প্রতিবেদন : এক দেশ এক ভোট মানবে না তৃণমূল কংগ্রেস। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার একথা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তৃণমূল সংসদরা। এদিন দিল্লিতে যোধপুর অফিসার হোস্টেলে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে গঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সাথে বৈঠকে তৃণমূলের দুই সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এক দেশ এক নির্বাচন পদ্ধতিকে সমর্থন করার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ এর মাধ্যমে খুব সুচারুভাবে দেশকে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে মোদি সরকার। এক দেশ এক নির্বাচনের ধারণা দেশের সংবিধানের পরিপন্থী, আর সেই কারণেই তৃণমূল কংগ্রেস বৈঠকে উপস্থিত হয়ে আপত্তি জানিয়েছে এই পদ্ধতির।
আরও পড়ুন-বুধবার হাওড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান
মঙ্গলবার প্রায় এক ঘণ্টার এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভারতবর্ষের মতো এত বড় দেশে যেখানে ২৯টা রাজ্য, ৮ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, ১৪০ কোটির উপরে মানুষ। সেখানে এই সমস্ত করার আগে সবথেকে যেটা জরুরি তা হল, দলত্যাগ বিরোধী আইনটাকে আরও শক্তিশালী করা হোক। কারণ ১৯৫২ সাল থেকে যখন দেশে নির্বাচন হয়, তখন এত দলও ছিল না আর এত দল ভাঙার সুযোগও ছিল না। কিন্তু এখন এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, যেকোনও সময় যেকোনও দল ভাঙিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যেতে পারে। সুতরাং এমত অবস্থায় ভারতবর্ষে যুক্তরাষ্ট্র কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রাখতে দেশের সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যাতে বিপন্ন না হয় এ-ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে। সুদীপের আশঙ্কা, এক দেশ এক নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। আর এরই গোপন অ্যাজেন্ডা হিসেবে এই একনায়কতান্ত্রিক সিদ্ধান্তকে একটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যম দিয়ে নিয়ে গিয়ে পরবর্তীকালে তার প্রকৃত রূপ দেওয়া হবে। তাই কোনও অবস্থাতেই তৃণমূল একে সমর্থন করে না। তাঁর সংযোজন, এদিন বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বেশ কিছু নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা শোনার পর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ জানিয়েছেন, সেগুলো সত্যিই প্রশংসনীয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাজেটের জন্য আসতে পারবেন না আগেই জানিয়েছিলেন তবে আমরা খুব খুশি যে আপনারা বেশ কিছু নতুন বিষয় আমাদের সামনে উন্মোচন করলেন। আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে আপনাদের দেওয়া পরামর্শ বিবেচনা করব।
আরও পড়ুন-ভার্চুয়াল উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী, নতুনভাবে সেজে উঠছে শিলিগুড়ি বাস ডিপো
উল্লেখ্য, গত ১১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক দেশ এক নির্বাচনের বিষয়ে ছয় দফা আপত্তি জানিয়ে চার পাতার একটি চিঠি লেখেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কমিটির কাছে। সেখানে তিনি বলেছিলেন, এক দেশ এক নির্বাচন সংবিধানের পরিপন্থী। এই বৈঠকে যোগ দিতে তাঁর দিল্লি আসার কথা থাকলেও ৮ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় রাজ্য বাজেটের জন্য তিনি তা বাতিল করেন।