প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পের বড়সড় সাফল্য। দেশের সর্বাধিক দুর্ঘটনাপ্রবণ রাজ্যের তালিকা থেকে বাদ গেল পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রের সড়ক যোগাযোগ ও পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে কোন রাজ্যে কত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাতে কতজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, কতজন আহত হচ্ছেন তার তথ্য সামনে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন-কালোবাজারি প্রতিরোধে অভিযানে নামছে টাস্কফোর্স, পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে তৎপর রাজ্য
রোড এক্সিডেন্টস ইন ইন্ডিয়া ২০২২ নামের ২০০ পাতার সেই বইতে তুলে ধরা হয়েছে ৪ বছরের সময়সীমায় দেশের বুকে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার প্রবণতা। সেই বইতেই ৯০ নম্বর পৃষ্ঠায় তুলে ধরা হয়েছে দেশের প্রথম ১০টি সর্বাধিক সড়ক দুর্ঘটনাময় রাজ্যের তালিকা। দেখা যাচ্ছে দেশের ওই ১০টি রাজ্যের তালিকাতেই নেই বাংলা। যা এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচির সাফল্যকে সূচিত করছে।
আরও পড়ুন-ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি চন্দননগরে
কেন্দ্রের দেওয়া তালিকা বলছে, দেশের সর্বাধিক সড়ক দুর্ঘটনাময় প্রথম ১০টি রাজ্য হল তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, কেরল, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং গুজরাত। সেই তালিকা বলছে, ২০১৮ সালে গোটা দেশে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার ৪০৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তারমধ্যে ওই ১০টি রাজ্যে ঘটেছিল ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬৬টি দুর্ঘটনা। অর্থাৎ সারা দেশের মধ্যে ৭৭.৮ শতাংশ দুর্ঘটনাই ঘটেছিল ওই ১০টি রাজ্যে। ২০১৯ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছিল ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯৫৯টি। এর মধ্যে ওই ১০টি রাজ্যেই ঘটেছিল ৩ লক্ষ ৫৪ হাজার ৭০৮টি দুর্ঘটনা। সারা দেশের শতাংশের বিচারে যা ৭৭.৬ শতাংশ। কোভিডের কারণে ২০২০ সালের একটা বড় অংশ জুড়েই গোটা দেশে লকডাউন ছিল। তার জেরে গোটা দেশে দুর্ঘটনার হার কিছুটা হলেও কম ছিল। কেন্দ্রের তথ্য বলছে, তার মধ্যেও ওই ১০টি রাজ্যের সর্বমোট সড়ক দুর্ঘটনা ছিল দেশের বুকে সেই বছরে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার ৭৭.৩ শতাংশ। ২০২১ সালে এই শতাংশ অপরিবর্তিত থাকলেও ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৭৭.৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন-ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমছে
সেখানে পশ্চিমবঙ্গের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত টানা ৪ বছর সারা দেশের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার নিরিখে এরাজ্যের স্থান ছিল ১২ নম্বরে। ২০২২ সালে তা ১১ নম্বরে উঠেছে। এই ৫ বছরের মধ্যে বাংলায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২০১৮ সালে ১২ হাজার ৭০৫টি, ২০১৯ সালে ১২ হাজার ৬৫৮টি, ২০২০ সালে ১০ হাজার ৮৬৩টি, ২০২১ সালে ১১ হাজার ৯৩৭টি এবং ২০২২ সালে ১৩ হাজার ৬৮৬টি। আর এই তথ্যই বলে দিচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই প্রচার প্রকল্পের সাফল্য ঠিক কতখানি। বাংলায় এখন রাস্তার গুণমান বাড়ছে। তা সে রাজ্য সড়ক হোক কি জাতীয় সড়ক। সেই সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন রাস্তাও। বাড়ছে যান চলাচলের গতিও। স্বাভাবিক ভাবেই ধীর গতিতে হলেও রাজ্যে ২০২২ সালে দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের ৪ বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু তারপরেও তা দেশের প্রথম ১০টি সড়ক দুর্ঘটনাময় রাজ্যের তালিকায় উঠে আসেনি।