প্রতিবেদন : ফের রাজ্যে দৈনিক করোনার সংক্রমণ হাজারের কাছাকাছি। স্বাস্থ্য দফতরের বুধবারের বুলেটিন বলছে, রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭৬ জন। এই সময় করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। দৈনিক সংক্রমণে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। একদিনে শহরে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭২ জন। মৃত্যু হয়েছে চারজনের। তবে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতা তুঙ্গে। তবে চিন্তা বাড়াচ্ছে এক শ্রেণির মানুষের বেপরোয়া মনোভাব।
আরও পড়ুন-কলকাতায় আবার বাংলাদেশের ইলিশ
কোভিডবিধি মানতে বেশ অনীহা। এটাই এখন প্রশাসনের চিন্তার প্রধান কারণ। ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের মুখে দাঁড়িয়ে কড়া পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। শুরু হয়েছে রাস্তাঘাটে ধরপাকড়। একাধিক জায়গায় ফিরেছে কনটেনমেন্ট ও মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন। বৃহস্পতিবার থেকে তিনদিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার এলাকার সব বাজার, দোকান। অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী বেচাকেনায় শুধু ছাড় মিলছে। পূর্ব ঘোষণা মতোই সকাল থেকে বন্ধ রাজপুর, গড়িয়া, বালিয়া-সহ একাধিক বাজার। বাজার এলাকাজুড়ে চলছে স্যানিটাইজেশন। এ ছাড়া সবাইকে সতর্ক করে প্রচার চলছে। মাস্কহীন পথচারীদের হাতে মাস্ক দিয়ে তাঁদের তা পরতে অনুরোধ করা হয়। মাস্ক বিহীন বেপরোয়া ৭৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কোভিডবিধি মানতে অনীহার কারণে এদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-ফের বৃষ্টিতে ভিজল শহর
রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকায় বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার সমস্ত বাজার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালেই নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার গড়িয়া, বালিয়া-সহ বিভিন্ন বাজারে টহল দেয় পুলিশ। অন্যদিকে, সোনারপুর পুর এলাকায় ১৯টি জায়গাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বুধবার সকালেই সেই সব এলাকায় বোর্ড লাগানো হয়। এলাকাবাসীকে সচেতন করেন পুলিশকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে শুধু রাজপুর-সোনারপুর এলাকা নয়, অন্যান্য এলাকার বাজার-হাটেও এদিন সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি ধরপাকড়ও চলে। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে ফের বাজার-হাটে শুরু হয়েছে কড়া নজরদারি। চলছে পুলিশের মাইকিং। শহর কলকাতার পাশাপাশি হাওড়া, হুগলি ও দুই ২৪ পরগনা জুড়েই বুধবার এই ছবি দেখা গিয়েছে। হুগলির ব্যান্ডেলের চকবাজার এলাকাতেও সতর্কতামূলক প্রচার চালায় পুলিশ। চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মাইকে প্রচার করেন চুঁচুড়া পুরসভার কর্মীরা। বিনা মাস্কে কাউকে দেখলেই রাস্তায় দাঁড় করিয়ে সতর্ক করতে দেখা যায়। রাস্তাতেই কয়েকজনকে প্রকাশ্যে মৃদু শাস্তি ও ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন পুলিশ কর্মীরা। চলছে ধরপাকড়ও।
আরও পড়ুন-ত্রিপুরার আক্রান্ত নেতা মামনের পাশে অভিষেক
এদিন এয়ারপোর্ট, বিরাটি মোড়, শরৎ কলোনি এলাকায় অভিযান চালায় এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ। বাস থামিয়ে উঠে চলে মাস্ক বিলি। করোনা বিধিভঙ্গের অভিযোগে কয়েকজনকে আটকও করা হয়। বাগুইআটির কাছে নারায়ণপুরেও চলে পুলিশের অভিযান। মারণ ভাইরাস রুখতে দেগঙ্গা ব্লকে পুলিশের তরফে শুরু হয়েছে মাইকে প্রচার। গাড়ি থামিয়ে রাস্তায় চলছে তল্লাশি। শ্রীরামপুর পুরসভার ৮টি ওয়ার্ডকে কনটেনমেন্ট জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। সচেতনতার প্রচারে বেরিয়ে পড়েছেন খোদ পুর-প্রশাসক।