সু ব্র ত মু খো পা ধ্যা য়
১৯৮০। ইন্দিরা গান্ধী তখন ক্ষমতায় নেই। সামনে নির্বাচন। প্রচারে সারা দেশ ঘুরছেন তিনি। এলেন পশ্চিমবঙ্গে। দিন দশ-এগারো চষে ফেললেন বাংলার মাটি। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। গোটা সময়টা সঙ্গে রেখেছিলেন আমাকে। নিজের ছেলের মতো দেখেছেন। কখনও ভুলতে পারব না সেই এগারোটা দিন।
শুনলাম হেলিকপ্টারে ঘুরবেন ইন্দিরাজি। কানপুর হেলিপ্যাড থেকে সেই কপ্টারের যাত্রা শুরু। তবে আকাশপথে নয়, হেলিকপ্টার আসবে লরিতে। শুনেই তো আমি অবাক, লরিতে হেলিকপ্টার! সে আবার কী! নিজে দেখার পর সত্যিই চক্ষু চড়কগাছ। বিচিত্র এক ছোট্ট কপ্টার। লরিতেই এল। লোকে যেভাবে নামাল, বুঝলাম হাল্কা। মাত্র দুটি আসন। তার মধ্যে একটা চালকের। আমি অবাক। এই কপ্টারে কীভাবে যাবেন ইন্দিরাজি। এতো খেলনা। প্রাণ হাতে বসে থাকার অবস্থা হবে।
আরও পড়ুন-ত্রিপুরার ভোটে সন্ত্রাসই ভরসা বিজেপির
তাতেই হাসিমুখে উঠলেন তিনি। এবং বললেন, ‘‘কাম অন সুব্রত।’’ আমি তো প্রায় নার্ভাস। বললাম, ‘‘উঠব কোথায়! দুটো আসন। একটা পাইলটের। একটা আপনার।’’ ইন্দিরাজি জোর করে আমাকে তুললেন। পাইলট বসল তার মতো। অন্যটায় ইন্দিরাজি আর আমি। একটাই সিট-বেল্ট। উনি সেটাকেই টেনে আমাদের দু’জনকে বাঁধলেন। আমি তো প্রবল অস্বস্তিতে।
উড়ল কপ্টার। বেশি উচ্চতা নয়। আকাশ থেকে লোকের বাড়ির উঠোনের মুরগিও প্রায় দেখা যাচ্ছে। আমরা যাচ্ছি বহরমপুরের দিকে। দেখলাম কপ্টারে কোনও স্বয়ংক্রিয় দিক-নির্দেশক নেই। প্রথমে শুরু হল নদী দেখে দেখে যাওয়া। ইন্দিরাজি মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসা করছেন, এটা কোন নদী? ওটার নাম কী?
