সীতা কহিলেন, মা
সম্পদে কিবা কাম।
সকল সম্পদ মম
দূর্ব্বাদলশ্যাম।।’
স্বামী রামচন্দ্র সম্পর্কে এই ছিল সীতার হৃদয়াবেগ।
কিন্তু রাম কী করেছিলেন?
সপ্তকাণ্ড রামায়ণের ৫০০টি অধ্যায় খুঁটিয়ে পড়লেও রামের একটি আশ্চর্য সিদ্ধান্তের কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না, তা হল সীতাকে সতীত্বের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে বাধ্য করা।
ধার্মিক মহিলা সীতার অন্তরের পবিত্রতার কথা রামের অজানা ছিল না। তাঁর অটুট স্বামীভক্তি সম্পর্কেও সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন রামচন্দ্র। অথচ প্রবল যুদ্ধে রাবণকে পরাজিত করে লঙ্কা থেকে ফেরার পর, ‘রাবণের স্পর্শে সীতা কলঙ্কিত হয়েছেন’, এই লোক-অপবাদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায়, মূলত প্রজাদের চাপে রাম সীতাকে সতীত্বের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেন। আর কে না জানেন, সতীত্বের পরীক্ষা দেওয়ার চেয়ে বড় লজ্জা ও অপমান আর কিছুই হতে পারে না একজন নারীর কাছে। নারীত্বের এত বড় অবমাননার পর সংসারে থাকা যে কোনও নারীর কাছেই একেবারে অর্থহীন।
সীতা তাঁর অগ্নিপরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হন এবং তারপর মাটির কন্যা মাটিতেই মিশে যান।
সেই রামায়ণের কাল থেকে আজ অবধি মেয়েদের নিরন্তর অগ্নিপরীক্ষা চলছেই।
এ-সংসারে পদে পদে তাঁদের সম্মুখীন হতে হয় কঠিন থেকে কঠিনতর পরীক্ষার। রামায়ণ ছেড়ে মহাভারতে এলেও ‘সেই ট্র্যাডিশন’ সমানে চলতে দেখি আমরা। কুন্তী থেকে দ্রৌপদী হয়ে বিদুষী অথবা সাধারণ নারীরা কীভাবে জীবন কাটিয়েছেন? কুসুমাস্তীর্ণ? বিরামহীন লজ্জা ও অপমানের কষ্টিপাথরে যাচাই হতে হতে তাঁদের জীবন কি দুর্বিষহ হয়ে ওঠেনি? আসুন, আরেকজন প্রাচীন নারীর সতীত্বের অগ্নিপরীক্ষার কাহিনিতে চোখ রাখা যাক।
আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে আরও এক নারীকে সতীত্বের প্রমাণ দিতে অগ্নিকুণ্ডে উঠতে হয়েছিল।
তিনি বুদ্ধজায়া যশোধরা।
গড়পড়তা মানুষ জানেন যে, শাক্যকুমার পুত্রের মুখ দেখে গৃহত্যাগী হন। কিন্তু এ-বিষয়ে মূল সর্বাস্তিবাদী গ্রন্থগুলো বলছে অন্য কথা। মূল সর্বাস্তিবাদের তথ্য ঘাঁটলে দেখা যায়, বুদ্ধপুত্র রাহুলের জন্ম তাঁর জন্মদাতার অভিনিষ্ক্রমণের ছয় বছর পরে এক বৈশাখী পূর্ণিমার রাতে।
হ্যাঁ, জন্মদাতার অভিনিষ্ক্রমণের ছয় বছর পর; অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে দশ মাস দশ দিন বুদ্ধজায়া গর্ভধারণ করলে ধরতে হবে রাহুল শাক্যমুনির নিজের সন্তান নন। কিন্তু মূল সর্বাস্তিবাদী ধারার গল্প অন্যরকম। এখানে যশোধরার সন্তানজন্মকে শাক্যমুনির বোধিলাভের সাথে সমান্তরালে টানা হয়েছে।
গৃহত্যাগের ছয় বছর পর যে পূর্ণিমায় শাক্যমুনি বোধি লাভ করেন, সে-পূর্ণিমাতেই যশোধরাও সন্তান জন্ম দেন।
এই গল্প অনুসারে শাক্য রাজকুমারের অভিনিষ্ক্রমণের দিনেই রাহুল মায়ের গর্ভে এসেছিলেন। কিন্তু যশোধরার গর্ভধারণকাল দশ মাস থেকে বিলম্বিত হয়ে দাঁড়িয়েছিল মোট ছয় বছর।
