সোমনাথ বিশ্বাস: পুরভোটকে কেন্দ্র করে সরগরম ত্রিপুরা। মাত্র কয়েক মাসের সাংগঠনিক ক্রিয়াকলাপের মধ্যেই লড়াই জমিয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের রাজনৈতিক লড়াইয়ে শাসক বিজেপিকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া হবে না, তা আগরতলার জনসভা থেকেই স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ গোয়ায়
শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাবে চাঙ্গা দলের সর্বস্তরের কর্মী-সমর্থকরা। বিজেপির যাবতীয় প্ররোচনা ও সন্ত্রাস উপেক্ষা করে আগরতলা পুরনিগম নির্বাচনে ৫১টি আসনের সব ক’টিতেই প্রার্থী দিয়ে নিজেদের অনড় অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছে ত্রিপুরা তৃণমূল। গেরুয়া সন্ত্রাসের বাতাবরণের মধ্যেই জেলার পুরসভাগুলিতেও যথাসাধ্য লড়াই দিচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থীরা।
হামলা, মামলা আর লুটপাট চালিয়ে অন্য কয়েকটি বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন জোর করে প্রত্যাহার করিয়েছে বিজেপি। কিন্তু থামানো যায়নি তৃণমূলকে। লাগাতার হামলা সত্ত্বেও আগরতলা পুরনিগমের ৫১টি আসনের একটি থেকেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি তৃণমূলের একজন প্রার্থীও।
আরও পড়ুন-দলের প্রস্তুতিতে খুশি কোচ হাবাস
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুরভোটের ঠিক আগে কর্মীদের চাঙ্গা করতে আগামী ২২ নভেম্বর ফের ত্রিপুরা যাবেন অভিষেক। তার আগেই এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন দায়িত্ব ভাগ করে বাংলার একাধিক নেতাকে দফায় দফায় ত্রিপুরার পুর-যুদ্ধের ময়দানে পাঠাচ্ছে দল। পাঁচ বিধায়ক-সহ একাধিক যুব নেতা দলের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় পৌঁছে গিয়েছেন। পুরভোট পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ফের ত্রিপুরায় যাবেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ।
আরও পড়ুন-ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে ফিটনেস প্রমাণ কর,হার্দিককে কড়া বার্তা বোর্ডের
একাধিক সাংগঠনিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে, তাতে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের আমিরুল ইসলামকে ত্রিপুরার সিপাইজলার সোনামুড়ার নগর পঞ্চায়েতের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর সঙ্গে সহযোগিতায় থাকবেন কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। বীরভূমের লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহকে খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া পুরসভার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর সঙ্গে থাকবেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক ও বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান খোকন দাস।
বিধায়ক ও পুর-প্রশাসক অরিন্দম গুঁইকে দেওয়া হয়েছে ঢলাই জেলার আমবাসা পুরসভার বিশেষ দায়িত্ব। তাঁর সঙ্গে সহযোগিতায় থাকবেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি। পশ্চিম বর্ধমান আইএনটিটিইউসির সভাপতি অভিজিৎ ঘটক, অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী, আলিপুরদুয়ার জেলার প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি ও বর্তমানে তৃণমূলের নেতা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা আগরতলা পুরনিগমের একাধিক ওয়ার্ডে ভোটের দায়িত্বে থাকছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেবেন শীর্ষনেতৃত্ব।
এদিকে, প্রচারের মধ্যেই ত্রিপুরার তৃণমূল প্রার্থীদের উপর হামলা অব্যাহত বিজেপি গুন্ডাদের। বুধবার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পৌষালী দত্ত আক্রান্ত হন রঞ্জিতনগর এলাকায়। স্থানীয় মানুষ সংগঠিত হয়ে বিজেপি দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবের প্রতিবাদ করেন। রাতে আক্রান্ত হন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী অপর্ণা বিশ্বাস। বাড়িতে আক্রমণ চালিয়ে বাইক থেকে শুরু করে বহু জিনিস তছনছ করে বিজেপির গুণ্ডারা।