ওপর থেকে আমি তার কোনওটাকেই বুঝতে পারছি না। প্রায় পৃথিবীর সব নদীর নাম বলে চলেছি। শেষমেশ সব গুলিয়ে ফেলে বললাম, রেল লাইনের ওপর দিয়ে চলুন। তাহলে ঠিক চিনতে পারব।
ইন্দিরাজির সঙ্গে খেলনা কপ্টারে ওভাবে ঘোরা ভাবা যায়! এক সিটে, এক সিট-বেল্টে। ছেলের মতো না ভাবলে কোনও মহিলা ওভাবে নিতে পারেন না। সেই ট্যুরেরই নানা টুকরো স্মৃতি এখনও চোখে ভাসে।
খেলনা কপ্টারে সন্ধের পর আকাশে থাকার প্রশ্নই নেই। বিপজ্জনক। তখন যাচ্ছি বর্ধমান। তুহীন সামন্ত, তুহীনদাকে বলেছিলাম আকাশে কপ্টার দেখলেই নিচে ধোঁয়া দেবে। নেমে পড়ব। সন্ধে হয়ে গেছে। কোথাও আগুন, ধোঁয়া নেই। আঁধার নামছে। নিচটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। ইন্দিরাজি ভয়ানক ব্যস্ত। বলছেন, যেখানে হোক নামাও। আমি বলছি, নিচে তো পুলিশ ব্যারাক। ইন্দিরাজি বলছেন, ওসব জানি না। নামাও। যাই হোক, কোনওমতে লোকজনের ভিড় দেখে জায়গা বুঝে নামানো হল। সেযাত্রা রক্ষা। পরে শুনলাম তুহীনদারা আগেই ধোঁয়া-টোঁয়া শেষ করে রেখেছে।
মালদা থেকে ফিরছি। সেও ওই কপ্টারে। খাবারের প্যাকেট দিয়ে ইন্দিরাজি বলেলেন, খাও। এখন খাই কী করে? ঠাসাঠাসি করে বসা। খেতে হাত তুললেই কনুই লাগছে ওঁর গায়ে। কোনওভাবে নমো নমো করে দুটো নাকেমুখে গুঁজে বললাম, খাওয়া শেষ। উনি খেলেন ফিশ ফ্রাই। তারপর কেলেঙ্কারিটা হল কৃষ্ণনগরে এসে। কপ্টারে তেল শেষ। তখন কেন্দ্রে চরণ সিং সরকার। কেন্দ্রের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী সৌগত রায়। আমি সৌগতকে ফোনে ধরলাম। বললাম, তেলের ব্যবস্থা করতে। ও করতে পারল না। অতঃপর বাকি পথ গাড়িতে।
আরও পড়ুন-এশিয়া ও ইউরোপের ৫৩টি দেশকে করোনা নিয়ে সতর্ক করল হু
সফর শেষ। কলাইকুণ্ডা থেকে ইন্দিরাজিকে প্লেনে তুলে দিয়ে বাড়ি ফিরেছি। ক্লান্ত শরীর। মাথায় ঘুরছে দশ-এগারো দিনের ট্যুর। অভিনব অভিজ্ঞতা। কী আন্তরিকতা। নিজে উনি খাচ্ছেন দুধ। আমাকে বিরিয়ানির ঠ্যাং খেতে বলছেন। শেষে যখন বিদায় নিচ্ছেন, বাচ্চাদের আদর করার মতো আমার চুল ঘেঁটে দিলেন। বললেন, আমরা জিতলে তুমি একবার দিল্লি চলে এসো। এসব মাথায় ঘুরতে ঘুরতেই ঘুম। হঠাৎ ভোর রাতে ফোনের শব্দ। আমার স্ত্রী ছন্দবাণী বলল, দেখো এক মহিলার ফোন। গলাটা ইন্দিরাজির মতো। আমি বললাম, দূর! তা কী করে হবে! ওঁকে তো প্লেনে তুলে দিয়ে এলাম। অন্য কেউ বজ্জাতি করছে। যাই হোক ফোনটা ধরলাম। সত্যিই ইন্দিরাজি। দমদম থেকে বলছেন। কুয়াশা বেশি হওয়ায় প্লেন ঘুরে এসে দমদমেই নেমেছে। অতঃপর ছুটলাম আমি আর ছন্দবাণী। গিয়ে দেখি চরম দুর্দশায় ইন্দিরাজি। হাতমুখ ধোয়ার গরম জলও কেউ দেয়নি। ওখানকার কর্মীদের একপ্রস্থ গালাগালি দিলাম। তারপর দু’বালতি গরম জলের ব্যবস্থা হল। দুঃখ করে ইন্দিরাজি বললেন, ভোটার হওয়ার পর থেকে এই প্রথম ভোট দিতে পারলাম না। দিল্লি ফেরা হল না সময়মতো।
