প্রতিবেদন : জন্ম থেকে শরীরের ৮০ শতাংশই অকেজো অভীককুমার দে এবং অনীককুমার দে-র। ওরা যমজ দুই ভাই। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাদের হারাতে পারেনি। পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় দিচ্ছে তারা। হাঁটতে পারে না, তাই মা-বাবার কোলে চেপেই মাধ্যমিক দিতে যাচ্ছে তারা। প্রতিবন্ধকতা জয় করে ওরা শিক্ষক হতে চায়। যমজ সন্তানের এই অসম লড়াইয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেন মা-বাবা পাঁশকুড়ার সাত নম্বর ওয়ার্ডের হেমন্ত দে এবং পিউ দে।
আরও পড়ুন-সাফল্যের শিখরে আর এক টুয়েলভথ ফেল, জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার
সন্তানদের বয়স যখন মাত্র ২ বছর, তখনই ধরা পড়ে ওদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি। শুরু হয় চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপি। তেমন উন্নতি হয়নি। অভীক দাঁড়াতে পারে না। অনীক অন্যের সাহায্য নিয়ে দাঁড়াতে পারলেও ঠিকভাবে হাঁটতে পারে না। হাতেও রয়েছে সমস্যা। তা সত্ত্বেও বাবা-মা হাল ছাড়েন না। ছোট্ট ব্যবসা ছিল হেমন্তের। সংসার ও ছেলেদের ফিজিওথেরাপির খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। মধুসূদনবাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরে ২০১৮ সালে পাঁশকুড়া ব্রাডলি বার্ট হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয় অনীক ও অভীক। ছেলেদের স্কুলে নিয়ে যেতে ব্যবসা ছেড়ে টোটো কেনেন হেমন্ত। টোটোয় করে তিন কিলোমিটার চালিয়ে ছেলেদের স্কুলে নিয়ে যেতেন। সঙ্গে যেতেন স্ত্রী। দুই ছেলেকে দু’জনে কোলে করে তিনতলায় ক্লাসরুমে পৌঁছে দিতেন। ক্লাসরুমের বাইরে অপেক্ষা করতেন মা পিউ। বাথরুমে যেতে হলে মাকেই যে কোলে করে নিয়ে যেতে হত।