প্রতিবেদন : আজ, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় পেশ হবে রাজ্য বাজেট। পেশ করবেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সব বিধায়ক ও মন্ত্রীরা। এ-বছর লোকসভা নির্বাচনের কারণে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। লোকসভা নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠন হলে সেই নতুন সরকার ফের বাজেট পেশ করবে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছেও আবার বাজেট পেশ করার সুযোগ থাকছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণামতো একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের মজুরির জোগান দিতে রাজ্য বাজেটেই অর্থের সংস্থান করছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি আবাস প্রকল্পের বঞ্চিতদের মাথার ছাদের ব্যবস্থা করারও সংস্থান থাকছে বাজেটে।
আরও পড়ুন-কালাকানুন মানব না, ধরনায় শপথ শ্রমিকদের, ধরনায় আজ সংখ্যালঘু সেল
কেন্দ্রের থেকে বাংলার প্রাপ্য ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তার মধ্যে যেমন ১০০ দিনের মজুরির টাকা আছে তেমনই আছে আবাস যোজনার টাকাও। আছে ১০০ দিনের কাজের উপাদান বাবদ বকেয়া, তেমনই আছে প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনার টাকাও। বাকি আছে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকা। বকেয়ার তালিকায় আছে মিড ডে মিলের টাকাও। এই সব টাকা চেয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রকে ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এমনকী দিল্লিতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠকও করেছেন মমতা। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। বাংলার মানুষ তাঁদের হকের টাকা পাননি। এই অবস্থায় গতকালই কলকাতার রেড রোডের ধরনা মঞ্চ থেকেই মমতা ঘোষণা করে দিয়েছেন, ১০০ দিনের কাজ করা বাংলার ২১ লক্ষ শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য টাকা ২১ ফেব্রুয়ারি পৌঁছে দেবে তাঁর সরকার। সেই সূত্রেই জানা গিয়েছে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের যে বাজেট পেশ হতে চলেছে সেখানেই এই ১০০ দিনের কাজের মজুরি বাবদ টাকার সংস্থান থাকছে।
১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের থেকে বাংলার বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মজুরি বাবদ বকেয়ার পরিমাণ ৩৭৩২ কোটি টাকা। আর উপাদান বাবদ বকেয়া ৩১৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট বকেয়ার পরিমাণ ৬৯১৩ কোটি। মজুরির টাকা সরাসরি মজদুরদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকার কথা। উপাদানের টাকা ঢোকার কথা গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র মজুরির টাকা মজদুরদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠাবার কথা বলেছেন। সেই টাকা রাজ্য বাজেটের মধ্যে রাখা থাকছে। ২১ লক্ষ মজদুর ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সেই টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবেন। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি এখনই উপাদানের টাকা পাবে না। আবার আবাসের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত থাকলেও বাড়ি পাননি ১১ লক্ষ বাংলার মানুষ। তাঁদের ক্ষেত্রে বকেয়ার মোট পরিমাণ ৬৬০০ কোটিরও বেশি। এই টাকাও রাজ্যের তরফে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এক দফাতেই তা দেওয়া হবে না। কয়েক কিস্তিতে তা মেটানো হবে। রাজ্য বাজেটেই প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হবে বলে খবর। এদিকে রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া কেন এবারের অধিবেশনের সূচনা কেন তার ব্যখ্যা দিয়েছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়াটা কোনও বেআইনি বিষয় নয়। এটা সংবিধানবহির্ভূত নয়, সংসদীয় রীতিবহির্ভূতও নয়। ১৯৬২ সালের সংসদে একই ভাবে আগের অধিবেশন মুলতুবি করা হয়েছিল। সেবার রাষ্ট্রপতির ভাষণ ছাড়াই সংসদের বাজেট অধিবেশন বসেছিল। ২০০৪ সালেও একই ঘটনা ঘটেছিল। তিনি আরও বলেন, যে অধিবেশন এখন চলছে, তা গত বছর শীতকালীন অধিবেশনেরই ধারাবাহিকতা। এটি এই বছরের প্রথম অধিবেশন নয়। কারণ, গত অধিবেশনেরই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এই অধিবেশনটি হচ্ছে । তাই রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে এই বাজেট অধিবেশন শুরু করতে হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল না। ফলে আমি এই অধিবেশন শুরুর আহ্বান জানিয়েছি।