ভারতের জেলগুলিতে উপচে পড়া বন্দিদের সংখ্যা এবং পরিবেশ জীবনযাপনের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এই পরিস্থিতির সমাধানও জটিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্টে এই তথ্য সামনে এসেছে। এতে দেখা যাচ্ছে গোটা দেশেই জেল ও সেখানে বন্দি রাখার জায়গার তুলনায় ঢের বেশি বন্দিকে থাকতে হচ্ছে। জেলগুলির ধারণক্ষমতার চেয়ে বন্দির সংখ্যা অস্বাভাবিক বেশি। মঙ্গলবার দেশের জেলগুলির এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি আরও একবার মেনে নিলেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্র। আর এই সমস্যা সমাধানে নিজেদের গা বাঁচাতে সব দায়দায়িত্ব রাজ্যগুলির দিকে ঠেলে দিতে চাইছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্যেই সেই অভিসন্ধি স্পষ্ট।
আরও পড়ুন- মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ হোক, দরকার ন্যায়বিচার : সংসদে সরব কল্যাণ
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার সংসদে মন্ত্রী অজয় মিশ্র জানিয়েছেন, ভারতে ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ২৬৬ জন বন্দি রাখার সর্বমোট জায়গা রয়েছে। অথচ সেখানে গোটা দেশে মোট বন্দির সংখ্যা ৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ২২০ জন। অর্থাৎ জায়গার তুলনায় বন্দির সংখ্যা ১৩১ শতাংশ বেশি। এই সংখ্যায় সামঞ্জস্য আনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে ব্যবস্থা নিয়েছে সে বিষয়ে তৃণমূল সাংসদের প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী। তাঁর দাবি, বিচারাধীন বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য জামিনের পথ খোলা রয়েছে ভারতে। কোনও বন্দি তাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ সাজার অর্ধেক বিচারাধীন হিসাবে জেলে থাকলে তিনি জামিন পেতে পারেন।
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার অনলাইনে জামিন পাওয়ার সব ধরনের সম্ভাবনার পথ তুলে ধরে সবার জন্য তা উন্মুক্ত করে রেখেছে বলেও দাবি মন্ত্রীর। যদিও সেই সব পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিচারাধীন বন্দিদের আইনজীবীরা জামিনের জন্য লড়াই করলেই যে জামিন মঞ্জুর হবে বিষয়টা আদৌ তা নয়। স্বাভাবিক নিয়মে ফলাফল যে জামিনের পক্ষে যায় না তা ভারতের জেলগুলির উপচে পড়া অবস্থা দেখেই বোঝা সম্ভব। এমনকী কেন্দ্রের দায় এড়িয়ে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানিয়েছেন, এধরনের পরিস্থিতিতে ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী কারাগার ও সেখানকার বিচারাধীন বন্দির সব দায়িত্ব রাজ্যগুলির। কারাগারগুলির প্রশাসন ও পরিচালনা সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারেরই দায়িত্ব। অর্থাৎ সমস্যা মেনে নিয়েও সমাধানের প্রশ্নে দায় নিতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার।