প্রতিবেদন : নিজের কথা নিজেই রাখতে পারলেন না! রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতার কানাকড়িও আর অবশিষ্ট নেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের। বিজেপির ট্র্যাপিজের খেলায় পুতুল তিনি। এই নিয়ে নবমবার নানা জোটের শরিক হয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন, মাত্র দুবছরেই আলাদা আলাদা জোটে দু’বার শপথ। রবিবার প্রথমে মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে পদত্যাগ করে বিকেলে এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়ে ভারতীয় রাজনীতির আয়ারাম-গয়ারাম সংস্কৃতির নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন ‘নীতিহীন’ নীতীশ কুমার। আর ইন্ডিয়া জোটের ক্ষতি করতে নীতীশকে কার্যত পুতুল হিসাবে ব্যবহার করল নরেন্দ্র মোদির দল। মুখে নৈতিকতার বুলি কপচানো ভারতীয় জনতা পার্টির রাজনৈতিক দৈন্য বেআব্রু হয়ে গেল নীতীশ-বরণে।
আরও পড়ুন-পেনিং ইনিংসে শাহরুখকে টেক্কা দিলেন ভিকি কৌশল!
কংগ্রেস এবং আরজেডি-র সঙ্গে মহাগঠবন্ধন করে ভোটে লড়েও নীতীশ বিহারে সরকার গড়েছিলেন বিজেপির সহায়তায়। তার পর ২০২২ সালে বিজেপিকে ছেড়ে মহাগঠবন্ধনে ফের ফিরে আসেন তিনি। সে সময় ভবিষ্যতে বিজেপি-র হাত ধরার সম্ভাবনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নীতীশ বলেছিলেন, “মেরা জান কবুল হ্যায়, লেকিন উনকে সাথ জানা হাম কভি কবুল নেহি হ্যায়।” শিবির বদল কোন পর্যায়ে যেতে পারে তা জেডিইউ প্রধানকে দেখে গত কয়েক বছরে বুঝে গিয়েছে বিহারের জনতা। ২০২২ সালে এনডিএ ছেড়ে কংগ্রেস এবং আরজেডি-র সঙ্গে জোট করেন তিনি। এরপর জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট গড়তেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। এমনকী ইন্ডিয়া জোটের প্রথম বৈঠক হয়েছিল পাটনাতেই। আয়োজক ছিলেন নীতীশ-লালু। অথচ লোকসভা ভোটের মুখে নীতিহীন নীতীশ কংগ্রেসের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ফের বিজেপির হাত ধরলেন! কিন্তু শেষবার যখন এনডিএ ছেড়েছিলেন তখন জীবনে আর কোনওদিন বিজেপির হাত ধরবেন না বলে জানিয়েছিলেন সাংবাদিকদের। রবিবার এনডিএ শিবিরে ফেরার পর নীতীশের সেই সব পুরনো ভিডিয়ো ফের ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। তা পোস্ট করে নীতীশের সমালোচনায় সরব সব মহল।
আরও পড়ুন-‘আত্মীয়তায় সীমাবদ্ধ’, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জামাই সম্পর্কে মন্তব্য মূর্তির
বিহারের মানুষও পাল্টিবাজ বলে দাগিয়ে দিচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। মরে গেলেও কখনও বিজেপির হাত ধরবেন না বলে জানিয়েছিলেন ২০২২ সালের অগস্ট মাসে। আর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতেই নিজের বলা কথাই বেমালুম গিলে ফেললেন নীতীশ কুমার।