যে মহিলার সঙ্গে আমরা এতটা সময় কাটালাম, তার তিন-চারদিন পরেই তিনি প্রধানমন্ত্রী। দুটো মজার ঘটনা মনে পড়ছে। নির্বাচনী প্রচারের সময় লোকের টানাটানিতে আমার একটা আঙুল ভাঙে। সে আঙুল আজও জখম। ইন্দিরাজি নিশ্চয়ই খেয়াল রেখেছিলেন। দিল্লি থেকে হঠাৎ স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার ফোন। এখনই আসুন। প্রধানমন্ত্রীর তলব। আমি কী না কী ভেবে পড়িমড়ি করে ছুটলাম। ওই কর্তার সঙ্গে দেখা করলাম। বললেন, পিএমের অর্ডার, আপনার আঙুলের চিকিৎসা করতে হবে। তারপর দেখেশুনে বললেন, কলকাতায় গিয়ে ডাঃ এম এস ঘোষকে দেখান। কলকাতা থেকে দিল্লি ছুটে গিয়ে কলকাতার চিকিৎসককেই দেখানোর উপদেশ নিয়ে আমি ফিরলাম। বললাম, পিএমকে বলবেন সুব্রতর আঙুল ঠিক হয়ে গেছে। পাঠক, ও আঙুল আমার আজও ভাঙা। আংটিও পরতে পারি না।
অন্য ঘটনাটিও দিল্লির। ইন্দিরাজি প্রধানমন্ত্রী। শপথ অনুষ্ঠান মন্ত্রীদের। আমি তখন ওঁর স্নেহধন্য। আমার হাতে গোছা গোছা শপথ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র। পার্ক হোটেলের নিচতলায় বসে আছি বরকতদা, আমি। লোকে কার্ডের জন্য তদ্বির করছে। আমি দিচ্ছি না। এলেন অসমের এক সাংসদ। আমি কার্ড দিলাম না। পরে শপথ অনুষ্ঠানে দেখলাম বরকতদা, প্রণবদার পর ওই লোকটিই স্বরাষ্ট্র-প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন। কী কেলেঙ্কারি!
একটা ব্যক্তি-অভিজ্ঞতার কথা বলি। স্কুল ফাইনালের পর কিছুদিন টেলিফোন অপারেটরের কাজ শিখেছিলাম। পরে যখন কলেজে পড়ি, মনে হল চাকরি করব। হাতখরচের পয়সা দরকার। তখন বঙ্গবাসী কলেজে পড়ি। একজনের সূত্রে একটা চাকরি পেলাম। ব্যবসায়ী শাহু জৈনের বাড়িতে অ্যাসিস্ট্যান্ট অপারেটরের কাজ। আলিপুর পার্ক প্লেসে বাড়ি। আমি কলেজ, চাকরি দুটোই করছি। আমার বাবা গোঁড়া শিক্ষক। পড়তে পড়তে চাকরি করছি বলে একবার ব্যাপক মারলেন বাবা। বললেন, গেট আউট, একদিন বাড়ি ছেড়ে পালালামও। খিদে পেতে চলে আসি। যাইহোক, কলেজে পড়া, রাজনীতি, চাকরি, সব চলছে। জৈনদের বাড়িতে ঊনত্রিশটা ঘর। হিন্দিতে সব বলতে হয়। আপ, তুম, তু— এসব করে কোনওভাবে সামাল দিচ্ছি।
এ সময়ই ভোট। আমি মন্ত্রী হলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একদিন শাহু জৈন মহাকরণে এসে হাজির। আমার মাইনেকড়ি দিতে এসেছেন। আমি তো দারুণ অস্বস্তিতে। যাই হোক, রোজগারের টাকা নিয়ে নিলাম। আরও পরে ওঁর নিউ সেন্ট্রাল জুটের ডিরেক্টরও হয়েছিলাম। এখন ছেড়ে দিয়েছি।
ঘটনাটা কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনকে নিয়ে। আমাদের বাড়িতে সিনেমা দেখা বারণ। বাবার কড়া শাসন। সিনেমা দূরের কথা, শরৎচন্দ্রের বই পড়াও বারণ। একবার পরীক্ষার পর আমি লুকিয়ে ‘সাত পাকে বাঁধা’ দেখতে গেলাম। সুচিত্রাকে দেখে আমি রোমাঞ্চিত। সে কী প্রতিক্রিয়া !
একটা ছবি জোগাড় করলাম সুচিত্রার। ঢুকিয়ে রাখলাম বইয়ের মলাটের ফাঁকে। মাঝে মাঝে দেখি। তখন নিয়মিত পড়াতেন বাবা। একদিন মলাটের ফাঁকে ছবি ধরা পড়ল। বললেন, এটা কী! আমি স্পিকটি নট। বেতের একটা ছড়ির বাঁট থাকত আলমারির ওপর। বছরে দু’একবার নামত। সেদিন নামল। হাত পেতে দাঁড়ালাম। দুই তালুতে বেদম মার।
অনেক পরে সামনাসামনি দেখা, আলাপ সুচিত্রার সঙ্গে। আমি তখন তথ্যমন্ত্রী। গল্প করেছেন। নিজের হাতে খাইয়েছেন। আমি বলেছিলাম, আপনার এই খাওয়ানোটা আমার প্রাপ্য। কারণ আপনার জন্য আমি বেদম মার খেয়েছি। পুরো গল্পটা বললাম।
সুচিত্রা সেই গল্পটা কোনও সাংবাদিককে বলেছিলেন। একটা ফিল্ম ম্যাগাজিনে সেটা বেরোল। সেটা বাঁধিয়ে আমাকেই উপহার পাঠিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন।
জ্যোতি বসুর সঙ্গে আমার সম্পর্ক রাজনৈতিক গণ্ডি অতিক্রম করে ব্যক্তিগত পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। আগে শত্রুতা ছিল। বাগনান, আলিপুরদুয়ারে জ্যোতিবাবুর দুটো সভা বানচাল করে দিয়েছিলাম। দুটো ছাগলের গায়ে ‘জ্যোতি বসু’ এবং ‘হরেকৃষ্ণ কোঙার’ লিখে আমরা সভায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। কারণ, তখন ছাত্র পরিষদ করতাম, বেদম পেটাত পুলিশ। যাইহোক, পরে ক্রমশ আলাপ হল। ঘনিষ্ঠতা। জরুরি অবস্থার সময় আমি তথ্যমন্ত্রী। সিপিএমের ‘গণশক্তি’ যা লিখত, কাটতাম। যেতাম ওদের দফতরে। একবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতাও কাটা হয়েছিল। জ্যোতিবাবু বললেন : দেখো, গণতন্ত্র বলে কিছুই থাকবে না? আমি বললাম, এমন কঠিন সময়ে ওই শক্ত কবিতা ছাপলে না কেটে উপায় থাকছে না।
আশির দশকের গোড়ার দিক। কী একটা কারণে তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়ে সেন্ট্রাল লকআপে গেছি। সারাদিন ওই লালবাজারেই। বিকেলে ছাড়া পেলাম। দারুণ খিদে পেয়েছে। স্ত্রীকে নিয়ে গেলাম পার্ক স্ট্রিটের একটা রেস্টুরেন্টে। দেখি জ্যোতিবাবু নাতনিদের নিয়ে খাচ্ছেন। উনি আমাদের একই টেবিলে বসতে বললেন। আমাকে বললেন, আপনি তো প্রেশারের রোগী। কী যে করেন এসব। আমার স্ত্রীকে বললেন, একটু সামলান না এঁকে। যা শুরু করেছেন। শেষে খাওয়ার পর উনিই বিল দিতে গেলেন। আমি বললাম, সারাদিন লকআপে আপনাদের পয়সায় অনেক খেয়েছি। এখন আর আপনাকে দিতে হবে না।
নানা অদ্ভুত ব্যাপারেও জ্যোতিবাবু আমার অনুরোধ মেনেছেন। এই তো, কিছুদিন আগে বিদেশ থেকে ফিরেই শুনলাম মমতা আলিপুরে ধরনায় বসেছে। ওর দাবি, রাজ্য পুলিশ- প্রশাসনের কোনও পদস্থ কর্তাকে ধরনামঞ্চে এসে কথা বলতে হবে। মমতা অনড়। আমরা নিজেরা ফাঁপরে। শেষে কাউকে কিছু না বলে আমি সোজা জ্যোতিবাবুকে বললাম। উনি বললেন, তা আবার হয় নাকি! আপনি নিজে হলে এসব বলতে পারতেন?
