আজ মঙ্গলবার নবান্ন (Nabanna) থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন স্কাইওয়াক ভাঙা যাবে না। এখনই সঙ্গে আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সও ভাঙা হবে না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “এদের ঔদ্ধত্য দেখে আমি অবাক হয়ে যাই! এরা দক্ষিণেশ্বরে হাত দিচ্ছে! এর পর বলবে কালীঘাট দিয়ে দাও! আমি করতে দেব না।“
আরও পড়ুন-পান্নুনের খুনের হুমকির মুখে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী
রেলের মতে, দক্ষিণেশ্বর মেট্রোয় রেক ঘোরানোর জায়গা নেই। ফলে ডাউন প্ল্যাটফর্মে যাত্রী নামিয়ে রেল ফের নিয়ে আসতে হয় বরানগরের দিকে। সেখান থেকে লাইন বদল করে আপ লাইনে যেতে হয়। তারপর যাত্রী নিয়ে দমদমের উদ্দেশ্য মেট্রো ছাড়ে। সেকারণেই রাজ্য সরকারের কাছে ৮০ মিটার জমি চাওয়া হয়। যদিও দ্বিতীয় চিঠিতে রেল জানিয়েছে, ৮০ মিটারের বদলে ৬০ মিটার জমি হলেও চলবে। সম্প্রতি জোকা- ধর্মতলায় মেট্রো প্রকল্পের জন্যে আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সের জমি চেয়েও রাজ্যের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে রেল।
আরও পড়ুন-জোর ধাক্কা, মথুরা শাহী ইদগাহে সার্ভের অনুমতি দিল না সুপ্রিম কোর্ট
এদিন কেন্দ্রের এই দাবির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক হৃদয়ের মণিমুক্ত। পুলিশের হৃদয়ের মণিকোঠায় আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স। এর কোনওটাই আমি ভাঙতে দেব না। দরকারে রুট বদলাতে সাহায্য করব।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমার রক্ত থাকতে দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না।’’
আরও পড়ুন-আত্মপ্রচারে মরিয়া: রেশনের ব্যাগেও মোদির ছবি, তৃণমূল বলল PM মানে ‘পাবলিসিটি মাস্টার’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে ওই স্কাইওয়াকের উপর দিয়ে মেট্রো রেলের লাইন নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বডিগার্ড লাইনসের জমিও রেলকে দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানানো হয়েছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এদের ঔদ্ধত্য দেখে আমি অবাক হয়ে যাই! হাত দিচ্ছে কোথায়? হাত দিচ্ছে দক্ষিণেশ্বরে! ক’দিন বাদে বলবে কালীঘাটটা দিয়ে দাও! শুনব না। যদি আমাকে বলে নাখোদা মসজিদ ভেঙে দাও আমি থোড়াই শুনব? এগুলো আমি মানতে বাধ্য নই। মানব না। যদি ওদের কোনও রকম জট হয় সেই জট আমি দূর করব। দরকারে আমার সঙ্গে বসুন। আমি অন্য রুট দেখিয়ে দেব। রুট বদলাতে সাহায্য করব। এমন আগেও অনেক করেছি।আমি দীর্ঘদিন রেল মন্ত্রক সামলেছি, কোনও সমস্যা হলে কী ভাবে তার সমাধান করতে হয়, তা আমি জানি।তবে শুধু ম্যাপ নিয়ে বসলে হবে না। সরজমিনে সার্ভে করতে হবে। তার পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’
আরও পড়ুন-মিলবে আইনি পরামর্শ ও অন্যান্য পরিষেবা, শ্রম দফতরের উদ্যোগে শুরু শ্রমিক মেলা
মমতা জানান, ৮-১০ মিটিং করে, কোর্টে কেস জিতে। হকার, সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে, জ্যাম জট ক্লিয়ার করার জন্য স্কাই ওয়াক করেছিলাম। কেন্দ্রের মোদি সরকারকে ঠুকে মুখ্যমন্ত্রীর বলেন, ধর্মস্থান নিয়ে যারা বড় বড় কথা বলে, এদিন দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের স্কাইওয়াক ভাঙতে চাইছে!
মমতা মনে করিয়ে দেন, ‘‘আমি দীর্ঘদিন রেল মন্ত্রক সামলেছি, কোনও সমস্যা হলে কী ভাবে তার সমাধান করতে হয়, তা আমি জানি। বাংলায় মেট্রো জোন আমি তৈরি করেছিলাম। দিল্লির মেট্রোর সমস্যা আমি দূর করেছিলাম। আমি না থাকলে দিল্লি মেট্রোই হত না। জট ছিল। আমি ডেকে সমাধান করেছিলাম।’’
আরও পড়ুন-মিলবে আইনি পরামর্শ ও অন্যান্য পরিষেবা, শ্রম দফতরের উদ্যোগে শুরু শ্রমিক মেলা
বডিগার্ড লাইন নিয়ে মমতা জানান, রেড রোডের উপর সেনাবাহিনীর অনেক জায়গা। ওটা ওদের কাজে লাগছে না। সেই জায়গা নেওয়া হোক। সমস্যার সমাধানে তিনি সব রকম সাহায্য করবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, জট হলে আমার সঙ্গে মিটিংয়ে বসুন। ম্য়াপ নিয়ে বসলে হবে না, ফিজিক্যাল সার্ভে করতে হবে। তার পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।