প্রতিবেদন : প্রচারবাবু দেশের গণতন্ত্রকে জেলখানায় ভরে দিয়েছেন। মঙ্গলবার বীরভূমের হাসন ও বর্ধমানের ভাতারের সভা থেকেই এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, সকালে টিভি খুললেই সব চ্যানেলে-কাগজে মোদিবাবুর ছবি। যেন প্রচারবাবুকে নমস্কার করে ঘুম থেকে উঠতে হবে। তিনি নাকি সেরার সেরা। আর ভারতের গণতন্ত্রকে জেলখানায় ভরে দিয়ে সারা বিশ্বের কাছে লজ্জায় ফেলে দিয়েছেন দেশকে। তিনি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে নিতে চাইছেন। তাঁর সরকার দেশের ইতিহাস, ভূগোল, সংবিধান ভুলিয়ে দিচ্ছে।
রেশন চ্যালেঞ্জ প্রচারবাবুকে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এদিন বলেন, প্রচারবাবু বলছেন, আমরা বিনা পয়সায় রেশন দিই। নিয়মমতো সবটাই কেন্দ্রের দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের সময় ছ’মাস দিয়েই বন্ধ। পরে বললেন, ২০-৩০ লক্ষ দিতে পারি, তার বেশি নয়। অথচ বাংলায় ১১ কোটি লোক। এটা আমরা করতে পারি? একজনকে দেব, আর একজন না খেয়ে থাকবে? তারপর চাল-গম নিলে প্রচারবাবুর ছবি আর বিজেপির লোগো রাখতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ, আপনি ভারত সরকারের লোগো লাগান, আমিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোগো লাগাচ্ছি। তিনি বলেন, ৯ হাজার কোটি টাকা রাজ্যকে দিতে হয়। গত দেড় বছর ধরে ১২ হাজার কোটি দেয়নি কেন্দ্র। আমরা ১৮ হাজার কোটি দিয়েছি আবার ১২ হাজার কোটিও দিয়েছি। এটা বিজেপি দেয়নি, প্রচারবাবুও দেননি।
অভিষেককে খুন করতে গিয়েছিল : তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, মোদিবাবু আপনি তো ভোট চাইছেন, কত লোককে চাকরি দিয়েছেন? বছরে ২ কোটি চাকরি দেবেন বলেছিলেন, একজনকেও দিয়েছেন? আবার আমরা বাংলায় চাকরি দিলে কোর্টকে দিয়ে চাকরি খেয়ে নেন। একতরফা রায় দিয়ে চাকরি খেয়ে নিলেন ২৬ হাজারের। তাঁদের আবার বলছে ৮ বছরের বেতন ফেরত দাও সুদ-সহ! তাঁরা পারেন? নির্বাচন চলাকালীন বিজেপির এক গদ্দার বোমা ফাটালেন! আরে বোমা ফাটানোর হলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর রাগ হলে, মেরে দে। অভিষেককেও তো খুন করতে গিয়েছিলি, ধরে ফেলেছিলাম আমরা। তার বাড়ি পর্যন্ত রেইকি করেছে, ফেস টাইমে ফোন করেছে, কথা বলতে চেয়েছিল, সময় দিলেই গুলি করে পালিয়ে যেত। ওরা চায় যারা ওদের বিরুদ্ধে কথা বলে, মেরে দাও।
নাম তার বড় গদ্দার : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সাফ জানিয়ে দেন, সাধ্যমতো কেসটা লড়ব। মানুষের পাশে আছি। সেইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, স্কুল থেকে শিক্ষক কোথা থেকে আসবে। বিজেপির লোকেরা গিয়ে পড়াবে, না আরএসএস পড়াবে? এরপরই গদ্দারকে নিশানায় তিনি বলেন, বোমা ফাটিয়েছে। অনেক বোমা বানাতে শিখেছিস না! ওই বোমা হজম হবে না। একদিন বুঝবি। বিজেপিতে থেকে দালালি করছিস কেন। সেদিন পুরুলিয়ার চাকরি কে বিক্রি করে দিয়েছিল? নামটা আমি বলব না। আমার ইশারাই কাফি। সব থেকে বড় পুকুর চুরি করেছে যে, তার নাম বড় গদ্দার। কোর্ট কী রায় দেবে জানলি কী করে। এতগুলো চাকরি খেয়ে নিয়ে নাচছিস। একদিন মানুষ বাঁধ ভেঙে দেবে।
আরও পড়ুন- কাল থেকে আরও বাড়বে গরম! জারি হলুদ সতর্কতা
কেষ্টকে ইচ্ছা করে জেলে রেখেছে : তৃণমূলনেত্রীর কথায়, কেষ্ট আজ আমাদের সঙ্গে নেই। তাঁকে আর তাঁর মেয়েকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। দেখবেন নির্বাচনের পর ছেড়ে দেবে। ইচ্ছা করে রেখে দেওয়া হয়েছে। যাতে সে তৃণমূল করতে না পারে। নির্বাচনের আগে বেরোতে না পারে। এর আগেও তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হত। কিন্তু কোনও লাভ হয়েছে কী! এবারও আমরা জিতব।
জীবন কাড়বেন না : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন শীতলকুচির ঘটনা মনে করিয়ে বলেন, চারজন সংখ্যালঘু ও একজন রাজবংশীকে গুলি করে মেরেছিল, আমি ছুটে যাই। তিনি এখন আপনাদের এখানে প্রার্থী। কাল শুনলাম তিনি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী আমাকে ফাঁসিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাউকে ফাঁসানোর ক্ষমতা নেই। আপনার বিরুদ্ধে তো ডিপি চলছে। আপনাকে তো রাজ্য সরকার ক্লিয়ারেন্স দেয়নি। আপনি বিজেপি করছেন করুন, আমি আপনার বিরুদ্ধে কথা বলতাম না, যদি আপনি এই বিবৃতি না দিতেন। আমি যদি ফাঁসাতাম ভাল করে ফাঁসাতাম। বিএসএফ কার কথায় গুলি চালিয়েছিল? এই প্রশ্নটা শুধু করুন। বিজেপি করছেন, কারওর জীবন কাড়বেন না।
ঘাবড়ে গিয়েছেন প্রচারবাবুরা : প্রথম দফার পরই ঘাবড়ে গিয়েছেন প্রচারবাবু। বুক ধড়ফড় করতে শুরু করেছে বিজেপির বাবুদের। বলছে না, ইসবার ৪০০ পার। একুশে বলছিল, ২০০ পার। ৮০-ও পেরোতে পারেনি। এবার সারা দেশে ওরা ২০০-ও পেরোবে না। বাংলাতে ১০-ও পাবে না। তাই বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। ওরা সিপিএম, কংগ্রেসের হাত ধরেছে কেন? ওরা চায় সংখ্যালঘু ভোটটা তৃণমূল যাতে না পায়। আর ওরা তৃণমূল ছাড়া কাউকে ভয় পায় না। দিল্লিতে আমরাই ক্ষমতায় আসব। বাংলায় লড়াইটা একা তৃণ…