সোমনাথ বিশ্বাস, আগরতলা: এদিন ত্রিপুরার বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, বিপ্লব দেব এখন বিগ-ফ্লপ-দেবে পরিণত হয়েছেন। “একটা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা নেই, সে হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মহম্মদ বিন তুঘলকের মতো আচরণ।”
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে নেত্রীকে নিয়ে আগরতলায় সভা করব: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
ত্রিপুরায় তাঁর যাওয়া নিয়ে, সভা করা নিয়ে বারবার বাধা দিয়েছে বিপ্লব দেব সরকার। শনিবার, রবীন্দ্র ভবনের সামনে সভা-মঞ্চ থেকে তার তীব্র প্রতিবাদ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি ত্রিপুরা বিজেপি সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০২৩-এর আগে থেকে ত্রিপুরায় ঘর-বাড়ি নিয়ে থাকব। পারলে আটকান।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা আটকাতে রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে বিপ্লব দেবের সরকার। শুধু তাই নয়, নতুন করে কোভিড টেস্টের নয়া নিয়ম জারি করে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানান তৃণমূল সাংসদ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এত ভয় কীসের? এত এজেন্সি আপনার সঙ্গে তাও ভয়? আমার উপর আপনার রাগ, আমার সঙ্গে মোকাবিলা করুন, সাধারণ মানুষকে না নাকাল করছেন কেন?
শুধু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ-সহ অনেকেই হেনস্থা করছে বিজেপির পুলিশ। নোটিশ পাঠিয়ে থানায় তলব করা হচ্ছে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান অভিষেক। বলেন, দুটো নোটিশ দিয়ে তৃণমূলকে আটকানো যাবে না। এটা সিপিএম-কংগ্রেস নয়, যে ঘরে বসে যাবে ঘাসফুল যত কাটবে তত বাড়বে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব নিজে প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তাঁর কথায় চলে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন। আইন নয়, তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁদের। সেই বক্তব্যে উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, পুলিশ-প্রশাসনের দোষ নেই, তাদের বুলডোজ করে কাজ করানো হচ্ছে। “কিন্তু মনে রাখবেন আপনাদের কাঁধে অশোকস্তম্ভ রয়েছে; পদ্মফুল নয়।” অভিষেক বলেন, বিজেপির আমলের থেকে ত্রিপুরায় বাম আমলে অবস্থা ভাল ছিল। অন্তত লোকে রাস্তায় বেরোতে পারত।
কথায় কথায় ডবল ইঞ্জিন সরকারের কথা বলে গেরুয়া শিবির। সেই বক্তব্যকে তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূল সাংসদ। বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার মানে ডবল চুরি। কেন্দ্র-রাজ্য দু’জায়গাতেই চুরি। বিপ্লব দেবের আমলে ত্রিপুরার রাস্তা-স্কুল-স্বাস্থ্য সব বেহাল। কোনও উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ অভিষেকের। ত্রিপুরা বিজেপি সরকারের আমলে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। ১০৩২৩ জন শিক্ষক কাজ ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন। অভিষেক বলেন, তাঁদের যা আইনগত সাহায্য দরকার তা করবে তৃণমূল। আগামী দিনে তৃণমূল ক্ষমতায় এলে কারও চাকরি তো যাবেই না উল্টে যাঁরা কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের কাজ ফেরানোর চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় আজ খুঁটি পুজো করলাম, ২০২৩-এ বিসর্জন দেব: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
দীপাবলি-ভাইফোঁটার পরে আবার আসবেন বলে কথা দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আশ্বাস দেন, যতদিন না পর্যন্ত গণতান্ত্রিক-উন্নয়নমূলক-প্রগতিশীল সরকার গঠন করা হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত তিনি ত্রিপুরার হাত ছাড়বেন না।