সুমন তালুকদার, বারাসত: এই পুজো না দেখলে বসিরহাটের (Durga Puja- Basirhat) মানুষের পুজোর আনন্দটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত শহরের ঐতিহ্যের প্রতীক ভেবিয়ার দীনধামের শতাব্দীপ্রাচীন দুর্গাপুজো। অবিভক্ত ২৪ পরগনার ভেবিয়াতে ১১৬ বছর আগে দে বাড়ির আদিপুরুষ স্বর্গীয় দীননাথ দে প্রজাদের মঙ্গলকামনায় এই পুজোর আয়োজন করেন। জমিদার বংশের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, বর্ধমানের ঘলঘলিয়া থেকে ব্রিটিশ শাসনকালে দে বাড়ির আদিপুরুষ বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ ব্লকের ভেবিয়াতে এসে বিশাল জমিদারির পত্তন করেন। তারপর জমিদারি, নিজের বংশ এবং প্রজাদের মঙ্গলকামনায় দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন তিনি। তৈরি করা হয় ঠাকুরদালান। আজও মায়ের অধিষ্ঠান সেখানেই। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে কলকাতার বাবুঘাট থেকে দুর্গাপুজো (Durga Puja- Basirhat) এবং সারাবছরের নিত্যাপুজোর জন্য কোটালের গঙ্গাজল তোলা হয়। সেই পুণ্যজল ব্রিটিশ আমলের বড় বড় তেলের ড্রামে ভরে নিয়ে দে বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গ্রামের বহু মানুষ লরি করে গ্রামে নিয়ে আসেন। নিজেদের প্রয়োজনীয় গঙ্গাজল রেখে দিয়ে বাকি জল গ্রামের মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন। মহালয়ার পুণ্যতিথিতে চণ্ডীঘট বসে। মহালয়া থেকে নবমী পর্যন্ত সকাল-বিকাল সেখানেই চণ্ডীপাঠ হয়। ষষ্ঠীর পুণ্যতিথিতে বোধনতলায় মায়ের বোধন হয়। অষ্টমীতে দে বাড়ির পক্ষ থেকে প্রতিমা দর্শনার্থীদের লুচি, তরকারি ও মিষ্টির প্যাকেট দেওয়া হয়। মহানবমীতে বৈদিক আচার মেনে পুজোর পাশাপাশি আখ, চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয়। মহাদশমীর দিন পঞ্জিকার ক্ষণ মেনে বাড়ির লাগোয়া দেবোত্তর পুকুরেই মায়ের নিরঞ্জন হয়।
আরও পড়ুন-ভারতের প্রথম সরকারি অ্যাপ ক্যাব পরিষেবা ‘যাত্রী সাথী’র সূচনা