সৌম্য সিংহ : অত্যন্ত সিরিয়াস ছাত্রছাত্রীরা সারাবছর ধরেই সমান যত্ন নিয়ে পড়াশোনা করেন। স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষার মুখোমুখি তাঁদের আর কোনও বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না। কোনও অতিরিক্ত চাপও নিতে হয় না। পরীক্ষার ফলাফলও হয় মনের মতোই। হাওড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থাটাও এখন ঠিক তা-ই। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন এবং একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রত্যাশিত সাফল্যের ধারাবাহিকতা সামনের পুরনির্বাচনে যে নিশ্চিতভাবেই বজায় থাকবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। সারাবছর বিরামহীন জনসংযোগ এবং উন্নয়নের ফসল তুলবে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৩ সালে দীর্ঘ বামশাসনের অভিশাপমুক্ত হয়েছিল হাওড়া পুরসভা। পুরনির্বাচনে মোট ৫০ আসনের মধ্যে ৪৬টি ওয়ার্ডের মানুষ রায় দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষেই। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার দরাজ হাতে টাকা খরচ করেছে কলকাতার যমজনগরী হাওড়া শহরের উন্নয়নের জন্য। রাজ্য সরকারের আনুকূল্যে ‘কুলি টাউন’ দুর্নাম থেকে মুক্তি পেয়েছে শিল্পনগরী হাওড়া। বামজমানায় আবর্জনায় ভর্তি কঙ্কালসার রাস্তাঘাটের কথা আজও যাঁদের চোখে ভাসে, তাঁরা খুব সহজেই উপলব্ধি করতে পারেন আজকের ঝকঝকে হাওড়ার সঙ্গে অতীতের পার্থক্যটা। অজস্র পার্ক এখন শহরের অলঙ্কার। পানীয় জল, নিকাশি— সবেতেই প্রগতির সুস্পষ্ট প্রতিফলন।
আরও পড়ুন : ভোট প্রস্তুতিতে জরুরি বৈঠক ডাকল কমিশন
তৃণমূল পরিচালিত হাওড়া পুরসভা নিত্যনতুন আয়ের পথ খুঁজে বের করেছে, বকেয়া রাজস্ব আদায় করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। অজস্র কর্মসংস্থানের দরজা খুলে দিয়েছে। পুরবোর্ডের মেয়াদ ২০১৮-র ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে প্রশাসকমণ্ডলী। সবচেয়ে বড় কথা, রাজ্যের সচিবালয় কলকাতা থেকে ২০১৪ সালে হাওড়ায় স্থানান্তরিত হওয়ায় হীনমন্যতা থেকে মুক্তি পেয়েছেন বহু হাওড়াবাসী। সত্যিকথা বলতে কী, শিবপুর মন্দিরতলা এলাকায় এই ‘নবান্ন’ এখন হাওড়াবাসীর আত্মমর্যাদার প্রতীক। এই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিশেষ কৃতজ্ঞ হাওড়ার মানুষ। তাই মানুষ দায়বদ্ধ তাঁর দলের কাছে। ২০১৩-তে হাওড়ায় পুরভোট হয়েছিল ৫০টি ওয়ার্ডে। বামেদের পর্যুদস্ত করে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পরে বালি পুরসভা হাওড়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ১৬টি ওয়ার্ড বেড়ে যায় হাওড়া পুরসভার। ২০১৬-র পুরভোটে এর সব ক’টিই দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। এবারে ফের বালি আলাদা হয়ে যাওয়ায় হাওড়া পুরসভার ভোটগ্রহণ হবে সাবেক ৫০টি ওয়ার্ডেই। এর মধ্যে ১৭টি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তৃণমূল কংগ্রেসের জয় এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। কারণ হাওড়ার মানুষ জানেন, তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র হাওড়ার উন্নয়ন করতে পারে। দীর্ঘ ৩৪ বছরে বাম জমনায় কোনও উন্নয়নই হয়নি হাওড়ায়। বঞ্চনার অভিশাপ নিয়ে হাওড়ার মানুষ দিন কাটিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী নতুন দিশা দিয়েছেন হাওড়াকে।