আকাশকুসুম গল্প? মাতৃগর্ভে এতদিন শিশু থাকে? তারপরও এই কাহিনিকে জাতকগাথা দিয়ে সত্য প্রতিপন্ন করা হয়। চিনা ক্যাননের অভিনিষ্ক্রমণের সূত্র বলছে, যশোধরা পূর্বে কোনও জন্মে গোপালিকা ছিলেন। তাঁর বৃদ্ধা মায়ের আদেশ অমান্য তথা মাকে নিদারুণ কষ্ট দেওয়ার অপরাধে অন্যজন্মে যশোধরাকে দীর্ঘ ছয় বৎসর গর্ভভার বহনের শাস্তি পেতে হয়েছিল।
রাহুল পূর্বজন্মে এক রাজা ছিলেন। শাক্যমুনি ছিলেন এক ঋষি। রাহুল শাক্যমুনিকে তাঁর প্রাসাদের বাইরে ছ-দিন অপেক্ষা করতে বাধ্য করেছিলেন। এই অপরাধের শাস্তিস্বরূপ এই জন্মে তাঁকে ছ-বছর গর্ভে অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
কর্মফল, দেবানুগ্রহ, অভিশাপ, আশীর্বাদ ইত্যাদি থেকে সরে এলে কিন্তু দেখা যায় যে, মূল সর্বাস্তিবাদী পিটক ও মহাপ্রজ্ঞাপারমিতা- উপদেশ উভয়েই এক জায়গায় সহমত। তা হল যশোধরার সতীত্বের পরীক্ষা।
স্বামীর গৃহত্যাগের ছয় বৎসর পরে পুত্রের জন্ম দেওয়ায় সকলেই যশোধরাকে অসতী ভেবে নিয়েছিল। পঞ্চম শতকের চিনা অবদানগ্রন্থগুলোতে উল্লেখ আছে যে, রাজা শুদ্ধোদন যশোধরাকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। যশোধরা অগ্নিকুণ্ডে উঠলে অগ্নিদেব তাঁর সতীত্বের তাপ সইতে না পেরে নাকি গলে জল হয়ে যান। অগ্নিকুণ্ড উদককুণ্ডে পরিণত হয়। রাজা ও প্রজারা চুপ করে যান।
দ্বিতীয় কাহিনি অনুসারে যশোধরা রাহুলকে সরোবরে ভাসিয়ে নিজের সতীত্ব-পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এক্ষেত্রে রাহুলকে রক্ষা করেন স্বয়ং বরুণদেব। এমনকী শাক্যদেব অপবাদের জবাব দিতে তৃতীয়বারের সতীত্বের পরীক্ষাতেও সসম্মানে উত্তীর্ণ হন যশোধরা।
প্রাচীন যুগ ছেড়ে হালফিলের তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ একেবারে ঝাঁ-চকচকে সময়ে দাঁড়িয়েও আমরা কী দেখতে পাচ্ছি?
নারীদের অগ্নিপরীক্ষা অতীত? তাহলে তো হালফিলের কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করতেই হয়।
আরও পড়ুন: স্বৈরশাসকের অপবিজ্ঞান-সাধনা
অপরাজিতা সুনীতা কৃষ্ণন
নিজে নাচ শিখতে শুরু করার পরেই মাত্র আট বছর বয়সে মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের নাচ শেখাতে শুরু করে সুনীতা। বস্তির হতদরিদ্র শিশুদের জন্য বস্তিরই এক ঘরে আস্ত একটা স্কুলই খুলে দেয় সুনীতা। তখন তার বয়স মাত্র বারো। দলিত পরিবারের সকলের জন্য শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে ‘নিও-লিটারেসি’ ক্যাম্পেন শুরু করে মাত্র ১৫ বছর বয়সে।
ব্যস, আর যায় কোথায়! এতটুকু মেয়ের এত বড় আস্পর্ধা! অতএব এমন শাস্তি একে দিতে হবে যাতে সারাজীবন আর বাইরে মুখ দেখাতে না পারে।
তাই ৮ জন পুরুষ মিলে একদিন ধর্ষণ করে স্বাধীনচেতা মেধাবী সুনীতাকে। সঙ্গে চলে পৈশাচিক অত্যাচার। নির্মম আঘাতে প্রায় বধির হয়ে পড়ে সুনীতা। কিন্তু এতেই দমে যাওয়ার পাত্রী নয় সে। চোখের জলের বদলে আরও শক্ত হয়ে ওঠে তার চোয়াল।
সমাজের দেওয়া কলঙ্কের মুখে চুনকালি মাখিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় সে, আবার নেমে পড়ে রাস্তায়, একাই।
বেঙ্গালুরু সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নাতক হলেন এবং ম্যাঙ্গালোর থেকে এম এস ডব্লু (মেডিক্যাল অ্যান্ড সাইকিয়াট্রিক) করলেন।
