প্রতিবেদন : সেই এক রোগ। এগিয়ে থেকেও হার। আইএসএলের ইতিহাসে টানা দুটো ম্যাচ এখনও জেতা হল না ইস্টবেঙ্গলের। জামশেদপুর এফসি-কে সুপার কাপ সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। সেই খালিদ জামিলের দল পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখল। একইসঙ্গে কোচ খালিদ সেই হারের মধুর প্রতিশোধও নিলেন পুরনো দলের বিরুদ্ধে। ইস্টবেঙ্গলকে ২-১ গোলে হারিয়ে আইএসএলের প্রথম ছয়ে পৌঁছে গেল জামশেদপুর। এদিনের হারে প্লে-অফের দৌড়ে থাকার লড়াই কঠিন হল লাল-হলুদের। ১৫ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ৮ নম্বরেই থাকল ইস্টবেঙ্গল। ১৭ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে ৬ নম্বরে খালিদ ব্রিগেড।
আরও পড়ুন-নিত্যানন্দ ৫৫১ জন্মভিটায় দেশবিদেশের ২৫ হাজার ভক্ত
গোটা ম্যাচে জামশেদপুর ভাল খেললেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারত ইস্টবেঙ্গল। খেলার গতির বিরুদ্ধে নন্দকুমারের গোলে এগিয়েও গিয়েছিল তারা। কিন্তু জাপানি তাচিকাওয়া ও ফরাসি মিডফিল্ডার জেরেমি মানজোরো ইস্টবেঙ্গলের আশায় জল ঢেলে দেন। সংযুক্ত সময়ে মানজোরোর ফ্রি-কিক জালে জড়াতেই ইস্টবেঙ্গলের হার নিশ্চিত হয়ে যায়। ম্যাচের সেরাও হলেন তিনি।
তবে ইস্টবেঙ্গলকে স্বস্তি দিতে পারে নতুন বিদেশি ডিফেন্ডার আলেকজান্ডার পান্টিচের পারফরম্যান্স। মাত্র দু’দিন অনুশীলন করেও এদিন লাল-হলুদ জার্সিতে অভিষেক ম্যাচে নেমে রক্ষণে ভরসা দিলেন সার্বিয়ান সেন্টার ব্যাক। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনীরাই এদিন বড় বাধা ছিলেন কুয়াদ্রাতের দলের কাছে। দাপটে শুরুও করে খালিদের ছেলেরা। ড্যানিয়েল চিমা চুকু, স্যাননদের সঙ্গে সদ্য ইস্টবেঙ্গল ছাড়া স্প্যানিশ স্ট্রাইকার জেভিয়ার সিভেরিও বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন হিজাজি মাহেরদের কাছে।
আরও পড়ুন-চালু হবে কলকাতা-দিনহাটা রকেট বাস
শুরুর দিকে চিমা, সিভেরিওদের প্রচেষ্টা প্রতিহত হয় প্রভসুখন সিং গিল, পান্টিচ, হিজাজিদের তৎপরতায়। ১৭ মিনিটে প্রতিআক্রমণ থেকে সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন নন্দকুমার। এরপরই ফের জামশেদপুরের ঝড়। চিমার শট বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচিয়ে দলের পতন রোধ করেন সেই গিল। কিন্তু প্রায় গোটা প্রথমার্ধ দাপিয়ে খেলার পরও বিরতির ঠিক আগেই পিছিয়ে পড়ে জামশেদপুর। বিপক্ষ রক্ষণের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোল করে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। নন্দকুমার ফাঁকায় বল পেয়ে
১-০ করেন।
আরও পড়ুন-ধোনি-বিরাট দ্বৈরথে শুরু কোটিপতি লিগ, ২৩ মার্চ ইডেনে নামছে কেকেআর
বিরতির পর ইস্টবেঙ্গলকে অনেক সংগঠিত মনে হয়। কিন্তু মহেশ, ক্লেটনরা ফাইনাল থার্ডে গিয়ে আটকে যান। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অজয় ছেত্রীকে তুলে বিষ্ণুকে নামিয়ে দেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। বিষ্ণুর গতি ও ছটফটানিকে কাজে লাগাতে চাইছিলেন কুয়াদ্রাত। নিষ্প্রভ থাকা ভাস্কুয়েজকে তুলে ফেলিসিও ব্রাউনকেও নামান লাল-হলুদ কোচ। কিন্তু ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন মহেশ, বিষ্ণু, নন্দরা। ক্লেটনের বাড়ানো থ্রু ধরে সামনে বিপক্ষ গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি মহেশ। বিষ্ণুর হেড পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। এরপরই ৮১ মিনিটে জাপানি মিডিও তাচিকাওয়ার দুরন্ত হেডে সমতা ফেরায় জামশেদপুর। শেষে সংযুক্ত সময়ে মানজোরোর ফ্রি-কিকে ২-১ করে খালিদের দল।