হাতির (Elephants) তাণ্ডবে ঘুম ভাঙল কোচবিহারের। জলদাপাড়া থেকে পাতলাখাওয়া বনাঞ্চল থেকে রাতেই কোচবিহারের দিকে চলে এসেছিল হাতিগুলি। প্রায় ৬টি হাতি ভোর রাত থেকে তাণ্ডব চালায় কোচবিহারের বিভিন্ন গ্রামে। বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিগুলিকে প্রথমে দেখা গিয়েছিল কোচবিহারের ১ ব্লকের হাড়িভাঙা গ্রামে। এরপরে সাধারণ গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে হাতিগুলি চলে যায় দিনহাটার মাতালহাটের দিকে। কোচবিহারের এডিএফও বিজন কুমার নাথ জানান, ৬টি হাতি এলাকায় দেখা গিয়েছে। এরমধ্যে একটি ছিল বাচ্চা হাতি। দলের বাকিরা ছিল পূর্ণবয়স্ক। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন ২।
জানা গিয়েছে, এর আগেও পাঁচটি হাতি (Elephants) চলে এসেছিল কোচবিহারের লোকালয়ে৷ এই দলটি সেই পুরোনো দল বলে মনে করছে বনদফতর। এদিন মাতালহাট গ্রামের লক্ষ্মী বাজারে হাতির হানায় হরেন বর্মন নামে এক গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। বনদফতর জানিয়েছে তিনি বাড়ির সামনে জমিতে কাজ করছিলেন তখন হাতি হামলা চালায়৷ আহত গ্রামবাসীকে উদ্ধার করে কোচবিহারের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ আহত ব্যাক্তি জানান তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাতি হামলা করে৷ ধস্তাধস্তি ছিঁড়ে যায় তাঁর জামা। কোনোমতে প্রাণে বাঁচেন তিনি। পরে গ্রামবাসীরা তাকে উদ্ধার করে মাথায় জল ঢালেন। পরে বনদফতরের গাড়িতে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। গ্রামবাসী রসিদুল রহমান জানান, গ্রামের বেগুন ক্ষেত, ধানের জমি ক্ষতি হয় হাতির হানায়। বড় পুরনো গাছ ভেঙে ফেলে হাতিগুলি।
আরও পড়ুন- ফের দিল্লি আইআইটি-তে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু
কোচবিহার বনদফতর জানিয়েছে, জলদাপাড়া থেকে ৬টি হাতির দল পাতলাখাওয়া বনাঞ্চল হয়ে কোচবিহারে রাতে ঢুকে পড়েছিল। এরপর থেকেই বনকর্মীরা নজর রাখছিলেন হাতির দলের গতিবিধির উপরে। ভোর রাতে কুয়াশার মধ্যে হাতিগুলির উপরে নজর রাখতে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয় বনকর্মীদের। কোচবিহারের হাড়িভাঙা গ্রামে ধানজমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ এরপরে হাতির দল চলে যায় মাতালহাট গ্রামের দিকে৷ সেখানেও হাতির তাণ্ডবে আহত হয় ১। এরপরে হাতি দেখতে গ্রামবাসীরা ভিড় করেন। দুয়েকবার হাতির তাড়া খেয়ে দল বেঁধে ছুটেও পালান গ্রামবাসীরা। এরপরে বনাঞ্চল এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নেয় হাতিগুলি। কাছেই একটি ডোবাতেও ভরদুপুরে দেখা গিয়েছে হাতির দলটিক। বনদফতর জানায় যত সম্ভব যাতে কম ক্ষতি হয় গ্রামে সেদিকে বাড়তি নজর রাখা হয়েছে। নিরাপদে হাতিগুলিকে পাতলাখাওয়াতে ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে বনদফতর। জানা গিয়েছে হাতিগুলি উদ্ধারে কোচবিহারে এসেছে জলদাপাড়া থেকে হাতি উদ্ধারকারী দল। বনদফতরের ধারনা, লোকালয়ে ধান জমিতে ফসলের টানে হাতিগুলি গভীর বনাঞ্চল থেকে চলে আসতে পারে লোকালয়ে।