প্রতিবেদন : বাংলার মানুষকে বঞ্চনার পাশাপাশি গোটা দেশের শ্রমজীবী মানুষের টুঁটি টিপে ধরছে কেন্দ্র। বামেদের মতোই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দিনের পর দিন ধরে বঞ্চনা করছে শ্রমিকদের সঙ্গে। বুধবার ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রেড রোডের ধরনা মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের সর্বনাশা শ্রম কোড নিয়ে গর্জে উঠল আইএনটিটিইউসি। তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের হুঙ্কার, বাংলার মাটিতে কেন্দ্রের কালাকানুন চলবে না।
আরও পড়ুন-মাথা নত করবে না বাংলা, হাওড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই চলবে
নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুসারে এদিন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে তৃণমূলের ধরনা মঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি এবং সরকারি কর্মীদের সংগঠন কর্মচারী ফেডারেশনের নেতৃত্ব ও কর্মীরা। আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের ধরনা মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে উঠল বাংলার খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের হুঙ্কার। মঞ্চ থেকে ঋতব্রত বলেন, বাংলার মাটিতে কেন্দ্রের সর্বনাশা কালাকানুন চলবে না। দিল্লির বিজেপি সরকারকে না হারাতে পারলে দেশের মানুষ বাঁচবে না, শ্রমজীবী মানুষ বাঁচবে না। তাই এই লড়াই দেশ বাঁচানোর লড়াই। এদিন ৩৪ বছরের বাম রাজত্বে শ্রমিকদের উপর অত্যাচার নিয়ে একযোগে সরব হন রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও মানস ভুঁইয়া। ধরনা মঞ্চ থেকে মলয় ঘটক বলেন, দিল্লির সরকার শ্রম আইন পাল্টে দিচ্ছে, শ্রমিকদের আইনি অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ-রাজ্যে শ্রম কোড কার্যকরী করতে দেননি। বাম আমলে চা-বাগান শ্রমিকদের বছরে মাইনে বাড়ত মাত্র ৩-৪ টাকা। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিকদের মাইনে বহুগুণ বাড়িয়েছেন। মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ৩৪ বছরে বামেরা শ্রমজীবী মানুষকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষের টুঁটি টিপে ধরতে চায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই উন্নয়নের পথ দেখিয়েছেন। ভারতে এখন শিল্পের কেন্দ্রস্থল বাংলা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পেও বাংলা দেশে প্রথম। তিনি আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যত মারবে, বাংলার মাটিতে লাখ লাখ মমতা তৈরি হবে। গ্রামে গ্রামে দমকল কেন্দ্র করে দিচ্ছেন তিনি, কোথায় পাবেন এমন মানবিক মুখ্যমন্ত্রী? মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত কেন্দ্রের সরকার। আর এখন শ্রমজীবী মানুষের সমস্ত অধিকারকে ছিন্নভিন্ন করার জন্য সর্বনাশা আইন এনেছে।
আরও পড়ুন-১৬ ফেব্রুয়ারি সাংগঠনিক ভার্চুয়াল বৈঠক অভিষেকের
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, গোটা দেশে গণতন্ত্র আজ ভূলুণ্ঠিত। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জাত-ধর্ম-বর্ণ কিংবা রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে তৃণমূলস্তরের মানুষের কাছে উন্নয়নের জোয়ার পৌঁছে দিয়েছেন। ধরনা কর্মসূচির ষষ্ঠদিনে মঞ্চে ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, সাংসদ দোলা সেন, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, স্বপন দেবনাথ, বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, শ্রীকান্ত মাহাতো, নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, স্বপন সমাদ্দার, জয়প্রকাশ মজুমদার, বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতাপ নায়েক প্রমুখ। এদিন ধরনা কর্মসূচিতে একটি ছোট পরিবর্তন হয়েছে। হুগলির পরিবর্তে ১২ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচির দায়িত্বে থাকবে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান। ১৩ ফেব্রুয়ারি ধরনায় বসবে হুগলি জেলা নেতৃত্ব। আজ, বৃহস্পতিবার ধরনায় তৃণমূল সংখ্যালঘু সেল৷