অভিষেকের সভা আটকাতে আজ পর্যন্ত ষড়যন্ত্র অনেক হয়েছে। সব অপচেষ্টাকে ব্যর্থ করে হাইকোর্টে নির্দেশে রবীন্দ্র ভবন সংলগ্ন রাস্তাতে সভা করার অনুমতি পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস । জেলায় জেলায় তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের সভামঞ্চে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে পুলিশের তরফে। আগরতলায় সভামঞ্চে এদিন এই কারণেই গর্জে উঠলেন সুস্মিতা দেব, সুবল ভৌমিক, কুণাল ঘোষরা। একই সঙ্গে মিথ্যাচার- গুন্ডারাজ চালানো বিজেপি সরকারকে উৎখাতের ডাক দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন-আগরতলায় পৌঁছে গেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিমানবন্দরে স্বাগত জানালেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা
গত ৪ বছর ধরে ত্রিপুরা রাজ্যে অপশাসন চালানো বিপ্লব দেবের সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়ে তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক বলেন, “এই লড়াই আপনার। শুধু আপনার নয়, ৪০ লক্ষ মানুষকে মুক্ত করতে আপনারা এসেছেন আজকের এই সভায়। বিপ্লব দেবের অপশাসনে রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। এর আগে চারবার অভিষেকের সভা আটকাতে ষড়যন্ত্র করে গিয়েছে বিজেপি। আদালতের নির্দেশে অনুমতি পাওয়া গেলেও মানুষজনকে সভায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিপ্লব দেবের ষড়যন্ত্রকে বানচাল করে আমরা জয়ী হয়েছি। লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে এই লড়াই এবার সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়বে। আগামী ২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার গড়বে তৃণমূল। কোন রক্তচক্ষু আমাদের আটকাতে পারবে না।
এছাড়াও এদিনের সভায় থেকে তৃণমূলের রাজ্য সাধারন সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এই রাজ্যের চূড়ান্ত অপশাসন চলছে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষককে প্রতিশ্রুতি দিয়েও ছাটাই করে দিয়েছে এরা। অভিষেকের সভা আটকাতে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে প্রতিবাদ ১৪৪ ধারা। হয় এই প্রথমবার কোন সভা করতে রাতের বেলা ফোন করে জানাতে হচ্ছে লোক আনবেন না আপনারা। শুধু তাই নয় কংগ্রেস ও সিপিএমকে বার্তা দিয়ে তিনি আরো বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে যদি কোন শক্তি লড়তে পারে সেটা তৃণমূল। সিপিএমকে বলবো আপনারা মিছিল করুন মিটিং করুন কিন্তু ভোটটা তৃণমূলকে দিন। কংগ্রেসের কাছে আবেদন জানাচ্ছি বিপ্লব দেবকে উৎখাত করতে তৃণমূলকে ভোট দিন।
পাশাপাশি এদিনের সভা থেকে সুস্মিতা দেব বলেন, এই সভাতে ১০ হাজার মানুষের আমন্ত্রণ ছিল। তবে ত্রিপুরা পুলিশ এমন পরিস্থিতি তৈরি করল যে লোক সংখ্যা কমাতে হল। পুলিশ যাদেরকে বাইরে আটকে দিয়েছে তাদের কাছে আমরা ক্ষমা চাইছি। চিন্তা করবেন না আবার সভা হবে বিপ্লব দেব আমাদের আটকাতে পারবেনা। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, আমার মনে আছে ত্রিপুরাতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার আগে একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিল ওরা বলেছিল প্রতিটি বাড়িতে একজন করে চাকরি পাবে গ্রাজুয়েশন পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা পাবে বাড়ির মেয়েরা তোর কোন প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। ত্রিপুরার লড়াইয়ের ময়দানে সিপিএম কংগ্রেস নেই, আছে তৃণমূল। বিজেপির এই গুন্ডারাজ এর জবাব ত্রিপুরার মানুষ দেবে, ২৩ এর নির্বাচনে বিপ্লব দেবকে উৎখাত করে।
আরও পড়ুন-গোপন কথাটি রবে না গোপনে
এদিনের মঞ্চ থেকে যুবনেতা সুদীপ রাহা বলেন, এই লড়াই ত্রিপুরার মাটি বাঁচানোর লড়াই পদ্মকে উপড়ে ফেলে দেওয়ার লড়াই। ২৩ শে ত্রিপুরাতে সেমিফাইনাল আর ২৪-শে দিল্লিতে ফাইনাল। বিজেপি দেশ ভক্তির কথা বলে, সত্যিই যদি ভারতমাতাকে এরা ভালোবাসতো তাহলে মায়ের গায়ের অলংকার রেল, এয়ার ইন্ডিয়ার মত সরকারি সংস্থাগুলিকে বিক্রি করতো না। মোদি-শাহ আসলে কুলাঙ্গার। এই রাজ্যে কোনরকম সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৃণমূল করতে দেবেনা তৃণমূল। T- Temple, M- Mosque, C- Church।
কড়া ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ শানাতে ছাড়েননি তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনও। তিনি বলেন, গোটা রাজ্যজুড়ে গুন্ডারাজ চলছে বিজেপির। তৃণমূল নেতৃত্বের উপর লাগাতার হামলা চালানো হচ্ছে। মেরে মৃত্যুর মুখে পাঠিয়ে দিতে পারে, কিন্তু চিকিৎসাটুকু দিতে পারে না এরা। আর একটা দল সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপ্লব করছে। আপনাদের মন্ত্রী দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিতে পারেন অথচ ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিতে গেলে তেরোবার হামলার শিকার হতে হয় অভিষেককে। আর বেশি দিনের অপেক্ষা নয় মানুষ বিপ্লব করে এই বিপ্লব দেবকে সরিয়ে দেবে।