দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে এখন। দলের বর্তমান প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে মুখ খুলে মঙ্গলবার শাস্তির মুখে পড়তে হল দীর্ঘদিনের বিজেপি নেতা তথা বিজেপির হাওড়া জেলা সদর সভাপতি সুরজিৎ সাহাকে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে গেরুয়া শিবির থেকে বহিষ্কার করা হল। বিদ্রোহ ছড়াচ্ছে আদি বিজেপিতে। savebengalbjp-র টুইটার হ্যান্ডেল থেকে বুধবার সকালে একটি টুইট করা হয়।
আরও পড়ুন-মৌলনা আবুল কালাম আজাদ এর জন্মদিবসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধার্ঘ্য
সেখানে সরাসরি রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীকে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর হাতের পুতুল বলে তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেখানে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কেন তথাগত রায়-সৌমিত্র খাঁর মতো নেতারা লাগাতার বিজেপি বিরোধী মন্তব্য করা সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?
যিনি হাওড়া বিজেপির ভিতরের বাস্তব পরিস্থিতিটা বাইরে প্রকাশ করে দিলেন, তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল কেন? সেই টুইটে আরও প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনে তিনটি আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরেও কেন কল্যাণ চৌবে, ইন্দ্রনীল ঘোষের মতো নেতাদের দায়িত্ব দিলেন বিএল সন্তোষ, জেপি নাড্ডার মতো নেতারা!
আরও পড়ুন-মৌলনা আবুল কালাম আজাদ এর জন্মদিবসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধার্ঘ্য
বুধবার, দলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন বিজেপি নেতা সুরজিৎ। তাতেই বেজায় চটে যান গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। কারণ দর্শানোর সুযোগ না দিয়েই সরাসরি বহিষ্কার করা হয় সুরজিৎকে। গণতন্ত্র নিয়ে যারা বড় বড় কথা বলে, সেই বিজেপির এই আচরণের সমালোচনায় সরব হয় রাজনৈতিক মহল। তবে, শাস্তির পরেও নিজের বক্তব্যে অনড় সুরজিৎ।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই যখন তৎকাল বিজেপিরা বাংলার গেরুয়া শিবিরের মাথায় ভিড় করছিল, তখনই পুরনো বিজেপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ জমে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় নেতাদের ফুঁ দিয়ে ফোলানো ফানুসের আশায় তখন সেভাবে মুখ খোলেননি তাঁরা। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয় প্রমাণ করে দেয় বিজেপি নেতাদের আশার বাণী শুধুই ফাঁকা আওয়াজ ছিল।
আরও পড়ুন-দেবেন্দ্র ফড়নবিশ দাউদের চর! ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাটালেন এনসিপির মন্ত্রী নবাব
ভোটের আগে ফায়দা তুলতে যেসব নেতা অন্য দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়, তাঁদের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করতে থাকেন আদি বিজেপি নেতৃত্ব। তারই চরম বহিঃপ্রকাশ হয় বুধবার। কিন্তু যেখানে তথাগত রায়, সৌমিত্র খাঁর মতো নেতারা লাগাতার দল বিরোধী মন্তব্য করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন, সেখানে হাওড়া বিজেপির পরিস্থিতি সর্বসমক্ষে এনে কেন শাস্তি পেতে হবে সুরজিৎ সাহাকে?
কেন তাঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে না? এই প্রশ্নে তোলপাড় আদি বিজেপির অন্দর। এখন এই বিদ্রোহ আদপেও পদ্ম শিবিরের দিল্লির নেতারা সামাল দিতে পারেন কি না সেটাই দেখার।