প্রতিবেদন : লোকসভা ভোটের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ শীর্ষ আদালতের। কেন্দ্রীয় এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের একচ্ছত্র ক্ষমতায় রাশ টানল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বিশেষ আদালতে বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইনে (পিএমএলএ) বিচারাধীন মামলার অর্থ নয়ছয় সংক্রান্ত ১৯ নম্বর ধারায় অভিযুক্তকে ইডি গ্রেফতার করতে পারবে না। যদি সেই মামলায় তেমন কোনও অভিযুক্তকে হেফাজতে রাখার প্রয়োজন মনে করে ইডি, তাহলে তাদের সংশ্লিষ্ট বিশেষ আদালতেই আবেদন করতে হবে।
আরও পড়ুন-মৃত্যু নিয়ে বিজেপির নোংরা রাজনীতি ফাঁস
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ বলেছে, যদি একজন অভিযুক্ত সমনে সাড়া দিয়ে আদালতে হাজির হন, তবে তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য ইডিকে সংশ্লিষ্ট আদালতেই আবেদন করতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া সমনে হাজিরা দেওয়া অভিযুক্তকে একতরফাভাবে হেফাজতে নিতে পারবে না ইডি। এর পাশাপাশি বিচারপতিদের তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ, পিএমএলএ মামলায় অভিযুক্ত যদি সমন মেনে আদালতে হাজিরা দেন, তবে তাঁর আলাদাভাবে জামিনের আবেদন করার কোনও প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে এতদিন আলাদা করে জামিনের আবেদন করতে হত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা আর সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তকে করতে হবে না।
আরও পড়ুন-তাপপ্রবাহের মধ্যেই নিম্নচাপের আশঙ্কা
আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইন বা পিএমএলএ-র ৪৫ নম্বর ধারার জোড়া শর্ত কার্যকর করা যাবে না বলেও এদিন গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। খারিজ হওয়া এই দুই শর্তই এখন ইডির মামলায় জামিন পাওয়ার অন্যতম বাধা। এর মধ্যে রয়েছে, যখন পিএমএলএ মামলার অভিযুক্ত জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করবেন তখন প্রথমে শুনানির জন্য সরকারি আইনজীবীর সম্মতি প্রয়োজন। সরকারি আইনজীবী যদি মনে করেন যে অভিযুক্ত দোষী নাও হতে পারেন এবং মুক্তি পেলে একই ধরনের অপরাধ করার সম্ভাবনা নেই, কেবলমাত্র তখনই জামিন দেওয়া যেতে পারে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের জেরে গুরুত্বহীন হয়ে গেল ইডির সেই অতিরিক্ত ক্ষমতা। যে ক্ষমতার জেরে ইডির মামলায় গ্রেফতারির পর এতদিন জামিন পাওয়া কষ্টসাধ্য ছিল।
আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ ডেরেকের
মোদি জমানায় কার্যকর হওয়া সংশোধিত পিএমএলএ আইনে ইডির হাতে যথেচ্ছ ক্ষমতা তুলে দেওয়ার অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দল-সহ বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের। ইডির এই ক্ষমতা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের বিরোধী বলেও অভিযোগ ওঠে। ইডি তদন্ত শুরুর আগে যে ইসিআইআর (এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফরমেশন রিপোর্ট) দায়ের করে, তা গ্রেফতারির আগে দেখানো-সহ বিভিন্ন দাবিতে শতাধিক মামলা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। কিন্তু ২০২২ সালের ২৭ জুলাই অবসর নেওয়ার মাত্র দু’দিন আগে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি খানউলকর তাঁর রায়ে জানিয়েছিলেন, ইসিআইআর দেখানোর প্রয়োজন নেই। তা ইডির নিজস্ব নথি।