প্রতিবেদন : খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার চেষ্টার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে চেক প্রজাতন্ত্রে গ্রেফতার হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিখিল গুপ্ত। আমেরিকার বাইডেন প্রশাসনের নির্দেশেই এই গ্রেফতারি বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছিল নিখিল গুপ্তের পরিবার। তবে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, নিখিল গুপ্তকে ছাড়াতে হলে চেক প্রজাতন্ত্রের আদালতে যান। এখানে কী হবে?
বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রাগের একটি জেলে বন্দি রয়েছেন নিখিল গুপ্ত। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে ভারতও যাতে আমেরিকার অনুকরণে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে সেই আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছিল নিখিলের পরিবার। সেখানে আবেদন জানানো হয়, নিখিলের গ্রেফতারি অবৈধ। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। এই আবেদনের শুনানিতে আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, বিদেশমন্ত্রক ইতিমধ্যেই বিষয়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল বলে স্বীকার করেছে। আবেদনকারীর কিছু জানানোর থাকলে চেক প্রজাতন্ত্রের আদালতে গিয়ে মামলা দায়ের করতে হবে। এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এমন কোনও আইন নেই যা অন্য দেশে গ্রেফতারির এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করবে। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি (নিখিল গুপ্ত) কোনও হলফনামা দেননি। যদি কোনও আইন লঙ্ঘন হয়, তাহলে যে দেশে তিনি গ্রেফতার হয়েছেন সেখানকার আদালতে গিয়েই বক্তব্য জানাতে হবে। ভারতের শীর্ষ আদালতের এখানে কোনও ভূমিকা নেই। মামলাকারীকে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ, মামলা দায়ের করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সব তথ্য ও নথিপত্র পেশ করুন।
আরও পড়ুন- ধর্ষণে দোষী ইউপির বিজেপি বিধায়কের ২৫ বছরের জেল
উল্লেখ্য, ৫২ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিখিল গুপ্তর বিরুদ্ধে পান্নুনকে হত্যার জন্য এক হিটম্যান ভাড়া করার অভিযোগ রয়েছে। খালিস্তানপন্থী আইনজীবী পান্নুনের আমেরিকা ও কানাডার নাগরিকত্ব আছে। কথিত ‘হিটম্যান’ ছিলেন একজন গোপন মার্কিন ফেডারেল এজেন্ট। হত্যার জন্য ভাড়াটে খুনির সন্ধান এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে নিখিলের ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এই মামলায় একজন ভারতীয় সরকারি আধিকারিকের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। এই আধিকারিকের পরিচয় বর্তমানে গোপন রাখা হয়েছে। মার্কিন আবেদনে সাড়া দিয়েই চেক প্রজাতন্ত্র গত জুন মাসে আটক করে নিখিল গুপ্তকে। অগাস্ট মাসে তার প্রত্যর্পণের জন্য চেক আদালতে আবেদন জানায় মার্কিন প্রশাসন। সেই আবেদনের শুনানি চলছে। এবার তাতেই হস্তক্ষেপের আর্জি সটান খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।