প্রতিবেদন : ঘরে বসে শুধু নির্দেশ দেওয়া নয়, মাঠে নেমে ঘাম ঝরিয়ে জনসংযোগ করতে হবে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান ও বুথ সভাপতিদের। প্রতিটি বুথ ধরে ধরে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাতে হবে। বিজেপির মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রচার করতে হবে। বাংলার মানুষকে বোঝাতে হবে কীভাবে ২০২১-এ বিধানসভায় হারার পর গায়ের জোরে ১০০ দিনের কাজের টাকা ও বাংলা আবাসের বাড়ির টাকা আটকে দিয়েছে বিজেপি সরকার।
আরও পড়ুন-শিরদাঁড়ায় গুরুতর চোট শিবপ্রসাদের, ভর্তি হাসপাতালে
শনিবার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এই নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা-মাটি-মানুষের সরকারের যত উন্নয়ন প্রকল্প ও পরিষেবা প্রদানের কাজ চলছে তা আক্ষরিক অর্থে ঠিকঠাকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে কি না তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি কারও কোনও সমস্যা থাকে, অভিযোগ থাকে তা শুনতে হবে। সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। এক্ষেত্রে কারও কোনওরকম শিথিলতা বরদাস্ত করা হবে না। নিজে বাড়ি বাড়ি না গিয়ে অনুগামীদের পাঠিয়ে দিলাম— তা চলবে না। মানুষ দায়িত্ব দিয়ে যে পদে বসিয়েছেন নির্বাচিত করেছেন তার মর্যাদা রাখতে হবে, তাঁদের জন্য কাজ করতে হবে।
শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে বৈঠক শুরু করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বৈঠক চলে দীর্ঘক্ষণ। প্রতিটি বুথ ধরে পাড়ায়-পাড়ায় এলাকায়-এলাকায় অলিতে-গলিতে ঘরে-ঘরে মানুষের কাছে যত বেশি সম্ভব পৌঁছতে হবে। তাদের অভাব-অভিযোগ শুনতে হবে সমাধানও করতে হবে। তাঁদের বোঝাতে হবে ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে হারার পর বিজেপি বাংলার মানুষের থেকে ভোট নিয়ে তাদেরই পেটে কীভাবে লাথি মেরেছে, কীভাবে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে তা মানুষকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাতে হবে। তাদের বলতে হবে বোঝাতে হবে, উন্নয়নের ডালি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাদের পাশে ছিল আছে থাকবে। ১০০ দিনের কাজের টাকা ইতিমধ্যেই প্রাপকদের দিয়েছে রাজ্য সরকার। অদূর ভবিষ্যতে আবাসের টাকাও দেবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বলেছেন রাজ্য সরকার ৫০ দিনের কাজ তৈরি করেছে। তাতে যথার্থ টাকা পাওয়া যাবে। মা-মাটি-মানুষের সরকার থাকলেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, সবুজসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, বিনামূল্যে চিকিৎসা, বিনামূল্যে রেশন— সবই পাওয়া যাবে। বাংলার মানুষকে এগুলি বোঝাতে হবে।
অভিষেকের নির্দেশ, সকাল-বিকেল টানা প্রচারে থাকতে হবে। বিশেষ করে মহিলাদের টিম তৈরি করে প্রচারে যেতে হবে। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে মা-বোনেদের বোঝাতে হবে বিজেপি কেন বাংলার জন্য বিপদ। একই সঙ্গে তুলে ধরতে হবে বাংলায় উন্নয়নের যা কাজ হয়েছে তার প্রতিটি পর্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বাংলা জুড়ে উন্নয়নের ডালি নিয়ে হাজির হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের এমন কোনও ব্লক বা প্রান্ত বা অঞ্চল নেই যেখানে সরকারি প্রকল্পের ছোঁয়া পাননি মানুষ। যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন, তাঁরাও পেয়েছেন। যাঁরা ভোট দেননি, তাঁরাও পেয়েছেন। বর্তমানে বিজেপি যেভাবে ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স, এনআইএ দিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে তা প্রচারে আরও বেশি করে তুলে ধরতে হবে বাংলার মানুষের কাছে। বাংলা জুড়ে পঞ্চায়েতে গ্রামস্তরে কী কী উন্নয়নের কাজ হয়েছে তা বলতে হবে মানুষকে। ঘরে বসে থাকার কোনও সুযোগ নেই। বিজেপিকে হারাতে ঘাম ঝরাতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে। বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাংলার মানুষকে প্রশ্ন করতে হবে বিজেপির এই প্রতিহিংসা ও গা-জোয়ারি রাজনীতি কি চলতে পারে এখানে? তাঁরা ঠিক উত্তর দেবেন। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে ভরসা— একথা তাঁদের বোঝাতে হবে।