সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ : দুর্ঘটনা থেকেও শিক্ষা নেয়নি রেল। তা ফের প্রমাণিত হল রবিবার গভীর রাতে। ফরাক্কায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ল আপ কলকাতা-রাধিকাপুর এক্সপ্রেস। বল্লালপুর ব্রিজের কাছে দুর্ঘটনা ঘটে। রেলগেট না থাকায় একটি বালি-বোঝাই লরি লাইন পার হতে গিয়ে রেল লাইনের উপর দাঁড়িয়ে পড়ে। সেইসময় ট্রেন চলে আসায় দুর্ঘটনা ঘটে। লরিটি মালদহের দিকে যাচ্ছিল।
আরও পড়ুন-ডায়মন্ড হারবারের সামনে ডোয়াবা, জয়ের ছন্দ ধরে রাখতে চান কিবু
দুর্ঘটনায় ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন লেগে যায়। চালকের তৎপরতায় ট্রেনটি থামানো হয়। খবর পেয়ে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কোনওক্রমে বরাত জোরে রক্ষা পান যাত্রীরা। সরকারি বাসে করে যাত্রীদের ঘটনাস্থল থেকে রায়গঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ঘটনার জেরে সোমবার উত্তরবঙ্গমুখী একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। রেল আধিকারিকেরা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও, পরিষেবা স্বাভাবিক হতে রাত গড়িয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার ফলে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে রেল যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। সোমবার বিকেলে আতঙ্কের রাত কাটিয়ে বাড়ি ফিরলেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত রাধিকাপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীরা।
আরও পড়ুন-প্রাথমিক শিক্ষায় নজিরবিহীন উদ্যোগ দক্ষিণ দিনাজপুরে
রায়গঞ্জ ষ্টেশনে নেমে তনুশ্রী দত্ত, বাবলি সাহা রা জানান, রাত দেড়টা নাগাদ বালিভর্তি লড়িকে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয় ট্রেনটির কয়েকটি বগি। প্রচণ্ড জোরে কেপে ওঠে ট্রেন। আগুন ধরে যায় ইঞ্জিনে। যদিও দুর্ঘটনায় হতাহত হননি কেউ। ভোর ৬টা নাগাদ দুর্ঘটনা গ্রস্থ ট্রেনের কয়েকটি বগি-সহ ঘুরপথে রায়গঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয় ট্রেনটি। সোমবার বিকেল ৪.৩০ মিনিট নাগাদ যাত্রীদের নিয়ে রায়গঞ্জে পৌছায় ট্রেনটি। নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন যাত্রীরা। রায়গঞ্জ স্টেশনে নেমে রেলের বিরুদ্ধে তাঁরা ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। একাধিক অভিযোগও জানালেন। উল্লেখ্য, বাহানাগা দুর্ঘটনায় অত মানুষের প্রাণ যাওয়ার পরেও রেলের কোনও পরিবর্তন হয়নি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এখনও স্পষ্ট। বহু স্টেশনে নেই রেলগেট। যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে নিত্যদিনই। আবার কোচের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দূরপাল্লার ট্রেন বিকল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে মাঝ স্টেশনে। একপ্রকার প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই যাত্রীদের রেল সফর করতে হচ্ছে।