প্রতিবেদন : মোদি সরকারের নয়া অপকীর্তি প্রকাশ্যে। আদানি গোষ্ঠী তো বটেই, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আগেই একাধিকবার ধনী, কর্পোরেট গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ সামনে এসেছে। মোদি ঘনিষ্ঠ একাধিক ঋণখেলাপি শিল্পপতি দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
আরও পড়ুন-কাতারে ৮ নৌকর্মীর মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের কেন্দ্রের
লোকদেখানো তদন্তের নামে কালক্ষেপ করা ছাড়া পলাতক শিল্পপতিদের কেশাগ্র স্পর্শ করা যায়নি। আর এবার আরটিআই-এর মাধ্যমে জানা গেল, বিগত ৫ বছরে মোদি জমানায় বিভিন্ন বেসরকারি উপদেষ্টা (অ্যাডভাইজারি) সংস্থার খাতে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করেছে কেন্দ্র। কার্যত আমজনতার টাকা নয়ছয়। এই বিপুল অপচয় দুর্নীতির নামান্তর বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন-কোভিডের নয়াপ্রজাতি জেএন-১ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে
সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের তরফে দাবি করা হয়েছে, ৫ টি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা পেট্রোলিয়াম, বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে নীতি আয়োগ এমনকী আধার কার্ড তৈরির মতো প্রকল্পগুলির কাজে এই টাকা খরচ হয়েছে। রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত মোট ৩০৮টি কাজের বরাত পেয়েছে সংস্থাগুলি। যার অর্থমূল্য কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা। পাশাপাশি যে সমস্ত মন্ত্রক ও দফতরের তরফে উপদেষ্টা সংস্থাগুলিকে নিয়োগ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক, প্রশাসনিক সংস্কার দফতর, শিল্পের বিকাশ, অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য দফতর, কয়লা মন্ত্রক, ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, অসামরিক বিমান মন্ত্রক, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক, পরিবেশ মন্ত্রক, বন ও জলবায়ু মন্ত্রক এবং পর্যটন মন্ত্রক।
তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে বরাত পেয়ে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে প্রাইস ওয়াটারহাউস কুপার্স বা পিডব্লুসি। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা মোট ৯২টি কাজের বরাত পেয়েছে। যার অর্থমূল্য ১৫৬ কোটি টাকা। এরপরেই রয়েছে ডেলয়েট। মোট ৫৯টি কাজের বরাত পেয়েছে ডেলয়েট। যার অর্থমূল্য ১৩০.১৩ কোটি টাকা। অন্যদিকে, ৬৮.৪৬ কোটি টাকার বিনিময়ে ৬৫টি কাজের বরাত পেয়েছে কেপিএমজি। ম্যাকিনসে ৩টি বরাত পেয়েছে, যার বাজারমূল্য ৫০.০৯ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজে উপদেষ্টা সংস্থাগুলিকে বরাত দিয়েছে নীতি আয়োগও। ২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১৭.৪৩ কোটি টাকার বিনিময়ে মোট ৭টি কাজ করিয়েছে নীতি আয়োগ।
আরও পড়ুন-কাতারে ৮ নৌকর্মীর মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের কেন্দ্রের
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের অভিযোগ, সরকার আউটসোর্স করছে। সংবাদমাধ্যমকে দিয়ে লাগাতার প্রচার করা হয়েছে। পাশাপাশি ইডি, সিবিআই ও আয়কর দফতরকে দিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করা হচ্ছে। মোদি সরকারের এমন পদক্ষেপ ‘ঘৃণ্য’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।
বিরোধীদের অভিযোগ, আমজনতার ওপর আর্থিক বোঝা চাপচ্ছে, লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের হার বিপুলভাবে কমছে। অথচ বেসরকারি গোষ্ঠীগুলিকে দেদার মুনাফা লোটার বন্দোবস্ত করে দিচ্ছে এই সরকার। আমজনতার পকেট কেটে ভরছে পছন্দের শিল্পসংস্থার তহবিল।