প্রতিবেদন : এক মানবিক উদ্যোগ। মানবিক মুখ্যমন্ত্রী উত্তরের ঝড়বিধ্বস্ত মানুষদের মাথার উপর ছাদ ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত দুর্গতরা। শুক্রবার কোচবিহারের দিনহাটার সভা থেকে ঝড়ে বিধ্বস্তদের বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। শনিবার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির সভা থেকে টাকা দেওয়ার প্রত্যেকটি ধাপ পরিষ্কার করে মানুষকে বুঝিয়ে বলেন। উত্তরের মানুষের বক্তব্য, বাংলার সরকার মানবিক সরকার। গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে বাংলাকে বঞ্চনা করে মানুষের ভোট কিনতে চাইছে বিজেপি। তাদের পরিহার করতে হবে। ভয়াবহ টর্নেডোয় ঘরবাড়ি সব হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছিলেন জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষজন। সবথেকে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছিলেন জলপাইগুড়ির বার্নিশ গ্রামের বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
৩১ মার্চ টর্নেডো হানার পর মাঝরাতে মুখ্যমন্ত্রী ছুটে গিয়েছিলেন ঝড়বিধ্বস্ত গ্রামে। সারা রাত মানুষের পাশে থেকে তাঁদের দুঃখ ভাগ করে নিয়েছেন। সাধ্যমতো সবকিছু দিয়ে সাহায্য করেছেন। যাঁদের মাথার উপর থেকে ছাদ চলে গিয়েছিল তাঁদের ছাদ ফেরানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছিলেন মানবিক মুখ্যমন্ত্রী। আদর্শ আচরণবিধির মধ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন ছাড়া বাড়ি তৈরির অনুদান দেওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু মানবিক সরকারের মানবিক আবেদনে কর্ণপাতও করেনি নির্বাচন কমিশন। কমিশন অসমের বিহু উৎসবের জন্য অনুদান অনুমোদন করলেও বাংলার ঘরহারা দুর্গত মানুষগুলোর কথা বিবেচনা করেনি। তাই নির্বাচন কমিশনের তোয়াক্কা না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারের সভা থেকে ঝড়ে ঘর হারানো মানুষের মাথার ছাদ ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কমিশনের বৈষম্য তুলে ধরে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট কথা, নির্বাচন কমিশন আমায় কেস দিলে দিক। গরিব মানুষের জন্য কেস খেলে আমি গর্ববোধ করব। যা করার করুক। এই কথা বলার পরই শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার বাড়ি তৈরিতে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে দ্বিতীয় কিস্তিতে এখনই ৪০ হাজার করে দেওয়া হচ্ছে। পরে দেওয়া হবে বাকি ৬০ হাজার। এখনই বাড়ি তৈরি করা শুরু করে দিক গৃহহারারা।
আরও পড়ুন-বাংলা নববর্ষ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য দিবস
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠতে দেখা যায় উত্তরের ঝড়বিধ্বস্ত পরিবারের সদস্যদের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আদর্শ আচরণবিধি চলছে। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার আবেদন করেছিলাম। সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানবিকতা। কিন্তু কমিশন কিছুই করল না। কোনও সদুত্তর না পেয়ে আর অপেক্ষা না করেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হল আমাদের। একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটে গেছে। এটা তো কারও হাতে নেই। এই বিষয়টা মানবিকতার সঙ্গে ভেবে দেখতে পারল না কমিশন বা কেন্দ্রের সরকার।