অলোক সরকার: রোহিত শর্মা কলকাতায়। হার্দিক পান্ডিয়া, সূর্যকুমার যাদবও। কিন্তু শনিবারের মুম্বই ম্যাচ নিয়ে শহরে বিশাল কোনও হাইপ ওঠেনি। আইপিএল পয়েন্ট টেবলের ছবিটা সামনে রাখলে এই ম্যাচের কোনও গুরুত্ব নেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে কেকেআর বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ম্যাচ স্থানীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে সাড়া ফেলতে পারেনি।
কেকেআর ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বসে আছে। তাদের নেট রান রেট +১.৪৫৩। মুম্বইয়ের ১২ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট। এবারের আইপিএলে প্রথম দল হিসাবে তারা টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছে। ফলে হার্দিকদের নেট রান রেট নিয়ে চর্চার কোনও দরকার পড়ছে না। তবু জানিয়ে রাখা যাক, তাদের নেট রান রেট -০.২১২। এখন ৮ পয়েন্ট নিয়ে মুম্বইয়ের পিছনে শুধু পাঞ্জাব ও গুজরাট। জরুরি তথ্য, শনিবারের ম্যাচ জিতলেই নাইটরা প্লে অফ নিশ্চিত করে ফেলবেন।
আরও পড়ুন-ভুয়ো উন্নয়ন দাবি প্রধান শিক্ষকের, পূর্ণ তদন্ত চাইল তৃণমূল, সাংসদ তহবিলের টাকা তছরুপ শান্তনুর
গত কয়েকদিনের বৃষ্টি শহরবাসীদের প্রচুর স্বস্তি দিলে কী হবে, এই ম্যাচের উপর গভীর অনিশ্চয়তা ফেলে দিয়েছে আবহাওয়া। শনিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সন্ধ্যায় জোরালো বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টিতে খেলা না হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে। সেক্ষেত্রে মুম্বইয়ের কিছু হবে না। কেকেআরের শীর্ষে থাকা নিয়ে সমস্যা হতে পারে। যেহেতু রাজস্থান রয়্যালসেরও ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট। তারা কেকেআরের থেকে নেট রান রেটে পিছিয়ে।
নাইটরা কয়েকদিন আগে মুম্বইয়ে গিয়ে তাদের হারিয়ে এসেছে। বারো বছরে এটা প্রথমবার। সেই জয়ের সুবাস নিয়ে শনিবার মাঠে নামবেন শ্রেয়স, নারিনরা। অনেকদিন বাদে এটা এমন কোনও মুম্বই ম্যাচ, যেখানে কেকেআরকে আগেই ফেভারিট দেখাচ্ছে। গৌতম গম্ভীর অবশ্য দলকে সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছেন, এখনও অনেক পথ যাওয়া বাকি। তাই কোথাও যেন আত্মতুষ্টির ব্যাপার না থাকে।
আরও পড়ুন-ভুয়ো উন্নয়ন দাবি প্রধান শিক্ষকের, পূর্ণ তদন্ত চাইল তৃণমূল, সাংসদ তহবিলের টাকা তছরুপ শান্তনুর
মুম্বই শিবির থেকে নানারকম খবর আসছে। সিনিয়ররা নাকি নেতা হার্দিকে এতটাই অসন্তুষ্ট যে আলাদা করে বৈঠক করেছেন। আরও শোনা যাচ্ছে যে, রোহিত পরেরবার মুম্বই ছাড়তে পারেন। প্রাক্তনদের কেউ কেউ রোহিতকে চেন্নাই বা কলকাতায় দেখতে শুরু করেছেন। এ সবই জল্পনা। মুম্বইয়ের এখনকার কাজ হল কোনওমতে মরশুম শেষ করা। বাকি দুটি ম্যাচ জিতে মাথা উঁচু করে ময়দান ছেড়ে যাওয়া।
মুম্বইয়ের জেরাল্ড কোয়েতজে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দাবি করলেন, তাঁদের ড্রেসিংরুমে শান্তির বাতাবরণ রয়েছে। হার্দিক অসাধারণ নেতা। তিনি বুমরার থেকে অনেক শিখেছেন। বুমরার সিম্পলিসিটি, অ্যাকিউরেসি তাঁর খুব ভাল লেগেছে। আর টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছেন বলে ইডেনের এই ম্যাচে মোটিভেশনের কোনও অভাব পড়ছে না। তাঁর প্রথম আইপিএল হল অসাধারণ অভিজ্ঞতা। যা ভোলা যাবে না। বলা হয়নি, বুমরা শুক্রবার প্র্যাকটিসে ছিলেন না।
আরও পড়ুন-সব মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাকেন্দ্র, অটিজম আক্রান্তের পাশে রাজ্য
কেকেআর ম্যাচ অবশ্য মুম্বইয়ের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। নাইটদের এই দলটা গড়গড়িয়ে চলছে। নারিন-সল্ট শুরুতে ঝড় তুলে দেওয়ার পর শ্রেয়সদের কাজটা সহজ হয়ে যাচ্ছে। তিনে নেমে অঙ্গকৃষ রঘুবংশী একটা দিক আগলে রাখছেন। তারপর শ্রেয়স, রাসেল, ভেঙ্কটেশ, রিঙ্কুর পালা। রিঙ্কু বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পাওয়ার জন্য প্রাক্তনদের কেউ কেউ নাইট টিম ম্যানেজমেন্টকে দায়ী করেছেন। তাঁরা বলেছেন, রিঙ্কু এবার পরে নেমে এত কম বল পেয়েছে যে চাপের মুখে রান করতে পারেনি। তাই নির্বাচকদের সামনে দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি।
দু’দিনের বৃষ্টি উইকেটের উপর কিছুটা প্রভাব ফেলবে। এমনিতে এবার ইডেনে প্রচুর রান উঠেছে। বিশেষ করে রাজস্থান ও পাঞ্জাব ম্যাচে। দুটো ম্যাচেই কেকেআর হেরেছে। মুম্বইয়ের যেহেতু হারানোর কিছু নেই, তাঁরা এই ম্যাচে মরিয়া হয়ে জেতার চেষ্টা করবে। রোহিত, ঈশান, সূর্যর ব্যাট ঠিকঠাক চললে বড় রান হয়ে যেতে পারে। ফলে চাপ থাকছে কেকেআর বোলিংয়ের উপর। স্টার্ক ছন্দে ফিরেছেন। হর্ষিত ভাল বল করছেন। এটা স্বস্তির। কিন্তু নাইটদের আসল শক্তি নারিন ও বরুণ। এই দু’জনই আজ মস্ত চ্যালেঞ্জ মুম্বইয়ের কাছে।