পুরুলিয়ার শিমুলিয়া ময়দানে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) বলেন, “সারি ও সারনা ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছি। যদি তারা না করে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব সারি এবং সারনা ধর্মকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।“ ধর্মের স্বীকৃতি দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেই কারণে আদিবাসীদের একাংশের ধর্ম সারি-সারনা ধর্মের স্বীকৃতি লড়াই চালাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার, পুরুলিয়ায় সরকারি প্রদান অনুষ্ঠান থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জানান কেন্দ্রের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব। রাজ্যের মাহাতোরা তাঁদের তফসিলি জনজাতি হিসেবে ঘোষণা দাবি জানিয়ে আসছেন। সেই দাবির মান্যতায় রাজ্যে ভৌগোলিক ভাবে তাঁদের সংখ্যা জানতে একটি সমীক্ষা করার কথাও এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, মাহাতোদের তফসিলি জনজাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্যের নেই। তা রয়েছে কেন্দ্রের হাতেই। তাঁর কথায়, “আমি মাহাতোদের একটা কথা বলব, আদিবাসী ও মাহাতোদের মধ্যে আমি ঝগড়া লাগাতে চাই না। আপনাদের যা যা আছে আমরা করে দেব। সঙ্গে সঙ্গে মাহাতোদের দীর্ঘ দিনের দাবি আছে, তাদের তফসিলি জনজাতি হিসাবে ঘোষণা করা হোক। এটা আমার হাতে নেই। কাজেই আপনারা আমাকে দোষ দেবেন না। কিন্তু আমরা মনে করি আমরা শুরু করেছি। কোন কোন জিয়োগ্রাফিক অঞ্চলে মাহাতরা থাকেন। তাদের একটা পার্সেন্টেজ, একচুয়াল পার্সেন্টেজ তাদের জন্য একটা সার্ভে করছি।“
তবে, রাজ্যে আদিবাসীদের জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটা দেখার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে সতর্ক করে তিনি বলেন, “মাহাতোদের যা সমস্যা আমি দেখে দেব। আপনাদের যে দাবি তা আমি দেখে দেব। কিন্তু দয়া করে ভোট এলেই আদিবাসী আর মাহাতোদের মধ্যে ঝগড়া লাগাবেন না। কারণ অনেক মাহাতোও আদিবাসী আছেন।“
ভোটের সময় বাংলায় এসে বিভাজনের রাজনীতি করে বিজেপি। তারপর জিতলে আর উন্নয়নের কাজ করে না। এদিন মঞ্চ থেকে এই নিয়ে তোপ দাগেন মমতা (Mamata Banerjee)। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে পুরুলিয়া জিতেছিল বিজেপি। তৃণমূল সভানেত্রী এদিন বলেন, “আগের বারও এখান থেকে বিজেপি জিতে গিয়েছিল। জিতে যাওয়ার পরে কি কিছু করেছিল? ইলেকশনের আগে এসে ভয় দেখাবে। কিছু টাকা পয়সা দেবে। আর কিছু মিথ্যে নোংরা নোংরা কথা বলবে। আপনারা শুনবেন না। ভোট হয়ে গেলেই ওরা পালিয়ে যাবে। আমরা কিন্তু বাংলায় ৩৬৫ দিনই থাকব।’’ তাঁর অভিযোগ, “ভোটের সময় ওরা এসে বলবে ১৫ লক্ষ টাকা দেবে। কিন্তু ভোট চলে গেলে ওরা আর কিছু করবে না। ওদের সঙ্গেই মিশে আছে সিপিএম আর কংগ্রেস। ওরা বড় বড় কথা বলে, কিন্তু কেউ কোনও কাজ করে না। আমি কথা দিলে কথা রাখি।“