প্রতিবেদন : ব্রিগেড থেকেই গর্জে উঠুক বাংলা— উঠুক রাজনৈতিক টর্নেডো। আগামী ১০ মার্চ বাংলাকে ব্রিগেডে এভাবেই আহ্বান জানালেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, এই জনগর্জন হবে প্রতিবাদের- প্রতিরোধের। দেশকে বাঁচাতে, বাংলাকে বাঁচাতে, মানুষকে বাঁচাতে হোক জনগর্জন। এভাবেই বৃহস্পতিবার বিজেপির বিরুদ্ধে এককাট্টা লড়াইয়ের ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-অপপ্রচারের ১০ জবাব তৃণমূলের, নারীশক্তিকে অপমান করে বিজেপি, অপরাধীদের সুরক্ষা দেওয়াই ওদের কাজ
এদিন আন্তর্জাতিক নারীদিবসকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত বিশাল মিছিলে নেতৃত্ব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর থেকে মধ্য কলকাতার এই মিছিলে যেদিকে তাকানো যায় শুধু কালো কালো মাথা আর জোড়া ফুলের পতাকা। ৮ মার্চ, শুক্রবার নারীদিবস। ওই দিন শিবরাত্রিও। ফলে মহিলাদের কথা মাথায় রেখে একদিন আগেই মিছিল করলেন নেত্রী। শুধু দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকই নয়, জননেত্রীর সঙ্গে এই ঝড়ে ভাসল গোটা কলকাতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় নামলে কী হতে পারে তা ফের দেখল বাংলা। দেখল দেশ। এদিন মিছিলে সামনের সারিতে ছিলেন মহিলারাই। দলের মহিলা সাংসদ-বিধায়ক-মন্ত্রী-সাংগঠনিক পদাধিকারীরা তো ছিলেনই। সেইসঙ্গে টালিগঞ্জের অনেক অভিনেত্রী-শিল্পীরাও ছিলেন এই মিছিলে। মিছিলের স্লোগান ছিল— নারীদের অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার। এসেছিলেন সন্দেশখালির মহিলারাও। আসলে সন্দেশখালিকে ঘিরে যে মিথ্যাচারের রাজনীতি চলছে তা বললেন এই মহিলারাই। ডোরিনা ক্রসিংয়ে মিছিল শেষে মঞ্চে বক্তৃতা দিতে গিয়ে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সন্দেশখালিকে ঘিরে ভুয়ো ‘সন্দেশ’ দিচ্ছে বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস। যখন মণিপুরে মহিলাদের নগ্ন করে হাঁটানো হয় তখন কোথায় থাকে বিজেপির নেতারা? যখন সাক্ষী মালিকরা নির্যাতনের অভিযোগ করে, তারপরেও অভিযুক্তকে সাংসদ বানানো হয় তখন লজ্জা লাগে না? প্রশ্ন নেত্রীর।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এদিন তীব্র কটাক্ষে বিজেপিকে পিন্টুবাবু বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর কথায়, পিন্টুবাবু কো গুস্সা কিউ আতা হ্যায়। তিনি বলেন, বাংলা দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি নিরাপদ শহর। উত্তরপ্রদেশ-বিহারে যা হয় এখানে তা হয় না। আর হয় না বলেই এখানকার মহিলারা জাগ্রত। তারা যেকোনও বিষয়ে অভিযোগ করতে পারে। প্রতিবাদ করতে পারে। প্রতিরোধ করতে পারে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে করলে তাদের আর বাঁচার উপায় থাকে না। এদিন জনগর্জন নিয়েও নেত্রীর আহ্বান, ১০ মার্চ ব্রিগেডে রাজনৈতিক টর্নেডো তুলতে হবে। বিজেপিকে আক্রমণ করে এদিন নেত্রী বলেন, এখন পকেটে এজেন্সি নিয়ে ঘুরছে। একজন তো বাড়িতে ইডি এসেছে বলে ভয়েতে চলেই গেল। আসলে বিজেপির ওয়াশিং মেশিনে গেলেই ধোয়া তুলসীপাতা। আর না গেলেই চোর। তাঁর প্রশ্ন, বাংলায় বিজেপির ১৮ জন সাংসদ রয়েছেন। তাঁরা কী কাজ করেছেন বাংলার জন্য? কলকাতায় মেট্রো রেলের উদ্বোধন করা হল। এই সব কাজ আমার করে দেওয়া। যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম এগুলোর জন্য টাকা বরাদ্দ করেছিলাম। এরপরই দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ভোটের আগে ইভিএম ভাল করে দেখে নেবেন। খবর আসছে মেশিনে ‘চিপ’ লাগিয়ে ফলাফল বদলে ফেলতে পারে। এজেন্টরাও ভাল করে দেখে নেবেন। তৃণমূল অসমেও লোকসভায় দুটি আসনে লড়াই করবে। মঞ্চে উপস্থিত সাংসদ সুস্মিতা দেবকে বিষয়টি দেখতে বলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট ঘোষণার আগেই রাজ্যে চলে এসেছে। সে সম্পর্কে নেত্রীর নির্দেশ, ওদের দিকে ফিরেও তাকাবেন না। ওরা বিজেপির নির্দেশে এসেছে।