। এখন সেই জায়গাগুলোও ভেঙেছে।’ ঝাউডাঙা গ্রামে এক সময় ১২০০ লোকের বাস ছিল। ভাঙনে ভিটেমাটি, কৃষিজমি হারিয়ে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রীর সামনেই হাতাহাতি বিজেপির দুই গোষ্ঠীর
পঞ্চায়েত প্রধান মধুমিতা চন্দ্র দে জানান, ‘পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। গ্রামের মানুষদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সজাগ।’ পাশাপাশি মঙ্গলকোটের লাখুড়িয়া পঞ্চায়েতের কুরগ্রাম, সাগিরা-সহ অজয়-লাগোয়া এলাকাতেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কুরগ্রামের কাছে অজয় বাঁক নেওয়ায় জল বাড়লেই স্রোতের ধাক্কায় পাড় ভেঙে নদীর পেটে চলে যায়। এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এলাকার বালিমাফিয়ারা কোনও অনুমতির তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে বালি তোলায় পাড় আলগা হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টিতে দুর্বল পাড় ভেঙে পড়ছে। মঙ্গলকোটের বিডিও জগদীশ বারুই জানান, ‘ওখানে বালির বস্তা দিয়ে মেরামতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’