প্রতিবেদন : মোদি জমানায় প্রতি মুহূর্তে ধ্বংস করা হচ্ছে মানবাধিকার ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার পরিসর। দেশের নানা প্রান্তে পরিকল্পিত উসকানি ও সাম্প্রদায়িক প্ররোচনা তৈরি করে বিভেদের বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সমাজে। বিশেষত বিজেপি রাজ্যগুলির হাল ভয়ঙ্কর। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি থেকে নারীনিগ্রহ, দলিত-সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, ধর্মীয় ফতোয়া জারি; বাদ নেই কিছুই। মানবাধিকার লঙ্ঘন, বাক-স্বাধীনতার উপর আক্রমণ ও নির্যাতন সহ একাধিক ইস্যুতে তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের তীব্র রাজনৈতিক বিরোধিতা ও কটাক্ষ করল তৃণমূল কংগ্রেস। নরেন্দ্র মোদির শাসনকালে ভারতে নির্যাতন ও হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, জনগণের বাক-স্বাধীনতা দমন, সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত হিংসার পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-সন্তানের মৃত্যুর পরও থানার ভিতর স্বামীর সঙ্গে তুমুল ঝগড়া সূচনার
বিজেপিকে আক্রমণ করে তৃণমূলের অভিযোগ, দেশে বিজেপি শাসনে পুলিশি হেফাজতে মোট ১২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চরম উদ্বেগের। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ অবস্থার সূচক। পাশাপাশি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকাকালীন ১৬৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এই মোদি জমানায়। এছাড়াও ৫৫টি বিচারবিভাগ বহির্ভূত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন-বাম মুখ্যমন্ত্রীর কন্যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন
দেশে বাক-স্বাধীনতার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তৃণমূল। বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের অভিযোগ, বিরোধী দল ও সাংবাদিকদের বেছে বেছে ‘টার্গেট’ করছে বিজেপি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাতে বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় হেনস্থা করা মোদি জমানায় রুটিন কাজে পরিণত হয়েছে। মহিলাদের উপর আক্রমণ ও নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে এই জমানায়। অপরাধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কীভাবে বিজেপি সরকার ধর্ষক ও খুনিদের রক্ষা করে তা বিলকিস বানো মামলাতেই ফাঁস করে দিয়েছে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। নারীর উপর অত্যাচার দেখেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কীভাবে নিষ্ক্রিয় থাকে তার প্রমাণ বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের ইস্যু। আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে পদকজয়ী সোনার মেয়েদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পরেও নির্বিকার মোদি সরকার। মহিলাদের অবমাননা আর নিগ্রহকারীদের সমর্থন এই জমানার পরিচিত ছবি। এর পাশাপাশি বিজেপির শাসনে দেশে যে সাম্প্রদায়িক হিংসা ও জাতিগত দাঙ্গার ঘটনা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে তার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি শাসনকালেই হরিয়ানায় নূহতে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা মেটানোর মনোভাব নিয়ে বহু সংখ্যালঘু পরিবারের উপর দমন-পীড়ন ও প্রতিশোধ নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন-দু’মাসের মধ্যেই ভারতীয় সেনাকে ছাড়তে হবে
সংখ্যালঘু এলাকার মানুষদের বিপুল সম্পত্তি নষ্ট ও সংখ্যালঘুদের মানুষদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রে বিজেপি শাসনকালেই মাসের পর মাস ধরে অশান্ত বিজেপিশাসিত রাজ্য মণিপুর। জাতিগত হিংসা, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, লুঠপাট, উচ্ছেদ, গির্জায় অগ্নিসংযোগ-সহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা হয়ে চলেছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। মণিপুরের হিংসায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত, বাড়ি-ঘর, গির্জা সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বিজেপি জমানায়। তৃণমূলের অভিযোগ, দেশজুড়ে এমনই অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়ে দশবছর ধরে স্বৈরাচারী, সাম্প্রদায়িক সরকার চালাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি।