প্রতিবেদন : অবশেষে ট্রফির খরা কাটল ইস্টবেঙ্গলের। মহানদীর তীরে জ্বলল মশাল। ২০১২ সালে ফেডারেশন কাপ জয়ের এক যুগ পর সর্বভারতীয় ট্রফি জিতল লাল-হলুদ। পিছিয়ে পড়েও ভুবনেশ্বরে ১২০ মিনিটের উত্তেজক লড়াইয়ে সুপার কাপ ফাইনালে ওড়িশা এফসি-কে ৩-২ গোলে হারিয়ে কলিঙ্গ সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল। দিয়েগো মরিসিওর গোলে ওড়িশা এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নন্দকুমার ও সাউল ক্রেসপোর পেনাল্টি থেকে করা গোলে এগিয়ে থাকে ইস্টবেঙ্গল। সংযুক্ত সময়ের শেষ মিনিটে আহমেদ জাহুর গোলে নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ অমীমাংসিত থাকে। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ে ক্লেটন সিলভার গোলে বাজিমাত করে লাল-হলুদ। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ইস্টবেঙ্গলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, হাজার প্রতিবন্ধকতা দূর করে এই জয় শুধু ইস্টবেঙ্গলের নয়, গোটা বাংলার।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
দীর্ঘ ব্যর্থতা কাটিয়ে স্প্যানিশ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের কোচিংয়ে ফের স্বমহিমায় মশালবাহিনী। কলকাতা থেকে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরিয়েছিলেন প্রচুর সমর্থক। প্রিয় দলের ট্রফি জয়ে লাল-হলুদ সমর্থকদের চোখে আনন্দাশ্রু। তাঁদের কাছে মসিহা শুধু ফুটবলাররা নন, কোচ কার্লেসই। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য নিয়ে খেলার চেষ্টা করে ইস্টবেঙ্গল। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে খেলা জমে ওঠে। তবে ইস্টবেঙ্গলের দাপট বেশি থাকে। কিন্তু গোলের সুযোগ নষ্ট করে তারাও। ক্লেটনের কর্নার থেকে জেভিয়ার সিভেরিওর হেড অসাধারণ দক্ষতায় বাঁচান ওড়িশার গোলরক্ষক। ৩৯ মিনিটে গোল করে ওড়িশাকে এগিয়ে দেন ছন্দে থাকা ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার মরিসিও। পিছিয়ে পড়ে গোলশোধের মরিয়া চেষ্টা করলেও ০-১ পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নাওরেম মহেশ ও লালচুংনুঙ্গাকে নামিয়ে দেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। ৫২ মিনিটে মহেশেরই দুরন্ত পাস থেকে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে সমতায় ফেরান নন্দকুমার। পুরনো দলের বিরুদ্ধে গোল করে উৎসব করেননি তিনি।
আরও পড়ুন-কর্ণাটকে আম্বেদকরের প্রতিকৃতি নিয়ে অর্ধ.নগ্ন হয়ে কুচকাওয়াজে ছাত্র
ম্যাচের রাশ এরপর থাকে ইস্টবেঙ্গলের হাতেই। ৬১ মিনিটে বোরহাকে বক্সে ফাউল করেন মোর্তাদা ফল। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দিলে গোল করতে ভুল করেননি ক্রেসপো। ৬৯ মিনিটে বোরহাকে কনুই মেরে লাল কার্ড দেখেন মোর্তাদা। ১০ জনের ওড়িশার বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের দাপট অব্যাহত থাকে। ক্লান্ত নন্দকে তুলে ছটফটে বিষ্ণুকে নামান কুয়াদ্রাত। কিন্তু পরপর দু’টি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন বিষ্ণু। তাঁকে তুলে নিয়ে টুর্নামেন্টে নজরকাড়া তরুণ বাঙালি উইঙ্গার সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ। কিন্তু গোলের ব্যবধান বাড়েনি লাল-হলুদের। উল্টে ম্যাচের সংযুক্ত সময়ের শেষ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে খেলায় সমতা ফেরায় ওড়িশা। মরিসিওকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক প্রভসুখন সিং গিল। পেনাল্টি থেকে গোল করেন জাহু।
আরও পড়ুন-টেনকাসিতে লরির সঙ্গে গাড়ির সং.ঘর্ষে নিহত ৬ যাত্রী
অতিরিক্ত সময়ে সৌভিক চক্রবর্তীর শট পোস্টে লেগে না ফিরলে ইস্টবেঙ্গল আরও একবার এগিয়ে যায়। এরপরই লাল কার্ড দেখেন সৌভিক। ১০ জন হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলও। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে বিপক্ষ রক্ষণের ভুলে গোল করে লাল-হলুদে মশাল জ্বালান সেই ক্লেটন।