শারজা, ৩০ অক্টোবর : শনিবার শেষ ওভারে যিনি দক্ষিণ আফ্রিকার পরিত্রাতা হয়ে সামনে এলেন, তাঁকে ক্রিকেটমহল চেনে ‘কিলার মিলার’ বলে। পরপর দু’বলে দুটি ছক্কা। তাতেই লঙ্কা-জয়ের ছবিটা স্পষ্ট করে ফেললেন অলরাউন্ডার ডেভিড মিলার। অথচ, তেম্বা বাভুমা আউট হয়ে যাওয়ার পর ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গার হ্যাটট্রিকে শ্রীলঙ্কা জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করে ফেলেছিল। কিন্তু, সেখান থেকে রাবাডা-মিলার অপরাজিত জুটিতে উঠে এল ৩৪ রান। আর তাতেই চার উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। জিতে তারা ভেসে থাকল নক আউটের দৌড়েও।
‘ব্ল্যাক-লাইভস ম্যাটার’ বিতর্কে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পর শনিবার ফের মাঠে নামলেন কুইন্টন ডি’কক। এমনকী ম্যাচের আগে হাঁটু মুড়ে বসতেও দেখা গেল তাঁকে। কিন্তু একটা ম্যাচ বাইরে থাকার পর ডি’ককের এই প্রত্যাবর্তন খুব একটা সুখের হয়নি। চামিরার বলে ১২ রান করে ফিরে গেলেন তিনি। অন্য ওপেনার রেজা হেনড্রিক্সও চামিরার শিকার। তিনি করেন ১১ রান। শ্রীলঙ্কার ১৪২ রান তাড়া করে দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ২৬-২। আইসিসি ইভেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বলা হয় ‘চোকার্স’। বড় ইভেন্টে বরাবর তারা গুটিয়ে যায়। এই ধারা অব্যাহত রেখে শারজায় শনিবার খানিকটা আশা জাগিয়েও একসময় গুটিয়ে গিয়েছিল তাদের ব্যাটিং। তা না হলে অধিনায়ক বাভুমা আর মার্করাম মিলে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে দলকে টেনে তুলেছিলেন। বাভুমা যেভাবে খেলছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল তিনি ম্যাচ শেষ করে আসবেন। উল্টোদিকে ভ্যান ডার ডুসেন (১৬), মার্করাম (১৯) ফিরে গেলেও লক্ষ্যে মোটামুটি অবিচল ছিলেন বাভুমা। কিন্তু তাঁর ৪৬ বলে ৪৬ রানের ইনিংস শেষ হয়ে যায় ডি’সিলভার বলে। দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ১১২-৫। এরপর তাদের জয়ের আশা ছিল না। কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করে ম্যাচ জিতিয়ে ফিরে এলেন মিলার ও রাবাডা।
দক্ষিণ আফ্রিকার তাবরেজ শামসির সমস্যা হল তিনি খুব বেশি প্রচার পান না। না হলে ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেটে তিনি দুনিয়াজুড়ে টি-২০ লিগে দাপিয়ে বল করেন। বাঁ-হাতি চায়নাম্যান বোলার।
আরও পড়ুন : কালীপুজোয় শীতের আমেজ
অনেকটা কুলদীপ যাদবের মতো। তাঁকে ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার টি-২০ দল এখন ভাবাই যায় না। শনিবার সেই শামসি চার ওভার বল করে চাপে ফেলে দেন শ্রীলঙ্কাকে। শারজায় এদিন চার ওভারে ১৭ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন এই স্পিনার। শ্রীলঙ্কা শামসির এই ধাক্কা সামলাতে পারেনি। তবে এদিন তিন উইকেট নেন ডোয়েইন প্রিটোরিয়াসও। দুই উইকেট নর্তজের। ২০ ওভারে শ্রীলঙ্কা তোলে ১৪২ রান।
শারজায় আগেরবারের আইপিএলে রানের বন্যা হয়েছে। কিন্তু এবার না আইপিএল, না বিশ্বকাপ, কোথাও বড় রান নেই। শ্রীলঙ্কা আগে ব্যাট করে শুরুতেই কুশল পেরেরাকে (৭) হারায়। কিন্তু তারপর পাথুম নিশাঙ্ক আর চারিথ আসালাঙ্কা মিলে পরিস্থিতি কিছুটা সামলে নেন। চারিথ ২১ রান করে ফিরে গেলেও নিশাঙ্ক কিন্তু শামসি, রাবাডা ও নর্তজের আক্রমণ সামলে দলের রান এগিয়ে নিয়ে যান। শেষপর্যন্ত তিনি যখন আউট হলেন, নামের পাশে ৫৮ বলে ৭২ রান। ছ’টি চার ও তিনটি ছক্কা। নিশাঙ্কের পাশে আর একজনও দাঁড়াতে পারলে শ্রীলঙ্কা দেড়শোরও কম রানে অলআউট হয়ে যেত না।