নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : মনরেগা ইস্যুতে বুধবারও সরগরম সংসদভবন। গিরিরাজ সিং এবং সাধ্বী নিরঞ্জনা জ্যোতি। একজন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী, অন্যজন তাঁর ডেপুটি। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দুই মন্ত্রী নিজেদের বক্তব্য থেকেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন। মোদি মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রীর এমন কাণ্ডকারখানায় নিন্দার ঝড়। বিজেপির বাংলা-বিদ্বেষ কোন পর্যায়ে গেলে এমন কুৎসিত মিথ্যাচার করা হয় তা নিয়ে আলোচনা রাজধানীর অলিন্দেও।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের পাল্টি খাওয়ার বহর দেখে অনেকেই বলছেন, বিজেপির শীর্ষমহলের ধমক খেয়েই সম্ভবত নিজের বলা কথাই গিলে ফেলতে বাধ্য হলেন গিরিরাজ। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার শীর্ষস্তরের ‘রাজনৈতিক’ নির্দেশেই যে বাংলার মনরেগার টাকা আটকানো হয়েছে সে-কথা মঙ্গলবারই ফাঁস করে দিয়েছিলেন গিরিরাজ। মনরেগায় ভুয়ো জবকার্ড তৈরির নিরিখে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ যে দেশের মধ্যে শীর্ষে তা সংসদে জানিয়েছে গিরিরাজেরই মন্ত্রক। অদ্ভুত ব্যাপার হল মনরেগায় যোগীরাজ্য শীর্ষে আর টাকা আটকে রাখা হচ্ছে বাংলার। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আর বিজেপি নেতাদের তীব্র বাংলা-বিদ্বেষের কারণেই এই পদক্ষেপ।
মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Sudeep Banerjee) সঙ্গে আলোচনার সময় মনরেগা ইস্যুতে রাজ্যের বক্তব্য মেনে নিয়ে এই গিরিরাজই বলেছিলেন, তাঁর হাত-পা বাঁধা। সব সিদ্ধান্তই উপর মহলের। প্রধানমন্ত্রী আর মুখ্যমন্ত্রী কথা বললে যদি কোনও সুরাহা হয়!
অথচ মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজের বক্তব্য নস্যাৎ গিরিরাজ বুধবার সংবাদমাধ্যমে বলেন, আমি এমন কিছু বলিনি। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudeep Banerjee) অসত্য বলেছেন। আমি কখনওই এমন পরামর্শ (প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক) দিইনি। উনিই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে সুদীপের দাবি, এই বিষয়ে গিরিরাজজির বিশেষ দোষ দেখছি না। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর এই প্রস্তাবে কোনও অন্যায় ছিল না। হতে পারে দলীয়ভাবে কোনও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন তিনি। রাজ্যের কোনও বিজেপি নেতা হয়তো নালিশ ঠুকেছেন, কেন গিরিরাজ তৃণমূলের সঙ্গে কথা বলছেন? এমন বাংলা বিদ্বেষী মানুষ তো সংসদে রয়েছেন৷ তবে মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে দু’দফায় আমার দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। সুদীপ বন্দোপাধ্যায় আরও বলেন, আমার মতে, মানুষের স্বার্থে দুই সাংবিধানিক প্রধান আলোচনা, বৈঠক করবেন। সেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে অসুবিধা কোথায়?
এদিকে ভুয়ো জবকার্ডের তালিকায় বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের নাম শীর্ষে থাকা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেন, মনরেগার বিষয়টি একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া। কেউ চলে যান, কেউ বদলি হয়ে যান। সেই জন্য এমনটা হয়ে থাকতে পারে। এই বিষয়টিকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।
আরও পড়ুন- ‘দিন-রাতের পার্থক্য বোঝে না’, রাহুলের উপর কোনও আস্থা ছিল না প্রণবের