প্রতিবেদন : মণিপুরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে যে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সেখানকার গেরুয়া নিয়ন্ত্রিত সরকার তা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে দিনের আলোর মতোই। এবারে অসহযোগিতা শুরু করেছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটা বড় অংশই। অসহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে যে কোনও মুহূর্তেই নেমে আসতে পারে বিপর্যয়, এই আশঙ্কা তাড়া করে বেড়াচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে। সেই আশঙ্কা থেকেই এবার সরকারি কর্মীদের উপরই রোলার চালাতে শুরু করেছে তাঁর সরকার।
আরও পড়ুন-সাইবার ফাঁদ রুখতে চালু হল কেন্দ্রের নয়া পোর্টাল
জারি করেছে আজব ফরমান, কাজ করলেই টাকা, না করলে বেতন কাটা যাবে। অর্থাৎ, ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ নিয়ম চালু করল মণিপুর সরকার। সরকারি কর্মীদের অনুপস্থিতি রুখতেই এই অভূতপূর্ব আদেশ। এই ফরমানকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বুধবারই এই নিয়ম চালু করে এন বীরেন সিং সরকারের পক্ষ যুক্তি দেখানো হয়েছে, কর্মীরা তাঁদের সংশ্লিষ্ট দফতরে অনুপস্থিতির বিষয়ে রিপোর্ট করছেন না। কেউ কেউ রিপোর্ট করলেও সেই অনুপস্থিতির যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারছেন না। তাই এই আচমকা অনুপস্থিতি রুখতে এবার কঠোর পদক্ষেপ করল এন বীরেন সিংয়ের সরকার। বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বিনীত জোশী। এ ব্যাপারে কড়া নজরদারি চালানোর জন্য বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা এই নিয়ম মানবেন না, প্রয়োজনে তাঁদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করতে হবে। লক্ষণীয়, মে মাসে শুরু হওয়ার সেই হিংসা এবং অশান্তির জেরে সরকারি অফিসে কর্মীদের হাজিরার সংখ্যা নিয়মিত ভাবে কমেছে। কিন্তু কোনওভাবেই অবস্থা সামাল দিতে পারছে না রাজ্য। সরকার চালাতে নাজেহাল হচ্ছে। অগত্যা চাপের রাস্তায় হাঁটছে গেরুয়া সরকার। সরকারি কর্মীদের জন্য ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ নিয়ম চালু করল মণিপুর সরকার।
আরও পড়ুন-জলসংকটে জেরবার বেঙ্গালুরু
সরকারি কর্মীদের কিংবা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলেও প্রশাসনের দমন-পীড়ন কিন্তু অব্যাহত। ইম্ফলে আমরণ অনশনরত রূপান্তরকামী সমাজকর্মী মালেম থঙ্গামকে বুধবারই ধরে নিয়ে গিয়েছে রাজ্যপুলিশ। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ২৬ বছরের সমাজকর্মী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ইম্ফলের কাংলা ওয়েস্টার্ন গেটে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন। তবে অন্যান্য বিষয়ে চূড়ান্ত ব্যর্থতা সত্ত্বেও মণিপুরে অবিলম্বে এন আর সি চালু করার ব্যাপারে কিন্তু বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করিয়ে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সুপারিশপত্র পাঠিয়েছে কেন্দ্রকে।