আমি একটু দমে গিয়েও বললাম, যাইহোক, আপনাকে একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। মমতাকে তো চেনেন। দাবি না মিটলে উঠবে না। ও মহানন্দে বসে থাকবে। আপনি আমাদের উদ্ধার করুন। শেষ পর্যন্ত জ্যোতিবাবু ব্যবস্থা করেছিলেন। এক প্রশাসনিক কর্তা ধরনামঞ্চে যেতে মমতা উঠল।
আরও পড়ুন-সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে কাঁদছে ময়দান
আরেকটি ঘটনা। সেটাও মমতার ব্যাপার। দক্ষিণ কলকাতা যুব কংগ্রেসের একটি ছেলের বিষয় নিয়ে মমতা আসে। অদ্ভুত কাণ্ডে জেলে গেছিল সে। কোনও দোষ ছিল না। গন্ডগোলের জেরে গণহত্যায় অভিযুক্ত হয়ে কারাদণ্ড। সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও লাভ হয়নি। মমতা বলল ওকে ছাড়াতেই হবে। আমি দেখলাম আইনি সাধারণ পথে পারব না। তখন চুপচাপ আমি জ্যোতিবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। বললাম, মমতার মাথায় যখন চেপেছে, তখন এটা করেই ছাড়তে হবে। কিন্তু আমি কিছু করতে পারছি না। আপনি আমাকে একটু সাহায্য করুন। উনি বললেন, ছেলেটিকে আবেদন পাঠাতে বলুন। বিষয়টি দেখছি। ছেলেটি সেইমতো রাজ্যপালের কাছে আবেদন পাঠাল। জ্যোতিবাবুর সুপারিশের ভিত্তিতে রাজ্যপাল বিষয়টি খতিয়ে দেখে আবেদন মঞ্জুর করলেন। মুক্তি পেল ছেলেটি।
শেষ ঘটনাটি বলব রসিক জ্যোতি বসুর। প্রাণখোলা হাসি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘটনা। শুনেছি ওঁর কাছ থেকেই। একবার গনিখান চৌধুরী সম্পর্কে বলতে গিয়ে বললেন : “উনি আমার কাছে কিছুদিন আগে এসেছিলেন। কথাবার্তার ফাঁকে বললেন, এবার আমার ভাইকে আমি গুলি করে মারব। আপনি আমায় আটকাবার চেষ্টা করবেন না। গনি বলছেন গুলি করব, আমি দেখছি ওঁর হাতদুটো ভীষণ কাঁপছে। তা আমি তখন বললাম, আরে আপনি গুলি করবেন কী করে? আপনার হাতই তো কাঁপছে।”
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে জ্যোতি বসুর প্লাস পয়েন্ট আছে। মাইনাস পয়েন্টও কম নেই। কিন্তু প্রকাশ্য রাজনীতির বাইরে ওঁর বর্ণময় চরিত্র আমার ভাল লাগে। মনে থেকে যায় টুকরো কিন্তু ভিন্ন স্বাদের ঘটনা। আর সব মিলিয়ে তাই বলি, কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চা সরকারে লালু, গৌড়ার মতো যেসব নেতা আছেন, তাঁদের থেকে ঢের এগিয়ে থাকা জ্যোতিবাবুই হতে পারতেন সেরা প্রধানমন্ত্রী।