প্রতিবেদন : প্রতিবাদ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তাঁর বৃত্তি, চার্জশিটে নাম দেওয়া হয়েছিল তাঁর। পুণে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের সেই পায়েল কাবাডিয়াই আজ উজ্জ্বল করলেন দেশের মুখ। কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম ভারতীয় হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ গ্র্যান্ড প্রিক্স জিতলেন পায়েল। আর তাঁর এই কৃতিত্বকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অথচ ২৬ জুন পুণের একটি আদালতে হাজিরা দিতে হবে দেশের গর্ব পায়েলকে। তবে তিনি একা নন, সঙ্গে আছে আরও ৩৪ জন। ২০১৫ সালে অভিনেতা-রাজনীতিবিদ গজেন্দ্র চৌহানকে পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (এফটিআইআই) সভাপতি হিসাবে নিয়োগের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন পায়েল ও তাঁর সহপাঠীরা। সেই প্রতিবাদের জন্যই ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে ৩৫ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। সেই মামলা এখনও চলছে।
আরও পড়ুন-কণ্ঠস্বর বদলে শ্লীলতাহানি ছাত্রীদের
কিন্তু শনিবার পায়েল কাপাডিয়া গ্র্যান্ড প্রিক্স জেতার পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া— পায়েল কাপাডিয়ার কাজ ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’- এর জন্য এবং তার স্বীকৃতি হিসেবে ৭৭তম কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গ্র্যান্ড প্রিক্স জেতার ঐতিহাসিক কৃতিত্বের জন্য ভারত গর্বিত। লক্ষণীয়, পায়েল, ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত এফটিআইআই-এর চলচ্চিত্র পরিচালনার ছাত্রী ছিলেন। একজন ছাত্রী হিসাবে, তিনি বিতর্কিত ব্যক্তিত্বকে ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক চার মাসের প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন। বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেতা গজেন্দ্র চৌহানকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করেছিল ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। প্রতিবাদ দমনে ইনস্টিটিউটের ভেতরে পুলিশ ডাকে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। মধ্যরাতের ক্র্যাকডাউনে পাঁচজন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং পায়েল কাপাডিয়া-সহ মোট ৩৫ জন পড়ুয়ার চার্জশিটে নাম দেওয়া হয়েছিল। প্রখ্যাত শিল্পী নলিনী মালানির কন্যা কাপাডিয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তাঁর বৃত্তি কেড়ে নেয় কর্তৃপক্ষ। বৈদেশিক বিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নিতেও বাধা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, জরিমানাও দিতে হয়েছে তাঁকে। সেদিনও প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন নরেন্দ্র মোদি, আর শাসকদলের প্রভাবশালী সাংসদ ছিলেন আজকের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। আজ নিশ্চয়ই কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করবেন তাঁরা।