দুবাই, ১ নভেম্বর : নিউজিল্যান্ড ম্যাচে নিজেদের পারফরম্যান্সকে অদ্ভুত বলেই মনে হয়েছে বিরাট কোহলির। দৃশ্যত হতাশ বিরাট রবিবার ম্যাচের শেষে বলেন, এই হারের কোনও ব্যাখ্যা নেই তাঁর কাছে! পরপর দুটি ম্যাচে হার। তাও এরকম একপেশে ম্যাচে। ভারত অধিনায়ক তাই এই হারকে অদ্ভুত বলে জানিয়েছেন।
রবিবার আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১১০ রানের বেশি তুলতে পারেনি ভারত। গোটা ইনিংসে সাতটি চার, দুটি ছক্কা ও ৫৪টি ডট বল হয়েছে। এই এক হিসাবই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে কী পরিমাণ চাপে ছিল ভারতীয় ব্যাটিং। বিরাট বলেছেন, ‘‘আমরা ব্যাটে-বলে কোথাও সাহস দেখাতে পারিনি। বিশাল কোনও স্কোর ডিফেন্ড করার ব্যাপার ছিল না, কিন্তু মাঠে নামার সময় আমরা সাহসী হতে পারিনি। ভারতের হয়ে খেলার সময় শুধু ফ্যানদের প্রত্যাশা ঘিরে থাকে না, ক্রিকেটারদের নিজেরও নিজের কাছে প্রত্যাশা থাকে। কিন্তু আমরা কিছু করতে পারিনি।” মরুদেশে টি-২০ বিশ্বকাপে ফেভারিট হিসাবে শুরু করেছিল ভারত। কিন্তু প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে পর্যুদস্ত হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডও আট উইকেটে ভারতকে হারিয়ে দিয়েছে। আইপিএলের সুবাদে টানা দু’মাস দুবাই, আবুধাবি, শারজায় কাটিয়েছেন বিরাট-রোহিতরা। মরুদেশের উইকেট-পরিবেশের সঙ্গে সড়গড় হয়ে যাওয়ার পর এমন ব্যর্থতা অনেককে অবাক করেছে। এখন দেখে মনে হচ্ছে আইপিএল ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিঃশেষ করে দিয়েছে। টানা বায়ো-বাবলের মধ্যে থাকার প্রভাবও ক্রিকেটারদের মধ্যে পড়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
বিশ্বকাপে প্রত্যাশার চাপ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। বিরাট কিন্তু সেদিকে আঙুল তুলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য হল, এই চাপ থাকবে। সবাই বছরের পর বছর ক্রিকেট খেলে এমন চাপে অভ্যস্ত। ভারতের হয়ে খেলতে গেলে এতে মানিয়ে নিতে হয়। কিন্তু গত দুটি ম্যাচে এই মানিয়ে নেওয়ার ছবিটা দেখা যায়নি। পাকিস্তান তিনটি ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে। আফগানিস্তানও তিন ম্যাচে দুটি জিতে ভাল জায়গায় আছে। এবার নিউজিল্যান্ডও জয়ের খাতা খুলে ফেলল। কিন্তু জয় এখনও অধরাই ভারতের কাছে। বুধবার ভারতের খেলা আফগানিস্তানের সঙ্গে। তারপর বাকি দুই ম্যাচ স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়ার সঙ্গে। বিরাট অবশ্য এখনও আশা ছাড়ছেন না। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা ঠিকই আছি। এখনও অনেক ম্যাচ কিন্তু বাকি আছে।” তবে বিরাট যাই বলুন না কেন, ভারত বাকি ম্যাচ জিতলেও সেমিফাইনালের রাস্তা সেই কঠিনই থাকছে। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের দিকে।
আরও পড়ুন : আফগানিস্তানের বিরুদ্ধেও বিরাটরা হেরে যেতে পারে : শোয়েব আখতার
এদিকে বিরাট কোহলি তাঁর অন্যতম প্রিয় ক্রিকেটার। কিন্তু সেই বিরাটকে নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পর একহাত নিলেন কপিলদেব নিখাঞ্জ। এমন নয় যে বিরাটের দল জঘন্য ক্রিকেট খেলেছে বলে তাঁর সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। কপিল বিরক্ত ম্যাচের পর বিরাটের মন্তব্যে। যেখানে ভারত অধিনায়ক বলেছেন, তাঁরা ম্যাচে সাহসী হতে পারেননি। যা শুনে কপিলের প্রতিক্রয়া, এটা খুবই দুর্বল বিবৃতি। কোনও অধিনায়কের এরকম কথা বলা উচিত নয়। রবিবার দুবাইয়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে আট উইকেটে হারের পর বিরাট বলেছেন, তাঁরা যে ক্রিকেট খেলেছেন তাকে অদ্ভুত বললেও কম বলা হয়। ব্যাটিং বা বোলিং, কোথাও তাঁরা সাহস দেখাতে পারেননি। ১১০ রান ডিফেন্ড করতে গেলে মাঠে যতটা সাহসী হতে হয়, ভারতীয় দল তা হতে পারেনি। বিরাটের এহেন মন্তব্য একেবারেই পছন্দ হয়নি বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়কের। কপিল বলেছেন, বিরাটের এরকম মন্তব্য টিম স্পিরিট বাড়াতে সাহায্য করবে না। কপিল একটি নিউজ চ্যানেলে বলেছেন, ‘‘বিরাটের মতো বড় প্লেয়ারের জন্য এটা খুব দুর্বল স্টেটমেন্ট। দলের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ যদি এমন হয় এবং অধিনায়কের ভাবনা-চিন্তার গতি-প্রকৃতি যদি এরকম হয়, তাহলে দলের মনোবল বাড়ানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বিরাটের মুখে এমন কথা শুনে আমি খুব অবাক হয়েছি। ও এরকম প্লেয়ারই নয়।” এখানেই না থেমে কপিল আরও যোগ করেছেন, ‘‘বিরাট হল ফাইটার। আমার মনে হয় সাময়িকভাবে ও নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিল। একজন অধিনায়কের কখনও এরকম বলা উচিত নয় যে আমরা সাহসী হতে পারিনি। বিরাট দেশের জন্য খেলছে। আর এজন্য ওর যথেষ্ট আবেগ রয়েছে। কিন্তু কখনও এরকম বললে আঙুল