প্রতিবেদন : সন্দেশখালির চক্রান্ত ফাঁস হওয়ার পর প্রবল চাপে বিজেপি। বাংলা থেকে দিল্লি সব জায়গায় মিথ্যাচার ও ঘৃণ্য চক্রান্তের দায়ে দোষী বিজেপি নেতৃত্ব মুখ লুকোনোর জায়গা পাচ্ছে না। এবার প্রচার সভাতেও চক্রান্তের ঘটনা সামনে এনে বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার দলীয় প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে কালীগঞ্জের জনসভায় সন্দেশখালির ভিডিও দেখিয়ে উপস্থিত জনতাকে অভিষেক বলেন, যারা বাংলাকে কালিমালিপ্ত করেছে, কলুষিত করেছে সেই বিজেপিকে ভোট দেবেন! বাংলা বিরোধী বিজেপি সন্দেশখালির ঘটনা ঘটিয়েছিল। এই বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে। এরা শুধু তৃণমূলকে ছোট করেনি। বাংলার মানুষকে ছোট করেছে। রবিবার নদিয়ার কালীগঞ্জে দলীয় প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কালীগঞ্জের সভামঞ্চে সন্দেশখালি দু’নম্বর ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালের ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভিডিওটি দেখলেন! মহিলাদের ২০০০ টাকা দিয়ে বিজেপি নেতারা মিথ্যে অভিযোগ করিয়ে, সন্দেশখালি দু’নম্বর ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল বলেছে, আমি নয়।
আরও পড়ুন-মুখোশ খুলে দিতে দিল্লি থেকেও তোপ তৃণমূল কংগ্রেসের
তিনি বলেন, এখানকার বিজেপি প্রার্থীকে আপনারা তিনটি প্রশ্ন করবেন, ১. কোচবিহারের বিজেপি নেত্রী লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধের হুমকি দিয়েছেন। এটা নিয়ে বিজেপির অবস্থান কী?
২. রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের ঘটনায় বিজেপির অবস্থান কী?
৩. সন্দেশখালির ঘটনায় বিজেপির অবস্থান কী?
এদিন মহুয়া মৈত্রকে সামনে রেখে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া বিজেপির অন্যায়-অবিচারের কথা তুলে ধরে অভিষেক বলেন, মহুয়া সারা বছর মানুষের পাশে থাকেন, আপনাদের কাছে থাকেন। আপনারা যাঁকে ভোট দিয়ে আপনাদের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত করেছেন, গায়ের জোরে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করেছে বিজেপি। মানুষ নির্বাচিত করছে, ওরা সরিয়ে দিচ্ছে। আপনি যাঁর হাতে ক্ষমতা তুলে দিচ্ছেন, বিজেপি তাঁর থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে। আপনার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী বিজেপি। অভিষেকের সংযোজন, কোনওরকম তদন্ত হয়েছে? কোনও প্রমাণ জনসমক্ষে এসেছে? বলছে পাসওয়ার্ড শেয়ার করেছে। এদিকে, বিজেপি সাংসদের সই করা কাগজ নিয়ে, শংসাপত্র নিয়ে সংসদ চত্বরে ঢুকে অশান্তি, গন্ডগোল করেছে লোকজন। যাদের শংসাপত্র নিয়ে ঢুকেছিল তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে? কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? প্রশ্ন অভিষেকের। বিজেপি নেতা গণেশ বিদুরি সংখ্যালঘু ভাইদের বলেছে, মোল্লা-পাকিস্তানি। বাংলাদেশিদের বলছে রোহিঙ্গা। শিখদের বলছে খালিস্তানি। এই সম্প্রদায়িকতার বীজ যারা প্রতিনিয়ত বপন করে চলেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী কোনও ব্যবস্থা নেননি। এই প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর বন্ধুবর শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা প্রতিবাদ করেছে বলে সাংসদ পদ খারিজ করতে হবে? আগামী ১৩ তারিখ আপনারা নরেন্দ্র মোদির হাতের পুতুলকে নির্বাচিত করতে চান নাকি মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে যিনি সংসদে লড়াই করেছেন সেই মহুয়া মৈত্রকে নির্বাচিত করতে চান। এই সিদ্ধান্ত আপনাদের নিতে হবে।
ওই দিনটি ঐতিহাসিক। ১৩ মে বাংলায় পরিবর্তন এসেছিল। এই সরকারের বিদায় শুধু সময়ের অপেক্ষা। যারা ভোট কেটে বিজেপির হাত শক্তিশালী করছে সেই সিপিএম-কংগ্রেসের অনৈতিক জোটকে একটি ভোটও দেবেন না।