প্রতিবেদন : বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করেছে কেন্দ্র, এবার বাংলার মানুষ তাদের ছেড়ে কথা বলবে না। রবিবার টালিগঞ্জ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে উঠল তৃণমূলের গর্জন। ১০ মার্চ ব্রিগেডের সভাই স্পষ্ট করে দেবে যে, তারাই পথ দেখাবে দেশকে। ডাঃ শশী পাঁজা থেকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস থেকে পার্থ ভৌমিক, মালা রায়, কুণাল ঘোষ, দেবাশিস কুমাররা একযোগে গর্জে উঠলেন বিজেপির বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন-অসম্মানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান সন্দেশখালির মা-বোনেরা : পার্থ
মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, বাংলার মহিলাদের গর্জনে বিজেপি বাধ্য হয়েছে প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করতে। বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করে বুঝিয়ে দিয়েছে নারীদের অপমান করার ক্ষেত্রে তারা অগ্রগণ্য। যখনই সুযোগ পায় তখনই অপমান করে। বাংলাকে অপমান করছ, বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করছ, যোগ্য জবাব পাবে এবার। বাংলাই পথ দেখাবে দেশকে। নিজেরাই যদি ৪০০ পাবে, তাহলে কেন সরকার ভাঙার চেষ্টা করছ? প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ সোজাসুজি জানিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের আশীর্বাদে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু মাননীয় নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে সারা বাংলায় উন্নয়নের কাজ আর কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল ময়দানে নামলে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের বিজেপি বাংলায় ৩টে থেকে ৫টার বেশি আসন পাবে না। সেই আওয়াজ দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পায়ে পায়ে ধুলো উড়িয়ে ১০ মার্চ ব্রিগেড চলুন। কেন্দ্রের সরকার পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাস-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে, ভারত মাতা কি জয় বলে মায়ের গলা থেকে সোনার গয়না খুলে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়াকেও বিক্রি করে দিয়েছে। বাংলায় হেরে বাংলার প্রতি বঞ্চনা করছে। সিবিআই-ইডি পাঠিয়ে একের পর এক ব্যক্তি-আক্রমণ ও কুৎসা করে চলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে জনমুখী প্রকল্প আপনাদের খরচ কমাচ্ছে। তাই মানুষের ভরসা তৃণমূলেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তৃণমূলের কর্মীরা আসল সম্পদ। আমরা গর্বিত যে, আমরা সেই তৃণমূলের কর্মী। শুধু বিজেপি নয়, সিপিএমকে আক্রমণ করে কুণাল বলেন, সিপিএম আপনাদের এলাকাকে অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছিল। কারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল, ইংরেজি তুলে দিয়েছিল, বাংলাকে পিছিয়ে দিয়েছিল। একের পর এক গণহত্যা, গণধর্ষণের ঘটনা, সেইসব ভুলে গেলে চলবে না। সিপিএমকে একটা ভোট দেওয়ার অর্থ বিজেপির হাত শক্ত করা।
আরও পড়ুন-আজ রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকরাজ্যে এল কমিশনের ফুল বেঞ্চ
মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, মেয়েদের বোকা বানাচ্ছেন? সমাজকে বোকা বানাচ্ছেন? ১৮-র স্বপ্ন আর দেখা হবে না আপনাদের। ৪২-এ ৪২ পাবে তৃণমূল। ১০ মার্চ তৃণমূলের জনগর্জন আসলে বিজেপিকে বর্জনের সভা। ৭ মার্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মহামিছিল ও ১০ মার্চ ব্রিগেডে মহিলাদের অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক তাঁর বক্তব্যে পদে পদে বুঝিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী দশ বছরের ব্যর্থতা। বিজেপি দুর্নীতিগ্রস্ত দল, সব দুর্নীতিগ্রস্তরা জুটেছে, এই বিজেপিকে ছুঁড়ে ফেলতে হবে। সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালিয়ে নরেন্দ্র মোদির সরকার টিকে থাকতে পারে না। বিদায় আসন্ন বিজেপির।
এদিনের কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ডাঃ শশী পাঁজা, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, পার্থ ভৌমিক, ইন্দ্রনীল সেন, সুজিত বসু, সাংসদ মালা রায়, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার, রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ, যাদবপুর-ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী, আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র পারিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়, বরো চেয়ারম্যান জুঁই বিশ্বাস, কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী, তারকেশ্বর চক্রবর্তী, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিতা কর মজুমদার, তপন দাশগুপ্ত, সন্দীপ নন্দী মজুমদার, বিশ্বজিৎ মণ্ডল, গোপাল রায়, সন্দীপ দাস, প্রসেনজিৎ দাস-সহ টালিগঞ্জের দলীয় নেতৃবৃন্দ।