তারপর একাই ঝাঁপিয়ে পড়লেন সমাজের বিভিন্ন স্তরে নারীদের ওপর যৌন শোষণ ও নারীপাচার রুখতে।
১৯৯৬ সালে ‘নারীদের পণ্য হতে দেবেন না’ এই অঙ্গীকারে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত মিস ওয়ার্ল্ড কম্পিটিশনে বাধাদান করার অপরাধে পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁকে। জেল হয় তাঁর। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন বাড়ির দরজাও তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁর বাবা-মা কেউই তাঁর এইসব কাজকর্ম পছন্দ করছেন না। এতে নাকি তাঁদের সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে।
পরিবার থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সুনীতা চলে যান হায়দরাবাদ। সেখানে কুখ্যাত এক নিষিদ্ধপল্লি থেকে উৎখাত হওয়া যৌনকর্মী ও তাঁদের সন্তানদের জন্য একটি স্কুল ও হাতের কাজ শেখানোর ব্যবস্থা করেন তিনি। একইসঙ্গে শপথ নেন, যেভাবে হোক রুখে দাঁড়াতে হবে নারী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে। নিজের ব্লগে লিখতে শুরু করলেন সমস্ত সামাজিক অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে। নিজের সামান্য পুঁজিটুকু সম্বল করে তৈরি করলেন তাঁর স্বপ্নের সংস্থা ‘প্রজ্জ্বলা’।
পাচারকারীদের কবল থেকে উদ্ধার করা মেয়েদের আশ্রয় ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলেন ‘প্রজ্জ্বলা’র মাধ্যমে ।
সমাজের মূলস্রোতে ফেরাতে লাগলেন তাঁদের। ‘এইডস’ আক্রান্তদের পাশেও দাঁড়ায় সুনীতার প্রজ্জ্বলা। বিভিন্ন বয়সের প্রায় ১২০০০ নারীকে পাচারকারীদের কবল থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার করেছেন সুনীতা। এখন তিনি নারী পাচারকারীদের ‘ত্রাস’। তাঁর বিখ্যাত স্লোগান ‘Real Men Don’t Buy Sex’ আজ ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে । আজ প্রজ্জ্বলা পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ অ্যান্টি ট্র্যাফিকিং সেন্টার। ১৪টি সমাজ সচেতক ডকুমেন্টারি ছবি তৈরি করেছেন৷ পদ্মশ্রী ও আরও বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত সুনীতা কৃষ্ণন। এখনও পর্যন্ত ১৪ বার শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়েছেন তিনি। তাঁকে খুন করার চেষ্টাও করা হয়েছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু তিনি ভয়ডরহীন, অদম্য, অপরাজেয়।
অদিতি কথা
শহুরে আধুনিকা অদিতি। বয়স ২৪, বাংলায় এমএ। বাবা, মা ও বোনকে নিয়ে ছিমছাম সংসার তাঁর। চাকরির সন্ধান করতে করতেই এসে গেল তার বিয়ের সম্বন্ধ। হয়েও গেল বিয়ে। অদিতির শ্বশুরবাড়িও সম্ভ্রান্ত, অভিজাত। ভবানীপুরে প্রাসাদোপম বাড়ি। বর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। শ্বশুরমশাই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে। শাশুড়ি গৃহবধূ। সব মিলিয়ে তিন সদস্যের নির্ঝঞ্ঝাট সুখী গৃহকোণে চতুর্থ সদস্য হয়ে হাসিমুখে প্রবেশ অদিতির। বিয়ের প্রথম বছরটা তো কেটে গেল স্বপ্নের মতো। তারপরেই ছন্দপতন। শ্বশুর মশাইয়ের তুঘলকি ফরমান : বংশধর চাই এ-বছরই। নইলে বউমাকে চিরদিনের জন্য পাঠানো হবে বাপের বাড়ি।
