প্রতিবেদন : চলতি আইএসএলে ঘরের মাঠে প্রথম হার মোহনবাগানের (FC Goa- Mohun Bagan)। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এফসি গোয়ার কাছে লজ্জার হারে লিগ টেবলে চারে নেমে গেল জুয়ান ফেরান্দোর দল। নোয়া সাদাউ, ভিক্টর রডরিগেজ, ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজরা কার্যত ছেলেখেলা করে ৪-১ গোলে হারাল মোহনবাগানকে। নোয়ার জোড়া গোল। একটি করে গোল ভিক্টর ও কার্লোস মার্টিনেজের। টানা দ্বিতীয় হারে ৯ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট মোহনবাগানের। সমসংখ্যক ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই গোয়া।
চোট ও কার্ড সমস্যার মধ্যে লড়াই করলেও রক্ষণের ভুলে প্রথমার্ধেই তিন গোল হজম করে সবুজ-মেরুন। সেখান থেকে দ্বিতীয়ার্ধে আরও সাদামাটা জুয়ানের দল। পাঁচটি পরিবর্তন করে ফেলায় চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়া ব্রেন্ডন হ্যামিলের পরিবর্ত নামাতে পারেননি জুয়ান। ফলে শেষ ২৫ মিনিট ১০ জনে খেলে পেনাল্টিতে আরও একটি গোল হজম করে মোহনবাগান। চার গোলের ধাক্কায় জুয়ানের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে। যুবভারতীতে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের মুখে ‘গো ব্যাক জুয়ান’ স্লোগান। এদিন ম্যাচ শুরুর আগে জেসন কামিন্সের সঙ্গে আর্মান্দো সাদিকুর ঝামেলাও দলের অন্দরমহলের অস্বস্তিকর ছবিটা সামনে আনল।
মুম্বই ম্যাচের ধাক্কা কাটিয়ে জয়ে ফেরার চ্যালেঞ্জ ছিল মোহনবাগানের কাছে। একইসঙ্গে কার্ড সমস্যার কারণে রক্ষণের দুই গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার আশিস রাই ও হেক্টর ইয়ুস্তেকে ছাড়াই নামতে হয়েছিল। ছিলেন না লিস্টন কোলাসোও। ব্রেন্ডন হ্যামিলকে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে রেখে সুমিত রাঠি ও দীপক টাংরিকে দুই সাইড ব্যাকে এনে ৩-৪-১-২ ফর্মেশনে দল নামান মোহনবাগান কোচ। ম্যাচের শুরু থেকে বাগানের দুর্বল রক্ষণব্যূহ বারবার ভাঙে গোয়া (FC Goa- Mohun Bagan)।
আরও পড়ুন- রেফারিং নিয়ে কড়া চিঠি ইস্টবেঙ্গলের
১০ মিনিটেই পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়ে যায় গোয়া। বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবল করেন মনবীর সিং। রেফারি পেনাল্টি দিলে গোল করতে ভুল করেননি নোয়া। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও নোয়া, ভিক্টরদের থামাতে হিমশিম খায় সবুজ-মেরুন রক্ষণ। গোয়ার আক্রমণে অনেক বেশি তীব্রতা ছিল।
বিরতির আগে মিনিট দশেকের থ্রিলারে তিনটি গোল হয়। ৪২ মিনিটে কার্ল ম্যাকহিউয়ের সঙ্গে যুগলবন্দিতে অসাধারণ গোল করে গোয়ার পক্ষে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভিক্টর। প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়ে ৪৮ মিনিটে যুবভারতীকে স্তব্ধ করে গোয়ার তৃতীয় গোল। বাঁ-দিক থেকে মোহনবাগান রক্ষণকে বোকা বানিয়ে দুরন্ত গোল করেন সেই নোয়া। যোগ করা সময়ে ৫২ মিনিটে ব্যবধান কমায় মোহনবাগান। বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক থেকে অসাধারণ গোল করেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। প্রথম পোস্টের কোণে বল রেখেছিলেন অস্ট্রেলীয় তারকা। গোয়ার গোলরক্ষক অর্শদীপ সিংয়ের কিছু করার ছিল না।
চোটের কারণে ভিক্টর উঠে যাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধে গোয়ার আক্রমণে ক্ষিপ্রতা কমে। দু’গোলে পিছিয়ে থেকে ম্যাচে ফিরতে আক্রমণ ও রক্ষণে নতুন ফুটবলার আনেন মোহনবাগান কোচ। কামিন্স, মনবীর, দীপক, রাঠিদের তুলে হুগো বুমোস, হামতে, কিয়ান নাসিরি, সুহেল ভাটদের নামান জুয়ান। কিন্তু গোলের লকগেট খুলতে পারেনি সবুজ-মেরুন। বরং ৬২ মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সহজ সুযোগ নষ্ট করে গোয়া। অ্যাঙ্গেল ছোট করে নোয়ার শট দুরন্ত সেভ করেন মোহনবাগান গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। ৭১ মিনিটে গ্লেন মার্টিন্সকে তুলে রবি রানাকে নামানোর পরই আরও সমস্যায় পড়ে মোহনবাগান। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন হ্যামিল। কিন্তু পাঁচটি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় ম্যাচের বাকি সময় ছন্দে থাকা গোয়ার বিরুদ্ধে ১০ জনে খেলতে হয় জুয়ানের দলকে। সংযুক্ত সময়ে পেনাল্টি থেকে দলের চতুর্থ গোলটি করেন গোয়ার কার্লোস মার্টিনেজ।