আগরতলা : ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে রাজনৈতিক জমি হারানোর আতঙ্কে দিশেহারা বিজেপি। গণতান্ত্রিক আন্দোলন বানচাল করতে বিজেপির গুন্ডারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্য জুড়ে। পরপর আক্রমণ হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের উপর। রবিবার রাতেও নজিরবিহীনভাবে হামলা চালায় বিজেপি। আক্রান্ত একাধিক নেতা-কর্মী। অনেকেরই আঘাত গুরুতর। জনবিচ্ছিন্ন বিজেপি যেকোনওভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে রুখতে অগণতান্ত্রিক পথে চোরাগোপ্তা আক্রমণকেই হাতিয়ার করেছে। এরপরও মাটি কামড়ে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন, প্রতিবাদের কর্মসূচি নিচ্ছেন তাঁরা। দলের শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশে পুরভোটের আগে ত্রিপুরায় বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের ঝাঁজ তীব্রতর করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
২৫ নভেম্বর ত্রিপুরায় পুরভোট। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরার স্টিয়ারিং কমিটির নেতাদের৷ সেই অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে। সম্প্রতি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ওপর ব্যাপক হামলা চালানো হচ্ছে ত্রিপুরায়। তাঁদের পরিবারের লোকজনকেও রেয়াত করা হয়নি। দেখা যাচ্ছে, পায়ের তলার জমি হারিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যে কোনও কর্মসূচিতেই আক্রমণ চালাচ্ছে বিজেপির গুন্ডারা। দোকান-বাড়ি-গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। রবিবার তেলিয়ামুড়ায় দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে বিজেপির গুন্ডারা প্রসেনজিৎ চৌধুরি ও অর্ণব সেন নামে দলের দুই যুব কর্মীকে ব্যাপক মারধর করে। তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন দলের স্টিারিং কমিটির যুব নেতা বাপটু চক্রবর্তী। এই ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই ত্রিপুরার বর্ষীয়ান নেতা আশিসলাল সিংকেও আটকায় পুলিশ। দলীয় কর্মসূচিতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। আশিসবাবু বলেন, কোনও সভ্য দেশে এই জিনিস হয় না।
আরও পড়ুন : বিজেপি করেন বলেই তদন্তে ছাড় প্রকাশ্যে বললেন দলের সাংসদ
পুলিশ-প্রশাসন দলদাসে পরিণত হয়েছে। পুলিশকে বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। নীরব দর্শক পুলিশ। অপরাধীদের ধরা হচ্ছে না। বিজেপির নির্দেশে তারা রাজ্য জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক কর্মী— সবাই আক্রান্ত। তাই এবার বিজেপির দলদাস পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে নামতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবার রাতে বিজেপির মারে গুরুতর আহত যুব তৃণমূল নেতা মামন খানকে দেখতে কলকাতায় এসেছিলেন ত্রিপুরায় দলের স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও ত্রিপুরায় আন্দোলনের গতিপথ নিয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে।
সোমবার দলের সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন জানান, এসএসকেএম-এ ভর্তি মামন খানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত রয়েছে। বিজেপির গুন্ডাদের ভয়ঙ্কর মারে শরীরের একাধিক জায়গায় গুরুতর চোট লেগেছে। কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, রেনাল ফেলিওর হচ্ছে। সোমবার রাত থেকেই মামনের ডায়ালিসিস চালু হয়েছে। সোমবার ত্রিপুরা গিয়েছেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তার আগে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মামন খানকে দেখে আসেন তিনি।