যেন সব দায় বউমার একার।
শ্বশুরের দ্বিতীয় ফরমান আরও সাংঘাতিক। এ-সংসারে কন্যাসন্তান স্বাগত নয়। যদি পুত্রসন্তান না হয় তাহলেও বউমাকে ফেরত পাঠানো হবে বাপের বাড়িতে।
তারপর? পুত্র নয়, অদিতির কোল আলো করে এল কন্যাসন্তান। শুরু হল মা ও সদ্যোজাত মেয়ের প্রতি চরম অবহেলা। খেতে না দেওয়া, সঙ্গে শারীরিক নির্যাতন ও নিত্য অপমান। অবশেষে বাধ্য হয়ে বাচ্চা কোলে অদিতিকে ফিরে আসতেই হয় বাপের বাড়ি। ফলে মামলা মোকদ্দমা। পরবর্তীতে জানা যায় অদিতির গুণধর বরের একাধিক পরকীয়ার খবর। ভেঙে যায় সংসার। কলেজজীবনে পড়া কবিতা সিংহের লেখা একটি খেদোক্তি, একটি তীব্র শ্লেষ, যা অবশ্য পুরুষ সমাজকে একটুও লজ্জিত করে না, এখন খুব মনে পড়ে নিঃসঙ্গ অদিতির : ‘গেরস্তের ঘরে ঘরে খোকা হোক’।
লড়ে যাও মল্লিকা
আশাপূর্ণা দেবীর সাড়াজাগানো উপন্যাস ‘অগ্নিপরীক্ষা’ ছুঁয়ে আজও, এই তথাকথিত আল্ট্রামর্ডান যুগেও যখন মেয়েদের সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা ভাবতে বসি তখন তল খুঁজে পাই না। পৃথিবীটা মেয়েদের জন্য প্রকৃত বাসযোগ্য হয়ে উঠবে কবে?
মল্লিকার কথায় আসি।
আটপৌরে চেহারার মেধাবী মল্লিকা সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। বাড়িতে বাবা ও মা ছাড়া আর কেউ নেই। মল্লিকার ইচ্ছে, বিয়ে করবে না। একাই নিজের মতো করে বাঁচতে চায় সে। এ-নিয়ে প্রথম প্রথম বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেক অশান্তি হয়েছে তাঁর। কিন্তু টানা কয়েক বছর ধরে বাকবিতণ্ডার পর মা-বাবাকে একরকম মানিয়ে নিয়েছে মল্লিকা। কিন্তু আত্মীয়-পরিজন ও সমাজ সহজে দমে না যে। তাঁদের যুক্তি অসামান্য! মা-বাবা আর কতদিন? তাঁরা গত হলে এই শ্বাপদসংকুল সংসারে একা মেয়েটার কী হবে? নৃশংস পুরুষতন্ত্র তাঁকে ছিঁড়ে খাবে যে! আহা, মল্লিকার ভবিষ্যতের কথা ভেবে ঘুমোয় না সমাজ! সারারাত জেগে থাকে তাঁর আত্মীয়স্বজন। এবার মনে বল পান মেয়ের জিদের কাছে একপ্রকার হার মেনে নেওয়া হতোদ্যম বাবা-মা। নতুন উদ্যমে পাল্টা লড়াই শুরু করেন তাঁরা। চাপ বাড়তে থাকে ক্রমশ। সঙ্গে অশান্তিও। অবশেষে বাড়ি ও সমাজের চাপে হার মানে মেয়ে। সম্মতি দেয় সে। সম্বন্ধ দেখা শুরু হয়। এখানে আবার তৈরি হয় নতুন সমস্যা। নতুন বিপদ। বেশিরভাগ পাত্রপক্ষের চাহিদা রোজগারহীন গৃহবধূ!
এ যুগেও এই মানসিকতা ভাবা যায়! যে দু-চার ঘর পাত্রপক্ষ তথাকথিত উদার, তাদেরও গোমড়ামুখ। যেন চাকরি পেয়ে ভীষণ অন্যায় করেছে মল্লিকা। সত্যিই তো, গৃহবধূর পায়ের তলার মাটি শক্ত হবে কেন? স্বামী ও পরিবারের সেবায় ২৪ ঘণ্টা ব্যয় না করলে কীসের গৃহবধূ? ভাবা যায় এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে! পার হয় মাসের পর মাস, পার হয় বছর। কী হবে শেষপর্যন্ত মল্লিকার? কী আবার হবে? বিয়ে না করলেই কি জীবন ব্যর্থ? ধুসস্! জীবন কি এতই অকিঞ্চিৎকর? পরানুগ্রহে মরতে মরতে বেঁচে থাকা নয়, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা মল্লিকাকে দিয়েছে প্রথা ভেঙে একা, একেবারে নিজের মতো করে বাঁচার চূড়ান্ত আত্মপ্রত্যয়।