প্রতিবেদন : ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস হতেই মরিয়া বিজেপি ফের আন্দোলনের নামে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করল সন্দেশখালিতে। সোমবার তাঁদের হিংস্র আচরণের জেরে উত্তেজনা ছড়াল। তবে পুলিশি তৎপরতায় পরিস্থিতি খুব বেশি দূর গড়ায়নি। বিজেপির হিংসা ও তৃণমূল কর্মীদের নিগ্রহের প্রতিবাদে এদিন বিকেলে সন্দেশখালিতে ধিক্কার মিছিল ও ধিক্কার সভার আয়োজন করে তৃণমূল। স্থানীয় কালীনগরের এই সভায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিপুল সংখ্যায় মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বহিরাগত মহিলাদের নিয়ে গিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মারধরের ঘটনায় বিজেপির চার কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতেই তাদের গ্রেফতার করেছে সন্দেশখালি থানা। এরই মধ্যে মুখ খুলেছেন সন্দেশখালির আরও এক মহিলা। ভয় দেখিয়ে তাঁকে দিয়েও ভুয়ো ধর্ষণের অভিযোগ করানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনিও এখন ওই অভিযোগ তুলে নিতে চাইছেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, তিনি ভুয়ো অভিযোগ তুলে নিতে চাইছেন, এটা জানার পরই বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন-জাগল আগ্নেয়গিরি, আকাশে ৫ কিমি পর্যন্ত উড়ল ছাই!
সন্দেশখালির মহিলাদের টাকা দিয়ে ভুল বুঝিয়ে সাদা কাগজে সই করানো হয়েছিল। পরে সেই কাগজে তাঁদের ধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। গোটাটাই ছিল বিজেপির চক্রান্ত। তৃণমূলের অভিযোগ, সব জেনেশুনে প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে এই ঘটনাকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করছিলেন। কিন্তু তাঁদের বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন সন্দেশখালির মহিলারাই। গত কয়েকদিন ধরে এখন একের পর মহিলা সামনে এসে ভুয়ো অভিযোগের কথা স্বীকার করে তা তুলে নিতে চাইছেন। এতদিন নির্যাতিতার ভেক ধরা রেখা পাত্রর স্বরূপ খুলে দিতে চান স্থানীয় মহিলারা।
এই রকমই এক মহিলার ভিডিও ফের সামনে এসেছে। নিজের পরিচয় লুকিয়ে ওই মহিলা বলছেন, বিজেপি নেত্রী পিয়ালি ওরফে মাম্পি তাঁকে ভুল বুঝিয়ে যৌন নিগ্রহের কাগজে সই করিয়েছিল। মিথ্যা অভিযোগ করার কারণে এখন নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে লজ্জা পাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, তাঁর ভাইকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু বর্তমানে তাঁর ভাইরা মুক্ত। তাঁর ওই রাগকে হাতিয়ার করেই তাঁকে দিয়ে ভুয়ো অভিযোগ করিয়েছিল বিজেপি নেত্রী। কিন্তু তিনি এখনও ওই অভিযোগ তুলে নিতে চান। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, এটা জানার পরই তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন, বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। তিনি বলেন, রেখা পাত্র এসে তাঁর অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়ে বলেন, লোকসভা নির্বাচনে তিনি জিতে এলে কে বাঁচাবে অভিযোগ প্রত্যাহারকারিণীকে!
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এরই মধ্যে বহিরাগত মহিলাদের নিয়ে গিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মারধরের ঘটনায় বিজেপির চার কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার রাতেই তাদের গ্রেফতার করে সন্দেশখালি থানা। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের মিনাখাঁ থানায় রাখা হয়েছে। সোমবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। ধৃতরা হলেন, উৎপল মাইতি, সুপ্রকাশ মণ্ডল, অজিত সর্দার ও গীতা বর। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, চারজনকে জেরা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে নিজেকে বাঁচাতে এবার আদালতের দ্বারস্থ হলেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল।