প্রতিবেদন : তৃণমূলের সঙ্গে ২৩ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন তাপস রায় (Tapas Roy)। সে-প্রসঙ্গে দলের অবস্থান স্পষ্ট করল তৃণমূল। তৃণমূলের সাফ কথা, যদি কেউ বলেন যে, তিনি পার্টির মধ্যে সম্মান পাচ্ছেন না, সেটা কেন প্রতিবার নির্বাচনের ১৫ দিন আগে বলা হয়।
তাপস রায় (Tapas Roy) আগে কংগ্রেসে ছিলেন, পরে তৃণমূলে যোগদান করেন। এখন তিনি দল ছেড়েছেন এবং সম্ভবত অন্য মতাদর্শে চলে যাবেন। মতাদর্শে এমন পরিবর্তন তখনই ঘটতে পারে, যখন বাধ্যবাধকতা থাকে বা কোনও ভাল চুক্তি থাকে। তাপস রায় দাবি করছেন, তিনি পার্টির দ্বারা অপমানিত হয়েছেন এবং সে-কারণেই তিনি পদত্যাগ করতে চান, তাহলে উত্তর কলকাতার সভাপতি পদ থেকে আপনাকে সরিয়ে দেওয়ার পরে আপনি কেন দলত্যাগ করেননি? আপনার বাড়িতে ইডি রেড করার পরই আপনি পার্টি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন? আপনি হয়তো কিছু চাপ বা বাধ্যতার মধ্যে আছেন, না হলে আপনি এটি করতেন না।
তাপস রায় দাবি করেছেন, ইডি রেডের পর কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এটি মিথ্যা এবং ভুল। তাপস রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য পার্টির পক্ষ থেকে সমস্তরকম প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। ইডির অভিযানের পর তাঁর সঙ্গে দু’দিন ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। নম্বরটি সক্রিয় হতেই নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিল। তখনই দল বুঝতে পেরেছিল এবং দলের ধারণা হয়েছিল যে, ইতিমধ্যেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তা নিয়েছেন কিছুটা বাধ্যতামূলকভাবেই।
আরও পড়ুন- যেখানে দাঁড়াবেন সেখানেই হারাব, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে তোপ কল্যাণের
তৃণমূল সাফ জানিয়েছে, পার্টি আমাদের মায়ের মতো। পার্টি আমাদের পরিচয় দেয়। যদি মায়ের সঙ্গে আমাদের কিছু মতপার্থক্য বা ঝগড়া হয়ে থাকে, আমরা কি মাকে ছেড়ে চলে যাব বা প্রতিবেশী মহিলাকে আমাদের মা বলে ডাকতে শুরু করব? তাপস রায়ের মন্তব্য প্রমাণ করে যে, হয় তিনি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী নতুবা বাংলার মানুষকে বোকা মনে করেন। আগামী দিনে দিদির প্রতিকৃতি সামনে রেখে লড়াই হবে বিজেপির জমিদারদের বিরুদ্ধে। দিদি এবং তৃণমূলই আমপান বা কোভিডের মতো সব খারাপ সময়ে মানুষের জন্য দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু আজ তাপস রায় বলছেন যে, পার্টি কখনওই তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি, তা মিথ্যা এবং ভুল। একটি বিবৃতি দিয়ে তিনি একজন নেতা এবং মুখপাত্রের প্রচেষ্টাকে উপহাস করেছেন, যাঁরা তাঁর পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু পরিবর্তে তিনি বিরোধীদের পক্ষ নিয়েছেন এবং প্রশংসা করছেন। দেখান কোথায় তাঁর আনুগত্য।
পার্টি জানিয়েছে, জনগণকে তাঁদের প্রজ্ঞা এবং বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নিতে দিন। তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে দিন কে তাঁদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে এবং কে তাঁদের পক্ষে কাজ করবে। সন্দেশখালি নিয়ে তাপস রায়ের মন্তব্য, তাঁর বাড়িতে অভিযানের আগে সন্দেশখালি ইস্যু হয়েছিল। তখন তিনি কিছু বললেন না কেন? নাকি তিনি একটি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন? পার্টির একটি নির্দিষ্ট নীতি আছে এবং একটি উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম আছে, সেখানে তিনি বলতে পারতেন। কিন্তু ভোট ঘোষণার ১৫ দিন আগে যদি সেইসব কথা ওঠে, তবে সেই ব্যক্তির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক।