অনন্ত গুছাইত, নয়াদিল্লি : করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষিতে লকডাউনের সময়কালে কেন্দ্রের মোদি সরকার দফায় দফায় সাংবাদিক বৈঠক করে প্রকল্পের ফুলঝুরি জ্বালিয়েছে। বিশেষ করে কৃষক ও কৃষির জন্য। কিন্তু ফুলঝুরির আলোর রোশনাই পৌঁছয়নি গরিব কৃষকের ঘরে। খাতায় কলমে করোনার প্রাদুর্ভাবের সময় ভারতে কৃষিক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি হলেও, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনাও বেড়েছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গে এই সময় কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা শূন্য। এই তথ্য কোনও বিরোধী দলের দেওয়া নয়। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি) রিপোর্ট অনুযায়ী, কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
আরও পড়ুন-ত্রিপুরা পুলিশের চাপ তৈরির অপচেষ্টা রুখে দিয়ে পাল্টা থানায় নিজের কথা বলে এলেন কুণাল
এনসিআরবি রিপোর্ট অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে আত্মহত্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশি। এখানে কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ৪ হাজার ৬ জন আত্মহত্যা করেছেন। একই সময়ে, কর্নাটকে, অন্ধ্রপ্রদেশে ৮৮৯ জন, মধ্যপ্রদেশে ৭৩৫ জন, ছত্তিশগড়ে ৫৩৭ জন আত্মহত্যা করেছেন। ২০২০ সালে মোট ১০ হাজার ৬৭৭ জন আত্মহত্যা করেছেন। ২০১৯ সালেও, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ, এই চার রাজ্য কৃষক আত্মহত্যার ক্ষেত্রে শীর্ষে ছিল। ১১ মাস ধরে কৃষক আন্দোলনে উত্তাল পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ২৫৭ এবং ২৮০ আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। ২০২০ সালে, কৃষিক্ষেত্রে মোট ১০ হাজার ৬৭৭ জন আত্মহত্যা করেছেন, যা ভারতের মোট আত্মহত্যার (১ লক্ষ ৫৩ হাজার ০৫২) ৭ শতাংশ। ১০ হাজার ৬৭৭টি আত্মহত্যার মধ্যে ৫ হাজার ৫৭৯ জন কৃষক এবং ৫ হাজার ৯৮ জন কৃষি শ্রমিক। ২০২০ সালে কৃষি শ্রমিকের আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি) এ তথ্য জানিয়েছে। ২০১৬ সালে ১১ হাজার ৩৭৯টি কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ সালে ১০ হাজার ৬৫৫টি, ২০১৮ সালে ১০ হাজার ৩৪৯টি এবং ২০১৯ সালে ১০ হাজার ২৮১টি কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। ২০২০ সালে আত্মহননকারী ৫ হাজার ৫৭৯ কৃষকের মধ্যে ৫ হাজার ৩৩৫ জন পুরুষ এবং ২৪৪ জন মহিলা। একই সময়ে, একই বছর আত্মহননকারী ৫ হাজার ৯৮ জন কৃষি শ্রমিকের মধ্যে ৪৬২১ জন পুরুষ এবং ৪৭৭ জন নারী। লক্ষণীয়, এনসিআরবি রিপোর্টে কৃষক ও কৃষি শ্রমিকদের ভাগ করে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে। এখানে কৃষক হল তারা, যাদের নিজস্ব জমি আছে এবং তারা তাতে চাষাবাদ করে। কৃষি শ্রমিক হল তারা, যাদের নিজস্ব জমি নেই এবং তাদের আয়ের উৎস হল অন্যের খেতে কাজ করা।