সন্দেশখালিতে শিখ আইপিএস আধিকারিককে ‘খালিস্তানি’ বলে আক্রমণ শুভেন্দু বাহিনীর। একজন কর্তব্যরত আধিকারিককে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের এহেন ধর্মীয় আক্রমণের ঘটনায় মঙ্গলবার নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশে। এই ইস্যুতে প্রতিবাদে সরব তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সরব হলেন সদ্য নির্বাচিত তৃণমূলের রাজ্যসভার ৪ সাংসদ সুস্মিতা দেব, সাগরিকা ঘোষ, মমতাবালা ঠাকুর ও নাজিমুল হক। পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মার আচরণের বিরুদ্ধেও সরব হন তৃণমূল (TMC) সাংসদরা।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে শিখ আধিকারিককে বিজেপির ‘খালিস্তানি’ মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হয়ে তৃণমূল সাংসদ নাদিমুল হক বলেন, “যেভাবে একজন শিখ পুলিশ আধিকারিককে বিজেপি নেতা নেত্রীরা খালিস্তানি জঙ্গি বলেছে আমরা তাঁর তীব্র নিন্দা করছি। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করাই এদের(বিজেপি) কাজ। আমাদের দিদি সর্বদা সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দেন। বাংলায় এসে দেখুন বাংলায় এই একতা রয়েছে, বিজেপি চায় সেটা ধ্বংস করতে। এখানকার শান্তি নষ্ট করতে।” পাশাপাশি এই ইস্যুতে সরব হন তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব। তিনি বলেন, “একটি ভিডিওতে দেখলাম বিজেপির বিধায়করা সন্দেশখালি গেছেন। সেখানে একজন শিখ ধর্মাবলম্বী পুলিশ আধিকারিককে ‘খালিস্তানি’ জঙ্গি বলে আক্রমণ করেছেন। এতে প্রমাণ হয়ে গেছে যে বিজেপি একটি ধর্মীয় দল, বিভাজনের দল। ওদের আসল চরিত্র একবার নয় বারবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। বাংলা এমন একটি রাজ্য যেখানে বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষ এসে বাস করেন। আমরা একতায় বিশ্বাসী। এবং প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি নাড্ডাজিকে বলতে চাই, “ওনাদের ক্ষমা চাওয়া উচিৎ যেভাবে একজন বিশেষ ধর্মের মানুষকে এভাবে খালিস্তানি জঙ্গি বলে অপমান করা হল তার জন্য।”
আরও পড়ুন – উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরেই ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
এছাড়াও সদ্য সন্দেশখালি ঘুরে গিয়ে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মা। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হতে দেখা যায় তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষকে। একটি স্বশাসিত সংস্থার প্রধানের পদে থেকে রেখা শর্মার রাজনৈতিক মুখপাত্রের মতো আচরণের বিরোধিতা করে সাগরিকা বলেন, “যেখানে মাসের পর মাস হিংসা চলছে। মহিলাদের নগ্ন করে রাস্তায় ঘরানো হচ্ছে সেই মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন হবে না! অথচ যেখানে পুলিশ তদন্ত করছে। গ্রামে গ্রামে ঘুরে ডিআইজি র্যা ঙ্কের মহিলা পুলিশ আধিকারিকরা অভিযোগ নিচ্ছেন ও মানুষকে ভরসা দিচ্ছেন, সমস্ত রকমের অভিযোগ নেওয়ার জন্য ক্যাম্প বসানো হয়েছে। সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন করতে চান উনি। এমন রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের জন্য রেখা শর্মার লজ্জা হওয়া উচিৎ।”
একইসঙ্গে সুস্মিতা দেব বলেন, “রেখা শর্মা হলেন একজন ট্যুরিস্ট। উনি ইচ্ছে হলে বাংলায় আসেন, ইচ্ছে না হলে মধ্যপ্রদেশে যান না। ইচ্ছে না থাকায় ৪০ দিন পরে মণিপুরে যান, উনি বিজেপির যেখানে সুবিধা করা যায় শুধু সেখানেই যান। উনি বিজেপির একটি পুতুল। ওনার অতীত দেখবেন বিজেপির কোন কোন পদে উনি ছিলেন। আমি চ্যালেঞ্জ করছি বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের জন্য যা করেছেন তাঁর এক শতাংশ বিজেপি করে দেখাক।”