প্রতিবেদন : কৃষকদের স্বার্থ-বিরোধী কালাকানুনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল দেশ। দেশ জুড়ে কৃষকদের প্রতিবাদ-আন্দোলনে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল অমানবিক বিজেপি সরকার। সেই প্রসঙ্গ তুলে বুধবার আরামবাগের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপিকে ধুয়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী আরামবাগে কৃষকদের জমি নষ্ট করে সভা করায় প্রধানমন্ত্রীকেও একহাত নিয়েছেন। একইসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন এই কৃষক-বিরোধী বিজেপিকে ভোট দেবেন? জনতা সমস্বরে উত্তর দিয়েছে, ‘না’। বুধবার আরামবাগের পুরশুড়ায় দলীয় প্রার্থী মিতালি বাগের সমর্থনে জনসভা থেকে বিজেপিকে একের পর তিরে বিদ্ধ করেছেন। এই সভার পর তিনি বারাকপুরে দলীয় প্রার্থী পার্থ ভৌমিকের সমর্থনেও রোড-শো করেন।
আরও পড়ুন-টানা চতুর্থ হার রাজস্থান রয়্যালসের
এদিন পুরশুড়ার সভায় সিপিএমের সন্ত্রাসের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, একটা সময় এখানে কৃষকরা কে কোন জমিতে চাষ করবেন তার অনুমতি নিতে হত সিপিএমের লোকাল এবং জোনাল কমিটির অফিস থেকে। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কৃষকবন্ধু প্রকল্প চালু করেছে। কৃষকরা সকলে টাকা পাচ্ছেন। যতই বাংলা-বিরোধী বিজেপি সরকার টাকা আটকে রাখুক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পাশে দাঁড়িয়েছে। এদিনের সভা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও একহাত নিয়েছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, পাঁচ বছর আগে বাংলায় এসে তিনি বলতেন, এখানে দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না। আর এখন বলছেন দুর্গাপুজোয় ছুটি দেওয়া হয় না। অথচ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দুর্গাপুজোয় দশ দিন ছুটি দেয়। এরপরই অভিষেক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, যতগুলি বিজেপি-শাসিত রাজ্য রয়েছে তার একটিতেও দুর্গাপুজোয় দশদিনের ছুটি দেওয়া হয় কি? তিনি হিমন্ত বিশ্বশর্মা, যোগী আদিত্যনাথ, প্রমথ সাওয়ান্তের নাম উল্লেখ করে বলেন এঁদের রাজ্যে ক’দিন ছুটি দেন দুর্গাপুজোয়? এই কারণেই বিজেপি হল সব থেকে বেশি মিথ্যাচারী।
কেন বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, এরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দিতে চায়। উপস্থিত জনতাকে আশ্বস্ত করে বলেন, তৃণমূল সরকার যতদিন আছে কেউ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতিও এটা বন্ধ করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন-বিধি ভেঙে বিজেপির চক্রান্তের বৈঠক
অভিষেক বলেন, আরামবাগের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আমরা জিতিনি কিন্তু কোথাও মানুষ সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হননি। এটাই তৃণমূলের গ্যারান্টি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, গত ১০ বছর তোমাদের সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, কী করেছ মানুষের জন্য তোমরা? বিজেপি তাদের রিপোর্ট কার্ড আনুক আমিও আমাদের সরকারের গত ১৫ বছরের রিপোর্ট কার্ড আনছি। তবেই বোঝা যাবে কে কী করেছে। তৃণমূল বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের কথা বলে আর বিজেপি বলে ডিভাইড অ্যান্ড রুলের কথা।
আরামবাগের বন্যার প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, ডিভিসি বন্যার সময় জল ছাড়ায় খানাকুল-সহ আরামবাগের বহু এলাকা প্লাবিত হয়। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা সত্ত্বেও তারা কিছু করেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন কেন্দ্র টাকা দিক বা না দিক রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করবেই। এটা হলে ঘাটাল-সহ আরামবাগের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যা থেকে রক্ষা পাবে। এদিনও ইউনিফর্ম সিভিল কোর্টের প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, বিজেপি সরকার সংবিধান পাল্টে দিয়ে সংরক্ষণ ব্যবস্থাকেই তুলে দিতে চাইছে। এই কারণেই আমরা ওদের জনবিরোধী বলছি।