প্রতিবেদন : সারা রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার (Physical Education) অভিন্ন পাঠ্যক্রম ও বই তৈরির জন্য উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার। বর্তমানে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এই দুটি বিষয় পড়ানো হলেও কোনও নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম বা পাঠ্যপুস্তক নেই।
সেই কারণে বিভিন্ন স্কুলে শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার (Physical Education) পাঠ্যক্রমের মধ্যে কোনও সাযুজ্য থাকছে না বলে অভিযোগ আসছে। সে-কারণেই রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষা দফতর অভিন্ন পাঠ্যক্রম তৈরিতে উদ্যোগী হচ্ছে বলে ওই দফতরের পরামর্শদাতা কমিটির সভাপতি উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অভিন্ন পাঠ্যক্রম ও বই না থাকায় যে সমস্যা তৈরি হচ্ছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনার দফতরকে চিঠি দিয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার অভিন্ন পাঠ্যক্রম ও বই তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৯০-এর দশক পর্যন্ত মাধ্যমিকে কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষা বিষয়টি বাধ্যতামূলক ছিল। ৯০ দশকের শেষলগ্নে মাধ্যমিকস্তরে এই দু’টি বিষয়কে ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে পড়ানো শুরু হয় এবং কোনও পরীক্ষার্থী এই বিষয় নিয়ে পরীক্ষা দিলে মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৩৪ নম্বর বাদ দিয়ে বাকি নম্বর যুক্ত করা হত।
২০১১ সালের পর পাঠ্যক্রমের আধুনিকীকরণ করা হয় এবং তার পরেই কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষা এই দু’টি বিষয় মাধ্যমিক স্তরে পড়ানো বন্ধ করে দেয় স্কুল শিক্ষা দফতর। তবে প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে এটি বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে এখনও পর্যন্ত পড়ানো হয়ে থাকে। পাঠ্যক্রমের আধুনিকরণের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক নামকরণের পরিবর্তন আনা হয়, শারীরশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা হয় ‘স্বাস্থ্য’। এবং নামকরণ করা হয় স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা। একইভাবে ‘আর্ট এডুকেশন’-এর উপর জোর দেওয়া হয়। যার নামকরণ করা হয় ‘আর্ট এবং ওয়ার্ক এডুকেশন’। নামকরণ করা হলেও এই সংক্রান্ত কোনও বই বা পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়নি স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে।
বাজার চলতি বিভিন্ন বই থেকে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের ক্লাস করানো হত স্কুলগুলির তরফ থেকে। সুনির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম না থাকায় পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। স্কুলশিক্ষা দফতর স্কুলগুলির মধ্যে সামঞ্জস্য রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন- নিখোঁজ, মৃত্যু ঘিরে আবার অশান্ত ইম্ফল