৩৭০ অনুচ্ছেদ জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu-Kashmir) জন্য একটি সাময়িক মর্যাদা ছিল। সোমবার মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে সামিল হওয়ার পর তার আর সার্বভৌমত্ব ছিল না। দেশের শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, উপত্যকায় সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রয়োগ করে যে ব্যবস্থা জারি ছিল তা চিরস্থায়ী ছিল না। পাশাপাশি সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জম্মু এবং কাশ্মীর ভারতেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেই এদিন জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে সোমবার ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে তিনরকম রায় এসেছে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতি। এছাড়া এ দিন শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে নিজের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, “আশা, উন্নতি এবং ঐক্যের পথে অসাধারণ সিদ্ধান্ত।” একইসঙ্গে তাঁর বার্তা, কাশ্মীর ও লাদাখের জন্য যাবতীয় প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হবে। সুফল পাবেন ৩৭০ ধারায় বঞ্চিত আমজনতাও।
এদিন রায় ঘোষণা করতে গিয়ে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে
• জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে
• যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণেই জম্মু ও কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল
• ৩৭০ অনুচ্ছেদ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ছিল না
• ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার নির্বাচন করাতে হবে
• কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবেই থাকবে লাদাখ
• জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা থাকবে কি থাকবে না সে ব্যাপারে দেশের রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা একেবারে সঠিক
• সংবিধানের ৩৭০ (১)(ডি) ধারা প্রয়োগ করে ভারতের সংবিধানের সমস্ত ধারা জম্মু ও কাশ্মীরে প্রয়োগ করা যাবে
• ভারতে অন্তর্ভূক্তির পর জম্মু-কাশ্মীরের কোনও অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব গুরুত্ব রাখে না
• সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা হলে কেন্দ্রকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সব সিদ্ধান্তকেই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না
আরও পড়ুন-শীত এল, আহিরণ বিলে এল না পরিযায়ী পাখি, ১০০ দিনের টাকা না মেলায় বন্ধ সংস্কার
২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট কাশ্মীর (Jammu-Kashmir) নিয়ে বড় ঘোষণা করে মোদি সরকার। বাতিল করা হয় ভূস্বর্গের ‘বিশেষ মর্যাদা’। ৩৭০ অনুচ্ছেদ এবং ৩৫-A অনুচ্ছেদ রদ করার ঘোষণা করে কেন্দ্র। জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়। তারপর কেটে গিয়েছে চার চারটি বছর। মোদি সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতাতেই একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় একাধিক পিটিশনে। সেই নিয়েই চূড়ান্ত রায় ঘোষণা শীর্ষ আদালতের। এদিন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কউল, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ দীর্ঘ ১৬ দিন শুনানি পর্ব চলার পর এই রায়দান করেন।