প্রতিবেদন: কয়লা পাচার নিয়ে বারবার তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিজেপি। কয়লা পাচারের অভিযোগ নিয়ে এবার বিজেপিকে পাল্টা দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বর্ধমানের কুখ্যাত কয়লা মাফিয়া জয়দেব খানকে সঙ্গে নিয়ে এয়ারপোর্টে ঢুকছেন অমিত শাহ। এই ছবি সামনে আসতেই শনিবার বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বর্ধমান-দুর্গাপুরে রোড শো-এর শেষে তিনি বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, কয়লা চুরি নিয়ে বিজেপি এত কথা বলে। কিন্তু গতকাল আমরা কী দেখলাম, বর্ধমান জেলার সবচেয়ে বড় কয়লা চোর জয়দেব খান অমিত শাহকে রিসিভ করতে অন্ডাল এয়ারপোর্টে গিয়েছে। কেউ অস্বীকার করতে পারবে? সব থেকে কুখ্যাত কয়লা মাফিয়া জয়দেব খানকে আমরা দেখেছি ২০২১-এর ভোটের সময় দিলীপ ঘোষের পাশে বসে চা খাচ্ছে। সেই কয়লা মাফিয়াকে নিয়ে অমিত শাহ এয়ারপোর্টে ঢুকছেন। এদের কাছে আমাদের শিখতে হবে?
আরও পড়ুন-অভিষেকের সভাফেরত কর্মীদের ওপর হামলা
এদিন তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠক থেকেও এই নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেন মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা ও মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। বিজেপির একটি চিঠি তুলে ধরে তাঁরা বলেন, গত ১০ মে অন্ডাল এয়ারপোর্ট হয়ে আসেন অমিত শাহ৷ তাঁদের দলের ওই চিঠিতে উল্লেখ করা ছিল, কোন কোন নেতা অমিত শাহের সঙ্গে এয়ারপোর্টে উপস্থিত থাকবেন৷ সেই তালিকায় রয়েছে জয়দেব খানের নাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য মোট ১৬ জন বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন৷ সেই তালিকায় ছিলেন জয়দেব খান৷ তৃণমূলের অভিযোগ, অপরাধীদের জন্যই বিজেপির ওয়াশিং মেশিন। জয়দেব খান ফুল দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। সঙ্গে ছিলেন লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। জয়দেব খান কে? দিলীপ ঘোষ-তো ২০২১ সালে এই জয়দেব খান, রাজু ঝাদের সমাজকর্মী বলে দলে নিয়েছিলেন। দিলীপ ঘোষের হাত ধরে এরা বিজেপিতে আশ্রয় নিয়েছিল। এরাই হল কয়লা মাফিয়া। যারা আজ অমিত শাহদের সঙ্গে এক মঞ্চে রয়েছে। এদের পুরনো পরিচয়। শশী পাঁজা বলেন, কীভাবে রাজু ঝা মারা গেল, তা পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসবে। বিজেপির ভিতরের লেনদেন সম্পর্কে রাজু ঝা-এর কাছে কী তথ্য ছিল এবং ২০২২ সালে তিনি যেভাবে হঠাৎ প্রকাশ্যে খুন হলেন তা নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। আমরা দেখেছি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীর সঙ্গে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা এবং জয়দেব খানের কী ধরনের ঘনিষ্ঠতা ছিল। অতীতে যোশী রাজু ঝায়ের বাংলোতেও কাটিয়েছিলেন। অরূপ চক্রবর্তী বলেন, আমরা জানি কয়লা খনিগুলির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে সিআইএসএফ। সিআইএসএফ-এর নিয়ন্ত্রণ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সিআইএসএফ আসানসোল এবং রানিগঞ্জের কয়লা খনি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর কোন সিআইএসএফ অফিসার কাউকে কয়লা চোরাচালান আটকানোর সাহস করবেন? যে কয়লা মাফিয়ারা অমিত শাহকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে তাদের কীভাবে রুখবেন? এভাবেই বিজেপি প্রকাশ্যে কয়লা মাফিয়াদের সমর্থন এবং কয়লা পাচারকে সমর্থন করছে। সব মিলিয়ে এটা স্পষ্ট, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এই কাজ সমর্থন করছেন।