আর্থিকা দত্ত, জলপাইগুড়ি: বাবা দিনমজুর। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসার। দু’চোখে দৃষ্টি নেই, সব প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ভাল ফল করেছে ধূপগুড়ির বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মহাদেব রায়। মহাদেব বৃদ্ধাশ্রম দিব্যজ্যোতি বিদ্যানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। মহাদেবের বাবা তুলেন রায় একজন দিনমজুর, মা গৃহবধূ। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা আর রাজ্য সরকারের সাহায্যই ভরসা তাদের।
আরও পড়ুন-একশো টাকা ঘুষ দিয়ে অপমান মহিলাদের , শাহকে তোপ ডেরেকের
মহাদেব তার বাবা-মা, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং গৃহশিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনুপ্রেরণায় এই সাফল্য বলে জানায়। ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল মহাদেবের। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও মহাদেবের ইচ্ছে সে ভবিষ্যতে আইপিএস অফিসার হবে। কীভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিল মহাদেব? উত্তরে জানায়, মুখ্যমন্ত্রী মোবাইল কেনার টাকা দিয়েছিলেন সেই মোবাইলে বইয়ের পড়াগুলো ভয়েস রেকর্ডিং করে নেয় সে আর সেগুলোই শুনে শুনে মনে রাখে মহাদেব। পরীক্ষার সময় অন্য একজনকে রাইটার হিসেবে নিতে হয়েছিল। তিনি প্রশ্নগুলো বলেন, মহাদেব সেগুলোর উত্তর দেয় আর রাইটার লেখেন। এভাবেই সে মনের অদম্য শক্তি দিয়েই উচ্চমাধ্যমিকে ৫০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। কিন্তু মহাদেবের ভবিষ্যতে আইপিএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন আদৌ কি পূরণ হবে? কারণ তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার চেয়ে পর্বতসম প্রতিবন্ধকতা হল আর্থিক পরিস্থিতি। মহাদেবের পরিবার এবং প্রতিবেশীদের আবেদন, সরকার যেন এই অসহায় ছেলেটার পাশে আরও ভালভাবে থাকে।